মীরসরাইয়ে বোরো চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। অনেক জায়গায় চারা রোপণ শেষ হলেও কেউ কেউ এখনও জমিতে লাঙ্গল দিচ্ছেন। আর এসব মাঠে খাবারের খোঁজে ঝাঁকে ঝাঁকে ভিড় করছে সাদা বকের দল। পাশাপাশি রয়েছে শালিক, ঘুঘু, দোয়েলসহ হরেক রকমের পাখি। মীরসরাই উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, একটি জমিতে লাঙ্গল দিচ্ছিলেন এক কৃষক। আর তার চারপাশ ঘেরা অর্ধশত বক-শালিক। কৃষকের লাঙ্গল যেদিকে ঘুরছে তার পেছনে পেছনে যেন কানামাছি খেলছে পাখিরা। আবার তার অদূরের কিছু ভেজা জমিতেও দেখা গেছে সারি সারি বকের দল। অদূরে পাহাড়ের পাদদেশে এই দৃশ্য ভিন্ন এক আবহ তৈরি করে।
মীরসরাই সদর সংলগ্ন ভূঞা-হাতর নামে ফসলের মাঠে শুষ্ক মৌসুমেও কিছুটা ভেজা ভাব থাকে। সেখানেও বছরের প্রায় সময়ই দলবেধে বকের সারির অবস্থান দেখা যায়। এছাড়া মহামায়া লেক, বাওয়াছরা লেক, মঘাদিয়া, হাতকান্দি, কাটাছরা, ওচমানপুর, ইছাখালী, সাহেরখালীর অনেক এলাকায় নানা জাতের বক শালিকের দল দেখা যায়।
তবে সম্প্রতি ফসলের মাঠে নানা ধরনের কীটনাশক ব্যবহারের ফলে এবং কিছু শিকারির ফাঁদে পড়ে প্রতিকূলতার শিকার হয়ে অনেক প্রজাতির বক বিলুপ্তির পথে।
ভূঞা-হাতরের পাশ্ববর্তী স্থানীয় বাসিন্দা মীর হোসেন জানান, প্রতিদিন সকাল থেকেই এখানে ছুটে আসে বকের দল। গত কয়েক বছর ধরে বকগুলো প্রতিনিয়ত আসছে। সরকারিভাবে পাখি শিকার বন্ধে তৎপরতার পর শিকারিদের তেমন একটা চোখে পড়ে না এখন। আর এ কারণেই হয়তো বকগুলো নিরাপদ মনে করে প্রতিনিয়ত খাবার সংগ্রহে এসব এলাকায় আসছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা বলেন, ফসলি জমিতে পোকামাকড় দমনে বকের ভূমিকা অপরিসীম।
অনেক পাখি এখন বিলুপ্তির পথে। কিছু পাখি এখন তেমন একটা চোখে পড়ে না। তবে সচেতনতা ফিরে আসায় পর্যায়ক্রমে পাখিরা তাদের প্রকৃতি নিরাপদ মনে করলে আশা করা যাচ্ছে এসব প্রকৃতি বান্ধব পাখির সংখ্যা আরো বাড়বে। তিনি আরো বলেন, কৃষকরা যখন জমিতে ফসল রোপন করে তখন নানা জাতের পাখি জমির পোকামাকড় খায়। এতে ভাল ফলনও মিলে। ক্ষতিকারক কীটনাশকের চেয়ে এসব প্রাকৃতিক পাখি ফসলে অনেক উপকার করে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তা।
মীরসরাইয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন বলেন, কেউ পাখি শিকার করলে আর আমাদের কাছে খবর পৌঁছালে সাথে সাথেই কঠোর শাস্তিসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।