রহমত বরকত নাজাতের মাস রমজান শুধু সিয়াম সাধনা ও নফল ইবাদতের জন্য নয়। ইবাদত কবুলের জন্য হারাম রুজি পরিত্যাগ করে, হালাল রুজি গ্রহণ করা এ মাসের দাবি এবং সকল পাপ কাজ থেকে বিরত থেকে ইসলামের নৈতিক আদর্শগুলি গ্রহণ করতে হবে। জীবনে ত্যাগ, সেবা, সহমর্মিতা ও সংযমের আদর্শও পথের পাথেয় হতে হবে। যেভাবে বিশ্বনবী হযরত মুহম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উসওয়াতুন্ হাসানা বা উত্তম আদর্শ গ্রহণ করেছিলেন। দুঃখের বিষয় আমরা দেখি এমাসেও ধর্মের মর্মবাণীগুলো কিছু লোকের উপর প্রভাব ফেলে না। লোভ লালসার বশবর্তী হয়ে পণ্য ভেজাল করে। দ্রব্যাদি মজুদ করে মূল্য বাড়িয়ে দেয়। ফলে গরীব মুসলমানদের কষ্টের সীমা থাকে না। এরাই আবার গরীবদের লোক দেখানো যাকাত দিয়ে দরিদ্র মানুষ ও ইসলামকে উপহাস করে। মহানবী হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন হাদিসে এ ধরনের ব্যক্তিদের নিন্দা করেছেন এবং তাদের রোজা সম্পর্কে বলেছেন, তারা রোজা রাখেনা, শুধু অনাহার থাকে। এ মাস গরীব মিসকিনদের কষ্ট দেওয়া এবং বঞ্চিত করার মাস নয়, সাহায্য সহযোগিতা করার মাস। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘এবং তাদের সম্পদে হক আছে সাহায্যপ্রার্থীর এবং বঞ্চিতের। কেউ পেট ভরে খাক আর কেউ উপবাস থাকুক ইসলাম তা কখনো সমর্থন করে না।’ আল্লাহ পাক অন্যত্র বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন যখন গোনাহগারদিগকে জিজ্ঞেস করা হবে, তোমাদেরকে দোজখে নিক্ষেপ করল কিসে? তখন তারা উত্তরে বলবে, আমরা নামাজ পড়তাম না এবং দরিদ্রকে খাদ্য দিতাম না।’ (সুরা কিয়ামাহ্ আয়াত ৪২–৪৪)।
অপরস্থানে আল্লাহপাক বর্ণনা করেছেন, কিয়ামতের দিন যাদের আমলনামা বাম হাতে পাবে এবং দোজখের উপযুক্ত হবে, সে বলবে, আমার সম্পদ আমার কোনো কাজে আসল না। আমার ক্ষমতা বিলুপ্ত হয়ে গেল এবং আল্লাহপাকের পক্ষ থেকে বলা হবে, তাকে দোজখে নিক্ষেপ কর এবং সত্তর হাত লম্বা শিকলে আবদ্ধ কর। কেননা, সে আল্লাহকে বিশ্বাস করতো না এবং দরিদ্রকে খাদ্যদানে উৎসাহ প্রদান করতো না। (সূরা আল হাক্কা, আয়াত ২৮–৩৪)।