মিতু হত্যায় বাবুল আকতারকে আদালতে সোপর্দ, ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১২ মে, ২০২১ at ৪:০০ অপরাহ্ণ

বহুল আলোচিত মাহমুদা খানম মিতু হত্যা নতুন মোড় নিয়েছে। এ ঘটনায় নতুনভাবে মিতুর বাবার দায়ের করা মামলায় সাবেক এসপি বাবুল আকতারকে গ্রেফতার পূর্বক আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।

বুধবার (১২ মে) বিকাল তিনটার দিকে মহানগর হাকিম সরোয়ার জাহানের আদালতে বাবুল আকতারকে আদালতে সোপর্দ করা হয় এবং ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। এর আগে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আকতারের শ্বশুর ও মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে মোট ৮ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয় এবং সে মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।

বিষয়টি আজাদীকে নিশ্চিত করেছেন নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) শাহাবুদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, মিতু হত্যার ঘটনায় তার বাবার নতুন করে দায়ের করা মামলায় বাবুল আকতারকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার ৭ দিনের রিমান্ড আবেদনও করা হয়। এক পর্যায়ে আদালত তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মিতু হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া নতুন মামলার বাকী আসামিরা হলেন, মো. কামরুল ইসলাম সিকদার প্রকাশ মুসা (৪০), এহেতাশামুল হক প্রকাশ হামিদুল হক প্রকাশ ভোলাইয়্যা (৪১), মো. মোতালেব মিয়া প্রকাশ ওয়াসিম (২৭), মো. আনোয়ার হোসাইন (২৮), মো. খাইরউল ইসলাম প্রকাশ কসাই কালু (২৮), মো. সাইফুল ইসলাম শিকদার প্রকাশ সাকু প্রকাশ সাকু মাইজ্জা (৪৫) ও শাহ জাহান মিয়া (২৮)।

এর আগে মিতু হত্যার ঘটনায় বাবুল আকতারের করা মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ বুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তারও আগে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা থেকে বাবুল আকতারকে ডেকে নিয়ে নগরীর পাহাড়তলীর পিবিআই কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয় মিতুকে। এই ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাত পরিচয় তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন। হত্যাকাণ্ডের তিন সপ্তাহ পর মো. ওয়াসিম ও মো. আনোয়ার নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই দিনই তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। স্বীকার করেন মুছার নেতৃত্বে হত্যাকাণ্ডে তারা সাত-আটজন অংশ নেন।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, মাহমুদা হত্যায় অংশ নেন ওয়াসিম, আনোয়ার, রাশেদ, নবী, শাহজাহান মিয়া, মুছা ও মো. কালু। মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন দাবি করে আসছিলেন, বাবুল আক্তারের পরিকল্পনায় ও নির্দেশে তার মেয়ে মিতুকে খুন করা হয়েছে।

ওই বছরের ২৪ জুন রাতে ঢাকার বনশ্রীর শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবুল আক্তারকে ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে প্রায় ১৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এর ফলে সন্দেহের তীর যায় বাবুলের দিকে। ২৬ জুন মো. আনোয়ার ও মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম নামে দুজনের গ্রেপ্তারের খবর প্রকাশ করে পুলিশ। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।

তারা জানান, মিতু হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রটি তাদের দিয়েছিল ভোলা। এরপর এহেতেশামুল হক ভোলা ও তার সহযোগী মো. মনিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে পয়েন্ট ৩২ বোরের একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়, যেটি মিতু হত্যায় ব্যবহৃত হয়েছে বলে পুলিশের ভাষ্য। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে ভোলা ও মনিরকে আসামি করে একটি অস্ত্র মামলা দায়ের করা হয়।

এরপর ১ জুলাই মোটরসাইকেল সরবরাহ করার অভিযোগে মুছার ভাই সাইদুল আলম শিকদার ওরফে সাক্কু ও শাহজাহান নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ভোলা, সাইদুল ও রবিন এরই মধ্যে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলাটি তদন্ত করে আসছিল নগর গোয়েন্দা পুলিশ। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পিবিআইকে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমিতু হত্যা মামলায় বাবুলকে প্রধান আসামি করে মামলা
পরবর্তী নিবন্ধছাত্র-যুব ঐক্য পরিষদ দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডের ঈদ সামগ্রী বিতরণ