মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই হোক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার

প্রতিমা দাশ | মঙ্গলবার , ২৮ নভেম্বর, ২০২৩ at ১০:১৫ পূর্বাহ্ণ

আমাদের মহান স্বাধীনতার যুদ্ধ বাঙালি জাতির জীবনে সবচেয় গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ইংরেজদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার পরপরই পাকিস্তানেরদের শোষণ অত্যাচারের বিরুদ্ধে পুরো বাঙালি জাতি একাত্ম হয়ছিলো। আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে নানান আন্দোলনের মাধ্যমে পুরো বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের। অবশেষে ১৯৬৯ সালের তা গণঅভ্যুত্থানের রূপ নেয়। বাঙালিরা যাতে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে, তাদের ন্যায্য অধিকারকে একেবারে নির্মূল করার জন্য পাকিস্তানি সেনারা ঢাকা শহরের ২৫ শে মার্চ রাতে নিষ্ঠুর গণহত্যায় মেতে ওঠে। বঙ্গবন্ধুর আহবানে সে সময় সমাজের প্রতিটি স্তরের পেশাজীবী থেকে শুরু সকল ধর্মের মানুষরা ও নারীপুরুষ সকলে মিলে মুক্তিবাহিনী গঠন করে। দেশ মাতৃকার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয় যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল আমাদের বীর মুক্তিবাহিনী। ফলে সুদীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আর ২ লক্ষ বীরাঙ্গনা সম্ভ্রমের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।

মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের গর্ব আমাদের অহংকার। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস প্রতিটি বাঙালি জাতির জীবনে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হয় থাকবে। তাই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ঐতিহ্যকে ছড়িয়ে দিতে হবে আগামী প্রজন্মের মাঝে। সেই লক্ষ্য কাজ করতে হবে সরকারি বেসরকারি সংস্থা থেকে শুরু করে ঘরের অভিভাবক পর্যন্ত। সামনের মাসেই আসছে আমাদের মহান বিজয়ের মাস। সে উপলক্ষ্যে ১৬ই ডিসেম্বর সারা দেশব্যাপী নানান আয়াজনে ভরপুর থাকে, বিশেষ করে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। আমাদের দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। দেশের একজন আদর্শ নাগরিক হিসেবে আশা করবো, সেসব প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই পুরস্কার নিশ্চিত করতে হবে। যারা প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করবে না তারাও যাতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই পড়তে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে প্রতিটি বিদ্যালয়কে। প্রতিটি বিদ্যালয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক পাঠাগার থাকতে হবে, যাতে করে সেখান থেকে বিনামূল্যে বই নিয় ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিশুরা পড়তে পারে। আমরা যতো বেশি আমাদের গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধকে ছড়িয়ে দিতে পারব আমাদের দেশ হবে ততো বেশি উন্নত হবে এবং প্রতিটি নাগরিক হবে দেশপ্রেমিক এবং দুর্নীতিমুক্ত। আজ আমরা একটা স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিক। আমরা স্বাধীনতা উপভোগ করছি প্রতি মুহূর্তে। কিন্তু তাঁর পিছনের ইতিহাসটা কতোটা রক্তাক্ত কতোটা বীভৎস তা আমাদের জানাটা অনেক বেশি জরুরি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহেমন্তের আকাশ
পরবর্তী নিবন্ধমন শান্তি তো জীবন পরমপ্রাপ্তি