প্রায়শই বৃহস্পতিবার রাতে মুঠোফোনে হাত রাখি। তোমাকে ফোন করবো বলে, সপ্তাহের অন্য দিনগুলোতে ব্যস্ততা কিছুটা বেশি থাকে। ফোন করা হয় না আর তোমাকে; থেমে যাই … কার কাছে করছি ফোন? অসংখ্য তারার ভিড়ে আমি খুঁজি তোমাকে মা, এলেবেলে হেঁটে চলা তারাদের সাথে মনে মনে কথা বলি ! প্রায়শই বৃহস্পতিবার রাতে মুঠোফোনে রাখি হাত
তোমাকে ফোন করবো বলে, অকস্মাৎ ভুল ভাঙে … নড়েচড়ে বসি, ফিরে যাই বেশ কয়েক বছর আগে, বাসে বাসে পেট্রোল বোমা হামলা, সারাদেশ তোলপাড়, চারপাশে প্রতিদিন মরছে মানুষ, কাগজের পাতায় পাতায় ভরা অগ্নিদগ্ধ মানুষের বিভৎস চেহারা, ভয়ে কুচকে যাই, সাহস করি না সন্তানদের নিয়ে মরণের দিকে পা বাড়াতে; না, হলো না ‘মা‘ তোমাকে দেখা।
শেষ বার হলো না কথা বলা, প্রহর উজাড় করে তাকিয়ে থাকলাম, তোমার নিথর দেহ আমায় ডাকলে না ফিরে আর একটি বার। নিজেকে ক্ষমা করতে পারিনা, জীবন বাজি রেখে গেলামই যদি দেখতে তোমায়, কেনো গেলাম না আগে? রাতের আকাশের দিকে নিমগ্নে তাকাই জোছনারা কেবলি মুখ চাওয়া চাওয়ি করে– গোধুলি বেলায় দিনান্তের আকাশের দিকে তাকাই, মিটিমিটি জ্বলা তারার ভিড়ে একটি তারা শুধুই আমার দিকে ফিরে ফিরে চায়, ধরে নেই সেই তারাটিই তুমি!
মেঘাচ্ছনা আকাশ, ঝড় বাদল এমনকি জোছনা রাতেও মুন্সিপাড়া কবরস্থানে আছো তুমি শুয়ে একেবারে একা, যখন আমি তোমার কবরের পাশে দাঁড়াই, আমার উপস্থিতি বুঝতে পারো কিনা, জানিনা, কিন্তু খুব বুঝতে পারি।
তুমি ভালো আছো, শান্তিতে আছো ঘুমিয়ে; তোমার হাতের ফল গাছগুলো ঠায় দাঁড়িয়ে দিব্যি– নিয়ম করে ফলও দিচ্ছে এখনো, ওদের দিকে আমি তাকাতে পারিনা– যদি কখনো বলে ফেলে, প্রশ্ন করে, দেরিতে আসলে কেনো!
আজ তুমি নেই– কোথায় যাবো, কার কাছে যাবো আমি ?