বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ–মিয়ানমার জলসীমার মাঝামাঝি স্থানে গুলিতে ওসমান গনি নামে একজন বাংলাদেশি জেলে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও ২ জন আহত হয়েছেন। বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুরের দিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ–পশ্চিমের মৌলভীরশীল বঙ্গোপসাগরের মোহনায় একটি ট্রলারে মিয়ানমারের নৌবাহিনী গুলি ছোড়ে এবং ৫৮ জেলেসহ ৬টি ট্রলার তুলে নিয়ে যায়।
নিহত জেলে ওসমান গনি টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপের কোনারপাড়া এলাকার বাচা মিয়ার ছেলে। তিনি শাহপরীরদ্বীপের বাজারপাড়া এলাকার সাইফুল ইসলাম কোম্পানির মালিকানাধীন ট্রলারের জেলে। এই ট্রলারে আরও দুজন জেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
তুলে নিয়ে যাওয়া ৬টি বাংলাদেশি ফিশিং ট্রলার ও নিহত ব্যক্তিসহ ৫৮ জেলেকে মুক্তি দিয়েছে মিয়ানমারের নৌবাহিনী। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুক্তি পাওয়া জেলেরা ট্রলারসহ শাহপরীরদ্বীপ জেটিতে অবতরণ করেছেন। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে ৬টি ট্রলার ও নিহত ব্যক্তিসহ ৫৮ জন বাংলাদেশি জেলেকে কোস্টগার্ডের নিকট হস্তান্তর করেছে মিয়ানমার নৌবাহিনী। এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত এক জেলের মরদেহ ও ১১জন মাঝি–মাল্লা নিয়ে একটি ট্রলার শাহপরীর দ্বীপ ঘাটে পৌঁছে।
ফিরে আসা একটি ট্রলারের মালিক সাইফুল ইসলাম জানান, সাগরে মাছ ধরার সময় হঠাৎ করে মিয়ানমারের নৌবাহিনীর সদস্যরা তার ট্রলারটি ধাওয়া করে গুলি বর্ষণ করে। এরপর ছয়টি ট্রলারসহ মাঝি–মাল্লাদের ধরে মিয়ানমারে নিয়ে যায়। যেখানে তার মালিকানাধীন ট্রলারে গুলিবিদ্ধ তিনজনের মধ্যে একজন মারা যান। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে ওই ট্রলারটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
অপর ট্রলার মালিক মতিউর রহমান বলেন, সন্ধ্যায় ৫টি ট্রলারসহ জেলেরা সেন্টমার্টিন ঘাট হয়ে শাহপরীরদ্বীপ ঘাটে পৌঁছেছেন। টেকনাফে দায়িত্বরত নৌ পুলিশের উপ–পরিদর্শক আবুল কাসেম জানান, গুলিতে নিহত জেলের মরদেহ কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে হস্তান্তর করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এর আগে ৭ অক্টোবর সকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ মোহনা থেকে পাঁচ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে যায় মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মি। পরে মঙ্গলবার দুপুরে পাঁচ বাংলাদেশি জেলেকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়।