মূল্যস্ফীতি লাগামহীন, অস্বস্তিতে অর্থনীতি

তিন সূচকে স্বস্তি

| মঙ্গলবার , ৪ জুন, ২০২৪ at ১০:৫৬ পূর্বাহ্ণ

নানামুখী সংকটে থাকা সীমিত আয়ের মানুষের সক্ষমতা কমছে; মাস শেষে আয়ে পোষাচ্ছে না, সঞ্চয় ভেঙে চলতে হচ্ছে কখনও সখনও। সাধারণের জীবনের এই চিত্র সামগ্রিক অর্থনীতির প্রতিফলন বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। কিছু সূচকের নিম্নমুখী দশায় অন্য সূচকগুলোর স্বস্তি উবে গেছে; যে কারণে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতাও কমছে বলে মনে করছেন তারা।

তারা বলছেন, টাকার বিনিময় হার বাজারমুখী করা, সুদহার সীমা তুলে দেওয়া ও সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির মতো নীতি নির্ধারণী বিষয়গুলোতে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে বড় পরিবর্তন ধাক্কা হয়ে দেখা দিয়েছে, যা নতুন করে চাপ তৈরি করেছে উত্তরণের পথে থাকা অর্থনীতিতে। তাদের পর্যবেক্ষণ, সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতার কারণেই মূলত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে উচ্চ মূল্যস্ফীতির হার। এটিই এখন অর্থনীতির সূচকগুলোকে টেনে ধরছে, মূল অস্বস্তি তৈরি করছে। খবর বিডিনিউজের।

লাগামের বাইরে চলে যাওয়া এই মূল্যস্ফীতি সামাল দেওয়ার মধ্যেই বাজার ব্যবস্থায় নিবিড় তদারকি, কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ বাড়ানো এবং অতি জরুরিভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন তারা।

কোভিড১৯ মহামারীর চাপ সামলে পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়ায় থাকা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন সংকট ডেকে আনে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির ইউক্রেনরাশিয়া যুদ্ধ। ডলার, জ্বালানি তেল ও খাদ্য শস্যের দাম বাড়তে থাকে। ব্যয় বেড়ে যায় ব্যবসাবাণিজ্যের। সেই ধাক্কা সামাল দিতে গত দুই বছর ধরে বড় চাপে রয়েছে দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক।

এ সময়কালে নিজস্ব চেষ্টার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের চাহিদা মেটাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলআইএমএফ এর সঙ্গে এক বছর আগে ঋণ চুক্তিতে যায় বাংলাদেশ। চুক্তিতে যাওয়ার আগে ও পড়ে চাপে থাকা অর্থনীতি সামাল দিতে নানামুখী সংস্কারের মধ্য দিয়ে এখন যাচ্ছে বাংলাদেশ। সেই সংস্কারও অনেকটা চাপ তৈরি করছে সাধারণের উপর। জ্বালানিতে ভর্তুকি কমিয়ে দিতে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়। নানা পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্যে ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করতে গিয়ে এক লাফে তা পৌঁছে গেছে ১১৭ টাকায়। আমদানি নিয়ন্ত্রণের মতো পদক্ষেপে আছে সরকার। এতে ডলারের দাম যেমন বেড়েছে, তেমনি ঋণের সুদের হারও বেড়েছে। এতে শিল্প উৎপাদন, ব্যবসাবাণিজ্যের ব্যয় বাড়ছে। আর মূল্যস্ফীতির চাপে সীমিত আয়ের মানুষ ধুঁকছে। ঋণের সুদ হার বাড়িয়ে সামাল দেওয়ার চেষ্টা এখন পর্যন্ত কাজে আসেনি।

এজন্য নীতি বাস্তবায়নের দুর্বলতা দেখতে পাচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ। বাজেটের আগে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, অর্থনীতির চ্যালেঞ্জগুলো দীর্ঘ সময় ধরে থাকছে। সুদহার, বিনিময় হার ও বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে যেসব নীতি নেওয়া হচ্ছে তা ব্যর্থ হচ্ছে। আর্থিক খাত আরও চাপে পড়েছে। খেলাপি বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংক খাত তারল্য সংকট থেকে বের হতে পারেনি।’

