সাংবাদিকতায় একুশে পদক প্রাপ্ত দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেছেন, সাধারণ হতে পারাটা অসাধারণ ব্যাপার। সবাই সাধারণ হতে পারে না। মানুষ পারে না এমন কিছুই নেই। সবকিছুই পারে। আমরা পরাজিত হতে জন্মগ্রহণ করিনি। লিডার্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রথম ম্যাগাজিন ‘লিডার্স’ এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
গতকাল বুধবার দুপুরে বালুছড়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি কর্নেল (অব.) মো. কাশেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন দৈনিক আজাদীর পরিচালনা সম্পাদক ওয়াহিদ মালেক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন লিডার্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কর্নেল (অব.) আবু নাসের মো. তোহা। লিডার্স ম্যাগাজিন প্রকাশনার আদ্যোপান্ত তুলে ধরেন উপাধ্যক্ষ ও লিডার্স-এর সম্পাদক ফেরদৌস আরা। শুরুতে ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা। সাংবাদিকতায় একুশে পদক অর্জনে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেককে ক্রেস্ট দিয়ে সম্মাননা জানান স্কুল কর্তৃপক্ষ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম এ মালেক বলেন, লিডার্স স্কুল থেকে যে শিক্ষার্থীরা বের হবে, তারা একেকজন লিডার হয়েই বের হবে এবং আগামী দিনে নেতৃত্ব দেবে বলে আমি বিশ্বাস করি। দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাস দেখে মুগ্ধতা প্রকাশ করে দৈনিক আজাদী সম্পাদক বলেন, ক্যাম্পাসটি অনেক সুন্দর। শহর থেকে একটু দূরে নিরিবিলি সজীব পরিবেশে অনেকটা সাজানো গোছানো। এমন সুন্দর পরিবেশে থাকলে মনটাও ভালো হয়ে যায়।
মা-বাবা ও শিক্ষক, এই তিনজন মানুষকে কখনো অসম্মান না করার উপদেশ দিয়ে আজাদী সম্পাদক বলেন, কেবল এই তিনজন মানুষই কোনো কিছুর বিনিময়ের আশা না করে অকাতরে সব করে যান। তাই এই তিনজনকে সব সময়ই সম্মান করতে হবে, তাদের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।
বক্তব্যে দৈনিক আজাদীর পরিচালনা সম্পাদক ওয়াহিদ মালেক বলেন, যেহেতু প্রকাশনার সাথে আমরা জড়িত, সেহেতু একটি ম্যাগাজিন বের করা কতটা কষ্টসাধ্য তা আমরা বুঝি। আমি শিক্ষার্থীদের এ ধরনের ম্যাগাজিন ও লেখালেখিতে আরো বেশি করে সম্পৃক্ত হওয়ার অনুরোধ জানাবো। পাশাপাশি শিক্ষক ও মা-বাবাদের অনুরোধ জানাবো সন্তান ও শিক্ষার্থীদের যাতে এ কাজে অনুপ্রেরণা দেন।
আক্ষেপ করে ওয়াহিদ মালেক বলেন, আমরা সবাই সন্তানদের ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলি, গড়ে তুলতে চাই। কিন্তু নিজেরা ভালো না হয়ে সন্তানদের ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা কিভাবে আশা করা যায়? নিজেরা সুন্দরভাবে চললে সন্তানরাও সুন্দরভাবে গড়ে উঠবে। এখন আমরা সবদিকে শুধু সাকসেস দেখি। সফলতার কথা বলি। কিন্তু আগামী প্রজন্মকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে না পারলে, সব সফলতা বৃথা হয়ে যাবে।
চট্টগ্রামের মানুষের কথা বলার জন্যই দৈনিক আজাদীর পথচলা শুরু মন্তব্য করে ওয়াহিদ মালেক বলেন, চট্টগ্রামের প্রতিটি ভালো কাজের সাথে আজাদী ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
স্বাগত বক্তব্যে অধ্যক্ষ কর্নেল (অব.) আবু নাসের মো. তোহা বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। আমরা বলছি- মানবতার জন্য শিক্ষা। যাতে শিক্ষার্থীরা মানবিক হয়। মানবিক সম্পন্ন মানুষ হয়। আমাদের এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমরা শিক্ষা, শৃঙ্খলা ও নৈতিকতা তিনটি টুলস ব্যবহার করছি।
শিক্ষক ওমর ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে কর্নেল (অব.) মো. কাশেম বলেন, ২০১৮ সালে এই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়। তিন বছরের মাথায় এখন একটি পাবলিকেশন বের হল। সবদিক দিয়ে এটি স্ট্যান্ডার্ড একটি পাবলিকেশন (ম্যাগাজিন) বলেই আমার মনে হচ্ছে। সৃজনশীল এই কাজ কখনো সার্টিফিকেট দিয়ে মূল্যায়ন করা যায় না। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল হয়ে উঠার উপদেশ দিয়ে তিনি বলেন, একই সাথে সৃজনশীল ও ভালো মানুষ হতে পারলে জীবন স্বার্থক হবে বলে আমি মনে করি। শেষে বেশকটি স্থানীয় গরীব-অসহায় পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা তুলে দেন অতিথিবৃন্দ। লিডার্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের পক্ষ থেকে এ ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়।