মীরসরাই উপজেলায় কমে যাচ্ছে আখের চাষাবাদ। সাম্প্রতিক কয়েক বছরের মতো এবারও আখের ফলন যথেষ্ট ভালো হয়েছে। তবে কৃষকরা আয়–ব্যয়ে সামঞ্জস্য রাখতে না পারায় কমছে রসালো ফল আখের চাষ। পাশাপাশি কৃষকদের মাঝে রয়েছে ন্যায্য দাম না পাওয়ার অভিযোগ। কিন্তু উপজেলার বাজারগুলোতে ঘুরে আখের বেশ চাহিদা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মীরসরাইয়ের আখ সুস্বাদু ও মিষ্টি বেশি হওয়ায় পাইকারদের কাছে এ আখের কদর অনেক বেশি। পাইকাররা এসব আখ উপজেলার বিভিন্ন বাজার থেকে ক্রয় করে বিভিন্ন জেলায়, উপজেলায় নিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলার মীরসরাই, মিঠাছরা, বড়তাকিয়া, নিজামপুর, জোরারগঞ্জ ও করেরহাট বাজারসহ কয়েকটি এলাকায় গত কয়েকদিন ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা এখন আখ তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে মিনি ট্রাক যোগে আখ ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। কৃষকরা প্রতিটি আখ পাইকারি ৩০–৩৫ বা ৪০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। গত কয়েক বছর যেখানে খুচরা হিসাবে ছোট আখ ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং বড় আখ ৬৫ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হতো তা এবার ১০ থেকে ২০ টাকা কমে পাওয়া যাচ্ছে।
জোরারগঞ্জ বাজারের আখ বিক্রেতা সিরাজ উদ্দিন মাসুদ বলেন, এবার আমি ২০ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। খুচরা বাজারে বড় সাইজের আখ ৭০–৮০ টাকা ও মাঝারি সাইজের আখ ৫০–৬০ টাকা ও ছোট সাইজের আখ ৩০–৪০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু সারা বছর জমি আটকে রেখে আখ চাষে আনুপাতিক হারে লাভ নেই। অন্য ফলন হলে কয়েকবার করা যায়। আখ সারা বছরই রাখতে হয় জমিতে।
উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারগুলো খুচরা আখ ব্যবসায়ীদের বেচা–কেনা কিছুটা কমেছে। প্রচন্ড রোদে রসালো এ ফল পেয়ে ক্রেতারা আখের দোকানগুলোতে বা বাজারের পাশে বিক্রি করতে আসা ব্যবসায়ীদের আখ বাজারে ভিড় জমাচ্ছে। লোকজন তাদের আত্মীয়–স্বজনদের বাড়িতে যেতে বা নিজের বাড়িতে পরিবারের জন্য আখ আটি বেঁধে অহরহ কিনে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।
মীরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাজী নুরুল আলম জানান, এবার ১২ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। গত বছরের চেয়ে কমেছে ২ হেক্টর। কৃষকরা সারা বছর আখের জমি পরিচর্যা করতে হয় বলে এতে অনেকের সীমিত লাভে হতাশ কৃষকরা। তবে পতিত জমিগুলোতে আখ চাষ করতে উদ্বুদ্ধ করলে এই সংকট নিরসন সম্ভব বলে মতামত ব্যক্ত করেন তিনি।