তবে অর্থনীতির অন্য সূচকের মধ্যে রেমিটেন্স, রাজস্ব ও রপ্তানি আয় ওঠানামার মধ্য দিয়ে এখন কিছুটা স্বস্তিকর জায়গায় পৌঁছেছে। বাণিজ্য ঘাটতি কমায় বৈদেশিক বাণিজ্যের ভারসাম্য ও আর্থিক হিসাবগুলোতে আগের মতো খুবই অস্বস্তির জায়গা অনেকটা কমেছে। তবে এসবের বিপরীতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়ন হারে ধীরগতি বজায় রয়েছে, বিদেশি বিনিয়োগ পরিস্থিতি নাজুক হয়ে গেছে।

মূল্যস্ফীতি, সুদ ও বিনিময়ে হারের চাপ : চার বছর পরে সুদহারের সীমা তুলে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিনিময়ে হারে ক্রলিং পেগ চালু করায় বেড়েছে ডলারের দাম। এ দুই সিদ্ধান্তে ব্যবসার খরচ অনেক বাড়ার আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের। বড় ধরনের নীতি পরিবর্তনের কয়েকটি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন শুরু হওয়ায় চাপে থাকা অর্থনীতিতে আরেকটু চাপ বাড়ছে বলে মনে করে বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনোমিস্ট জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, অর্থনীতি যে ঘুড়ে দাঁড়ানোর কথা ছিল তা এখনও দেখা যাচ্ছে না। সুদহার তুলে দিয়ে সার্কুলার দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আবার ব্যবসায়ীদের গভর্নর বলেছেন, ১৪ শতাংশের মধ্যে সুদহার থাকবে। তাহলে তো দুই ধরনের বার্তা গেল অর্থনীতিতে। কাগজে কলমে নীতি থাকার পরও তাতে বিশ্বাস করা যাচ্ছে না। তাহলে ব্যবসায়িক সুরক্ষাটা কোথায় থাকল? ব্যবসায়ীদের ঝুঁকি নেওয়ার সক্ষমতা থাকল না। এভাবে নীতি বিরোধী বক্তব্য দিলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে না।

মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘরে রয়েছে গত দুই বছর ধরে। গত বছরের আগস্টে তা সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ উঠেছিল। সবশেষ হালনাগাদ তথ্যে মে মাস শেষে তা আবার বেড়ে৯ দশমিক ৮৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

উচ্চ মূল্যস্ফীতির এমন পরিস্থিতিতে তা নিয়ন্ত্রণে বাজার তদারকিতে মন্ত্রণালয়গুলোকে কার্যকর করার পরামর্শ দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পণ্য সরবরাহ বাড়াতে হবে। এটি যদি না হয়, তাহলে যতোই বলা হোক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে, তা হবে না।

তিনি বলেন, দোকানে তো পণ্য আছে। এর মানে সরবরাহের দিকটায় খুব সমস্যা নেই, কিন্তু দাম বাড়ছে। ভোক্তা অধিকার দিয়ে বাজার তদারকিতে সাফল্য আসবে না। খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে নামতে হবে।

আমদানিতে ভোগ্যপণ্যের শুল্ক কমিয়ে আনলে দাম সহনীয় হবে মন্তব্য করে সালেহউদ্দিন বলেন, পোল্ট্রি ও প্রাণিসম্পদ তেমন কোনো প্রণোদনা পায় না। কৃষি খাত হিসেবে তাদের প্রণোদনা বাড়াতে হবে। এজন্য আইএমএফের কথায় সারে ও কৃষি খাতে ভর্তুকি কমানো যাবে না, এখানে যৌক্তিক হারে দিতে হবে।

তিন সূচকে স্বস্তি : চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল১০ মাসে রপ্তানি আয় বেড়েছে ৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ, আয় এসেছে ৪৭ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার। আগের অর্থবছরের এ সময়ে যা ছিল ৪৫ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার। জুলাইএপ্রিল সময়ে রেমিটেন্সে প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ, এসেছে ১৯ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। আগের অর্থবছরের এ সময়ে এসেছিল ১৭ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার। এ সময়ে রাজস্ব আহরণ ১৫ দশমিক ৬১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৮৯ হাজার ৩৭৭ কোটি টাকা; গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল দুই লাখ ৫০ হাজার ২৯৪ কোটি টাকা।

অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, অর্থনীতির রেমিটেন্স, রপ্তানি ও রাজস্ব আদায় সূচক কিছুটা স্বস্তিতে আছে। অন্য কোনো সূচকে ভালো অবস্থানে নেই। তবে রেমিটেন্স প্রবাহ আরও বাড়ানো যেত। এজন্য সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত লাগবে। সালেহউদ্দিন আহমেদের পরামর্শ, বৈধ পথে কেন রেমিটেন্স আসছে তা জরুরিভিত্তিতে সরকারকে দেখতে হবে। এটা দেশ থেকে টাকা পাচারের মাধ্যম হয়ে যাচ্ছে।

রাজস্ব আদায়ে এনবিআরের সক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, করজিডিপি অনুপাত আমাদের এখনো ৭ দশমিক ৬ শতাংশের ঘরে। কর ছাড় ও কর সুবিধা দেওয়া বন্ধ করতে হবে। কিছু খাতে কর ছাড় যৌক্তিক পর্যায় নামিয়ে আনতে হবে।

কর ফাঁকিবাজদের ধরার তাগাদা দিয়ে তিনি বলেন, এনবিআরের বর্তমান কাঠামোতে শুধু লক্ষ্যমাত্রা দিলে হবে না। তাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। করজিডিপি অনুপাত বাড়াতে হয়রানিমুক্ত পরিবেশ ও প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে এনবিআরকে আরও শক্তিশালী করার পরামর্শ তার।

বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে, ঋণ শোধের চাপ আর্থিক হিসাবে : জুলাইমার্চে আমদানি হয়েছে ৪২ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার, কমেছে ১৫ দশমিক ৪২ শতাংশ। আগের অর্থবছরের এ সময়ে তা ছিল ৫৮ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার। গত দুই বছর ধরে আমদানি নিয়ন্ত্রণ নীতির কারণে বাণিজ্য ঘাটতি ধীরে ধীরে কমছে।

জুলাইমার্চে বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে ৪ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার। এক বছরের ব্যবধানে কমেছে ৯ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার বা ৬৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ। আগের অর্থবছরের এ সময়ে যা ছিল ১৪ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার। এর সঙ্গে রেমিটেন্সে প্রবাহ ইতিবাচক হওয়ায় ঋণাত্বক থেকে এ অর্থবছরে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে আন্তর্জাতিক লেনদেনের চলতি হিসাব।

জুলাইমার্চে চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত ৫ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার। আগের অর্থবছরের এ সময়ে ঘাটতি ছিল তিন দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার। তবে ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় আর্থিক হিসাবের ঘাটতি বেড়েছে আগের চেয়ে। জুলাইমার্চে এ হিসাবে ঘাটতি ৯ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের এ সময়ের চেয়ে ৬ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার বা ২১৬ দশমিক ১৮ শতাংশ বেশি।

এমন প্রেক্ষাপটে বিদেশি ঋণ যথাসম্ভব কমিয়ে আনার পরামর্শ দিয়ে সিপিডির ফাহমিদা খাতুন বলেন, সামনের দিনে বৈদেশিক দায় পরিশোধের বড় চাপ আসছে। আর্থিক হিসাব এখনও ঘাটতিতে থাকায় বিদেশি ঋণ নেওয়ার প্রবণতা কমাতে হবে। নইলে টাকার মানের উপর আরও চাপ বাড়বে।

সুখবর নেই বিদেশি বিনিয়োগেও : গত ৯ মাসে মোট এফডিআই (সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ) ছিল ৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। আগের অর্থবছরের এ সময়ে যা ছিল ৩ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার, শতকরা হারে কমেছে ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ। বেশি বিনিয়োগ যখন দরকার তখন তা কমে যাওয়ার জন্য অর্থনীতির নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্তে দ্রুত পরিবর্তন ও জ্বালানি সমস্যাকে দায়ী করেছেন সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনাম বছরে ৭৮ বিলিয়ন ডলার পায়। ভারতেও গত বছরে বিদেশি বিনিয়োগ এখন লাখ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে।’

