স্বজনপোষণের পর এবার মাদক কাণ্ডে টালমাটাল বলিউড। শুক্রবার ভারতের মাদক নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো (এনসিবি)’র জিজ্ঞাসাবাদে দীপিকা পাড়ুকোনের ম্যানেজার কারিশমা জানিয়েছেন, মাদক বিষয়ক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের ‘ডি’ মানে দীপিকা এবং তিনি ওই গ্রুপের এডমিন ছিলেন।
এদিকে মাদক মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এনসিবি দীপিকাকে ডেকে পাঠিয়েছিল। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে গতকাল শনিবার সকালে মুম্বাইয়ের এনসিবি দফতরে পৌঁছেন দীপিকা পাড়ুকোন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, মাদক নিয়ে আলোচনা করলেও, তিনি নিজে মাদক নেন না। কোনও দিন নেননি।
সুশান্ত সিংহ রাজপুতের অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলায় মাদক–যোগ প্রকাশ্যে আসে। তাতে দীপিকার নামও জড়িয়ে পড়ে। এর পরেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিনেত্রীকে সমন পাঠায় এনসিবি। দীপিকার ম্যানেজার করিশ্মা প্রকাশও এ দিন ফের এনসিবির দফতরে আসেন। দু’জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকা।
সূত্র বলছে, সুশান্তের প্রাক্তন ট্যালেন্ট ম্যানেজার জয়া সাহা, দীপিকার ম্যানেজার করিশ্মা প্রকাশ এবং দীপিকা নিজেই এক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের অংশ ছিলেন, যেখানে নিয়মিত মাদক সংক্রান্ত আলোচনা চলত। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই বহুল চর্চিত ‘ডি’ এবং ‘কে’র মাদক সংক্রান্ত যে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট সমপ্রতি প্রকাশ্যে এসেছিল তা যে আদপে দীপিকা এবং করিশ্মার–ই সেই তথ্য ক্রমশ জোরালো হয়ে উঠছে।
মুম্বাইয়ের কোলাবা অ্যাপালো বন্দরের এভলিন গেস্ট হাউসে এনসিবি–র বিশেষ তদন্তকারী দলের (এসআইটি) দফতর রয়েছে। গতকাল সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ সেখানে পৌঁছন দীপিকা। তিনি উৎকণ্ঠায় ভোগেন বলে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাঁর স্বামী রণবীর সিংহ সঙ্গে থাকতে চেয়েছেন বলে শুক্রবার শোনা গিয়েছিল। তবে এমন কোনও ‘অনুরোধ’ তাঁদের কাছে এসে পৌঁছায়নি বলে জানিয়ে দেন তদন্তকারীরা। এ দিন একাই এনসিবি দফতরে পৌঁছান দীপিকা। তাঁর সঙ্গে দেখা যায়নি রণবীরকে।
সুশান্ত সিংহ রাজপুতের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তে মাদক–যোগ সামনে আসার পর থেকেই তুমুল শোরগোল পড়ে যায় ভারতে। দীপিকার মতো হেভিওয়েট নায়িকা তথা ‘এ লিস্টার’–এর নাম সেই মামলায় উঠে আসার পর থেকে তা অন্য মাত্রায় পৌঁছেছে। চর্চা শুরু হয়েছে তাঁর জীবনযাত্রা নিয়ে। এমন অবস্থায় তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপের দিকে যে সকলের নজর রয়েছে, তা জানেন দীপিকা। তাই এ দিন একেবারে সাদামাটা পোশাকেই তিনি এনসিবি–র দফতরে পৌঁছন। তারকা সুলভ কোনও কিছুই দেখা যায়নি তাঁর অভিব্যক্তিতে। কালো চশমায় চোখও ঢেকে রাখেননি। বরং করোনা কালে সতর্কবিধি মেনে মুখ ঢাকা ছিল মাস্কে। এমনকি যে গাড়িতে চেপে তিনি এনসিবি–র দফতরে পৌঁছান, তা–ও ছিল যথেষ্ট সাদামাটা। কোটি কোটি টাকার একাধিক বিলাসবহুল গাড়ির মালিক হলেও, এ দিন ‘হুন্ডাই’–এর একটি সাধারণ মডেলকেই বেছে নেন দীপিকা। এই একই মামলায় এ দিন এনসিবির দফতরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পৌঁছন অন্য দুই অভিনেত্রী সারা আলি খান এবং শ্রদ্ধা কাপূরও। তবে দীপিকা, সারা, শ্রদ্ধা অথবা রাকুল, কারও বিরুদ্ধেই এখনও পর্যন্ত কোনও মামলা দায়ের হয়নি। তদন্তের প্রয়োজনে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।