রমজান মাস মুসলমানদের জন্য প্রশিক্ষণের মাস। সাধনার মাস। রোজা এবং কোরআন–হাদীসে বর্ণিত ইবাদতের মাধ্যমে মুসলমানের আত্মাকে খাঁটি সোনারমতো গড়ে তোলার মাস। শুধু আত্মাকে খাঁটি করে না, মানবদেহের ওপর প্রচুর ও সজীব হয়। রোজা মানব দেহ এবং মানবদেহের প্রত্যেক যন্ত্র মেযন, ফুসফুস, হৃদযন্ত্র, মস্তিষ্ক, যকৃত, পাকস্থলী প্রভৃতি শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে বিশ্রাম দেয়। ফলে দেহ সতেজ হয়।
পেপটিক আলসার : অনেকে মনে করেন পেপটিক আলসার রোগীদের রোজায় ক্ষতি করে এবং রোজা রাখা উচিত নয়। এটা কিন্তু ভুল ধারণা। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন পাকস্থলীতে পারাইটেল নামক একটি কোষ আছে, এ কোষ অনবরত আইসোটনিক হাইড্রোকোলরিক এসিড বের করে এবং অতিরিক্ত হাইড্রোকোলরিক এসিডের ফলে পাকস্থলীতে যে গ্যাসট্রিক ও ডিওন্ডেলাল আলসারের সৃষ্টি হয়। সেই এসিড আহারের পর বেশি নির্গত হয়। পাকস্থলী খালি থাকলে এই এসিড কম এসিড হয়। রোজা রাখা অবস্থায় পাকস্থলীতে হাইড্রোকোলরিক এসিড কম পাওয়া যায়। রোজার ফলে পেপটিক আলসার বৃদ্ধি পায়না বরং কমে যায়।
ডায়বেটিস : ডায়বেটিস হলে ডায়েট কন্ট্রোল করে চলতে হয়, সুতরাং রোজা এই রোগীতের জন্য উপকার হয়। সেহরি ও ইফতারির সময় শুধু শর্করা জাতীয় খাদ্য পরিত্যাগ করতে হবে।
স্থূলকায় রোগী : রোজা দ্বারা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয় স্থূলকায় লোকের। বেশি খেতে খেতে তাদের শরীরে চর্বি জমা হয় এবং মোটা হতে থাকে। এ ধরনের লোকের জন্য রমজানের রোজা অত্যন্ত উপকারী। রোজা দ্বারা শরীরে জমানো কোলেস্টেরলগুলো শরীরের কাজে ব্যবহৃত হয়ে পরিমাণ কমে যায়, ফলে রক্তের সার্কুলেশন স্বাভাবিক হয়ে আসে এবং এতে রোগীর আয়ু বৃদ্ধি পায় হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে যায়।
চক্ষু রোগী : দিল্লির একজন বিখ্যাত চক্ষু বিশেষজ্ঞ বলেছেন, একমাস রোজা রাখার ফলে চক্ষুর ভিতর অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নার্ভ সতেজ হয়ে উঠে এবং দৃষ্টি শক্তিকে প্রখর করে। ভারতের স্থপতি মহাত্মা গান্ধী সময় সময় উপবাস পালন করতেন এবং বলতেন, উপবাস পালন করলে মন মস্তিষ্ক সতেজ ও সবল হয়, নিত্যনতুন কাজ করার উৎসাহ উদ্দীপনা যোগায়। লন্ডনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সেমিনারে একজন বিখ্যাত মার্কিন চিকিৎসক বলেছেন, মুসলমানের এক মাসের উপবাসে মানবদেহে একটি এনটিবডি সৃষ্টি করে। যার ফলে দেহে ষাট হাজার রোগ জীবাণুকে ধংস করে। এজন্যই মনে হয়, মহানবী বলেছেন, রোজা রাখলে স্বাস্থ্য ভাল থাকবে।