বাংলাদেশ কেন পায় না সে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, শুধু বললে তো হবে না, বিনিয়োগ পরিবেশ ভালো হতে হবে। তারা জ্বালানি ও পরিবেশের নিশ্চয়তা চাইবে। সুদহার ও ডলার নিয়ে ঘন ঘন নীতি বদলালে তারা তো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। এতে দেশের ক্রেডিট রেটিংস পড়ে যায়। তারা তো ক্রেডিট রেটিংস দেখবে, অর্থ নিয়ে যেতে পারবে কিনা তা দেখবে। এসব জায়গায় উন্নতি করতে হবে।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, গত দুই বছর ধরে তো দুটি যুদ্ধ চলছে বিশ্বে, ইউক্রেনরাশিয়ার পরে ফিলিস্তিনইসরায়েলের। রিজার্ভ একটু সংকটে থাকায় আমদানি তো ব্যবসায়ীরা যা চাচ্ছে তা করতে পারছে না। নতুন বিনিয়োগ চাইলেও বেশির ভাগ করতে পারেনি। কারখানার বর্তমান সক্ষমতাই ব্যবহার করা যাচ্ছে না, সেখানে নতুন বিনিয়োগ তো হবে না। আমরা আশা করছি সমস্যা কেটে যাবে। বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে, তারাও খোঁজখবর রাখছে। রিজার্ভ একটু বাড়লে তখন সবই হবে। রিজার্ভ বাড়াতে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স আরও আনতে হবে। রপ্তানি বৈচিত্রমুখী করার চেষ্টা করা হচ্ছে, এখানেও ভালো কিছু হবে।

বাড়ছে বিদেশি ঋণ, সুদ পরিশোধ : গত ডিসেম্বর শেষে বিদেশি ঋণের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ১০০ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার। পরের চার মাসে তা আরও বেড়েছে। মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ। এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ২৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার বা ২০ দশমিক ১৪ শতাংশ। ২০২২৩ অর্থবছরের এ সময়ে পরিশোধ ১ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার।

রিজার্ভের পতন থামছে না : গত ২৭ মে রিজার্ভ বিপিএম৬ পদ্ধতিতে দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রস হিসাবে তা ২৪ বিলিয়ন ডলার। এক বছর আগে গ্রস হিসাবে ছিল ৩০ বিলিয়ন ডলার। বিপিএম৬ হিসাবে ছিল ২৫ বিলিয়ন ডলার। গত ২১ মে বিনিময় হার ছিল প্রতি ডলার ১১৭ টাকা।

এক বছর আগে এ দিনে ছিল ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা। এক বছরের ব্যবধানে টাকার মান পড়েছে ৯ টাকা ২৭ পয়সা বা ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ। গত ১৭ ডিসেম্বর ডলারের দর ছিল ১১০ টাকা। গত ৮ মে বিনিময় দর বাজারভিত্তিক করতে ‘ক্রলিং পেগ’ চালু হলে ডলারের দর হয় ১১৭ টাকা। একদিনে টাকার মান কমে ৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ বা ৭ টাকা।

ডলার ও রিজার্ভে টান পড়ার প্রসঙ্গে জাহিদ হোসেন বলেন, বছর খানেকের বেশি সময় ধরে রিজার্ভ পতন বেশি হচ্ছে। এটি অর্থনীতির জন্য ভালো কোনো বার্তা দেয় না। আমরা যে সিদ্ধান্তগুলো নিচ্ছি তা বাস্তবসম্মত হচ্ছে না।

ব্যবস্থাপনার কারণে রিজার্ভ দুর্বল হচ্ছে মন্তব্য করে সালেহউদ্দিন বলেন, গত কয়েক বছর ধরেই তো কত নীতিমালা নেওয়ার কথা শুনলাম। যদি দুর্বল না হত, তাহলে তো রিজার্ভ বাড়ত। কই তা তো বাড়লো না।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান এম মাশরুর রিয়াজ বলেন, এই মুহূর্তে সামষ্টিক অর্থনীতি খুব চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে রিজার্ভ পরিস্থিতি কাঙ্ক্ষিত জায়গায় না থাকায়। গত কয়েক বছর ধরে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরও রিজার্ভ পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধড. বদরুল হুদা খান ও তাঁর ‘স্মার্ট শিক্ষায় স্মার্ট বাংলাদেশ’
পরবর্তী নিবন্ধষোলশহর-ফরেস্ট-পিলখানা ইউনিট বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সভা