চট্টগ্রামের স্বনামধন্য কৃষিপণ্য মীরসরাই ও সীতাকুণ্ড উপজেলার শিম। সীতাকুণ্ডে সবচেয়ে ভাল উৎপাদিত হয় রূপবান শিম আর মীরসরাইয়ে বাটা শিম। আজ শনিবার থেকে হেমন্তের অগ্রহায়ন মাস শুরু। মীরসরাইয়ের গ্রামীণ জনপদে বইতে শুরু করেছে শীতের হিমেল হাওয়া। একই সাথে শীতের সবজি শিমের আগমনী বার্তাও জানান দিচ্ছে শিম গাছের আশেপাশে কৃষকের আনাগোনায়। বেগুনী ও সাদাসহ হরেক রকম শিমের ফুল শোভা পাচ্ছে পাহাড়ের পাদদেশ থেকে শুরু করে প্রতিটি গ্রামের ধানের জমির আল বা বাড়ির আশেপাশে। বিশেষ করে উপজেলা ওয়াহেদপুর, হাইতকান্দি ও খৈয়াছরা ইউনিয়ন তো সীম চাষের জন্য বিখ্যাত। এছাড়া অন্যান্য ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামেই কমবেশি শিমের চাষ হয়।
মীরসরাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলায় ৬৫০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ১০ হাজার টন প্রায়। উপজেলার এই বৃহৎ পরিমাণের শিম চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান হয়। এই উপজেলার শিম পার্শ্ববর্তী বড়দারোগারহাট বাজারের অন্যতম প্রধান মৌসুমী কৃষিপণ্য।
উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার কাজী নুরুল আলম বলেন, মীরসরাইয়ে এবার বাটা, ছুরি, পুটি, কার্তিগোনা, রূপবান, লইট্যাসহ বিভিন্ন জাতের শিম চাষ হয়েছে। তার মধ্যে ২০০ হেক্টরে চাষ হয়েছে বাটা সীম। এই শিমটি এখানে বেশি চাষ হয়, আবার ফলনও বেশি।
দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক মোহন কৃষ্ণ বলেন, গড়িয়াইশ গ্রামে তার জমি রয়েছে। সেখানেও বাটা শিমের পরিমাণ বেশি। গত বছর ও বাটা শিমে খরচ বাদ দিয়ে ২৫ হাজার টাকা আয় হয়েছে। এবার আশা করছে তার দ্বিগুণ হতে পারে।
প্রাপ্ত তথ্যে আরো জানা গেছে, শিম বাটা থেকে শিম সর্ষে হয়ে থাকে। শিমে রয়েছে নানা ধরনের খনিজ পদার্থ; তার সঙ্গে রয়েছে ফাইবার, আয়রন এবং ক্যালশিয়াম। ফলে শিম নিয়মিত খেলে নানা দিক থেকে উপকার হয় শরীরের। রোগের প্রতিকার এবং প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ে, প্রচুর পরিমাণ খনিজ পদার্থ থাকায় চুল পড়ার সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে সাহায্য করে শিম। অনেকটা ফাইবার থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণে থাকে। অনেকটা পানিও থাকে এই আনাজটিতে। ফলে ত্বকের আর্দ্রতা দূর করতেও সাহায্য করে শিম। রক্তে কোলেস্টেরল ও শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, মীরসরাইয়ে শিমে দীর্ঘসময় ফলন হয়। ফলে কৃষকেরা গ্রীষ্মকালীন শিম চাষের দিকে ঝুঁকছেন। প্রতি বছর বাড়ছে শিম চাষ। শীতকালীন শিমের মধ্যে বাটা শিম খুব সুস্বাদু। ভোক্তা পর্যায়ে এর সুনাম রয়েছে।