কনস্টেবল থেকে পুলিশ সুপার পর্যন্ত একযোগে বদলির পর নতুন করে যাত্রা শুরু করেছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ। ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্তরে ১৫০৭ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে পদায়ন করা হয়েছে। পুলিশের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারসহ তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে নতুন উদ্যোমে জেলায় পুলিশ সেবা কার্যক্রম শুরু করেছে। এর মধ্যে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, পুলিশের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষা এবং কর্মকর্তাদের দুর্নীতিমুক্ত রাখাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেওয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে সার্বিক দিকনির্দেশনা প্রদান এবং নতুন পুলিশ সদস্যদের কাজের গতিশীলতা ও পেশাদারিত্ব বাড়াতে গতকাল মঙ্গলবার কক্সবাজার সফর করেছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন। তিনি সকালে চকরিয়া এবং দুপুরে কক্সবাজার সদর মডেল থানা পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে সংক্ষিপ্ত মতবিনিময় করেন এবং নতুন তিনটি চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখে তা যথাযথ বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেন।
সকালে চকরিয়া থানায় মতবিনিময় শেষে গণমাধ্যমকে দেওয়া স্বাক্ষাতকারে ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, মাদক ব্যবসার সাথে যারা জড়িত তাদের নতুন করে তালিকা তৈরি করা হবে। আগে কিভাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে কী মামলা আছে– সেসব যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। ইতোমধ্যে সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেসব এলাকা অপরাধ প্রবণ সেখানে পেট্রোলিং বাড়ানো হবে।
ডিআইজি চট্টগ্রাম থেকে সড়কপথে সকাল ৯টায় চকরিয়া থানায় যান। সেখানে কক্সবাজার পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান, চকরিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. তফিকুল আলম, চকরিয়া থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আশরাফ হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজার সদর মডেল থানা পরিদর্শন করেন তিনি। এসময় সংবাদ সম্মেলনে ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, এখানকার মাদক ও চোরাচালান নির্মূল করা হবে। যেহেতু এখানে সবাই নতুন, তাই অপরাধ প্রবণতা দূর করতে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে। বদলি হওয়া পুলিশ সদস্যদের আর কক্সবাজারে পদায়ন করা হবে না জানিয়ে ডিআইজি বলেন, আমি যতদিন আছি ততদিন তাদের আর এখানে আসতে দেওয়া হবে না। ডিআইজি বলেন, সীমান্ত দিয়ে কীভাবে মাদক চোরাচালান হয় এবং কীভাবে তা রোধ করা যায়– তা নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করা হবে। ইতোমধ্যে সেই লক্ষ্যে পুলিশকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। কাজে গতিশীলতা বাড়িয়ে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করবে পুলিশ।
কক্সবাজারকে মাদকমুক্ত করার পূর্ব ঘোষণা নিয়ে ডিআইজি আনোয়ার বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে কক্সবাজার থেকে মাদক নির্মূলের যে কথাটি বলা হয়েছিল, তা বাস্তবায়নে নতুন পুলিশ সুপার সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে কর্মপন্থা ঠিক করবেন। আমরা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট টাস্কফোর্সের সাথে মিটিং করে আমাদের কাজগুলো শুরু করব। সে বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার সবকিছু নির্ধারণ করবেন। এ সময় পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান, সদর মডেল থানার ওসি শেখ মুনির উল গিয়াসসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, থানাকেন্দ্রিক কোনো দালালকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। এরপরও কোনো দালাল থানায় আসলে তাদের আটক করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।