মাতামুহুরী নদীতে ফেলা হচ্ছে ২০ হাজার জিও ব্যাগ

ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে উপকূলের দুই ইউনিয়নের হাজারো পরিবার

ছোটন কান্তি নাথ, চকরিয়া | শনিবার , ৫ জুলাই, ২০২৫ at ৪:৫৭ পূর্বাহ্ণ

একদিকে সামুদ্রিক অস্বাভাবিক জোয়ারের জ্বলোচ্ছ্বাস, অপরদিকে পার্বত্য অববাহিকার মাতামুহুরী নদীতে নেমে আসা উজানের ঢলের পানিতে ভাঙন তীব্রতর হয়েছে চকরিয়ার উপকূলীয় দুই ইউনিয়ন বিএমচর ও কোনাখালীতে। দুই দিকের প্রাকৃতিক রূঢ় আচরণে ভুক্তভোগী হচ্ছে নদী তীরের দুই ইউনিয়নের হাজারো পরিবার। তাই নদীর ভাঙন ঠেকিয়ে বসতিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে নেওয়া প্রকল্পের অধীনে দুই ইউনিয়নের অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টে ফেলা হচ্ছে (ডাম্পিং) সিমেন্ট মিশ্রিত বালুভর্তি ২০ হাজার জিও ব্যাগ। এতে চলমান বর্ষায় ভয়াবহ ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে মাতামুহুরী নদী তীরের এসব হাজারো পরিবার। ভেওলা মানিকচর ইউনিয়ন (বিএমচর) পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. ইসমাইল মানিক ও কোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার দৈনিক আজাদীকে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের জরুরি ভিত্তিতে নেওয়া এই প্রকল্পটি অতি দ্রুত বাস্তবায়ন হওয়ার কাজ শুরু হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে এলাকাবাসী। এই কাজ শতভাগ বাস্তবায়ন হওয়ার মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিনের কষ্ট লাঘব হতে চলেছে দুই ইউনিয়নের নদী তীরের হাজারো ভুক্তভোগী পরিবার। রক্ষা পাবে নদী তীরের বেড়িবাঁধ কাম সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাও।

অতিসম্প্রতি নদীর ভাঙন ঠেকাতে নেওয়া প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন এবং নদীতে সিমেন্ট মিশ্রিত বালুভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং কার্যক্রমও উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তা (এস.) মো. আরিফুল ইসলাম, পাউবোর কার্য সহকারী সোয়াইবুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মিরাজুল ইসলাম, কক্সবাজার জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা বিএনপির সভাপতি জামিল ইব্রাহিম চৌধুরী ও উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার শোয়াইবুল ইসলাম সবুজ। মাস্টার শোয়াইবুল ইসলাম সবুজ দৈনিক আজাদীকে বলেন, চকরিয়ার সমুদ্র উপকূলের এই দুই ইউনিয়নের মানুষ প্রতিনিয়ত সামুদ্রিক অস্বাভাবিক জলোচ্ছ্বাস ও মাতামুহুরী নদীতে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে যুদ্ধ করেই দিনাতিপাত করেন। কিন্তু তাদের রক্ষায় সরকারের পক্ষ থেকে অতীতে কোনো প্রকল্পই গ্রহণ করেনি। কয়েকমাস আগে আমাদের দলের পক্ষ থেকে এই সমস্যা দ্রুত সমাধানকল্পে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরি ভিত্তিতে নেওয়া এই প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন হওয়ায় আমরা খুশি। কারণ এই কাজের মধ্য দিয়ে দুই ইউনিয়নের হাজারো পরিবারের সদস্যদের চোখেমুখে হতাশার বদলে আনন্দের ছাপ পরিলক্ষিত হচ্ছে।

জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ড কঙবাজারের পউর বিভাগের শাখা প্রকৌশলী (এস ও) মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, চলমান বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই জরুরি ভিত্তিতে মাতামুহুরী নদীর ভয়াবহ ভাঙন থেকে হাজারো বসতবাড়িসহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষায় এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। যাতে ৬৫ পোল্ডারের অধীন কোনাখালী ইউনিয়নের বাংলাবাজার পয়েন্টের নদী তীরের ১১০ মিটার এবং বিএমচর ইউনিয়নের কন্যারকুম পয়েন্টে ৯০ মিটারজুড়ে সিমেন্ট মিশ্রিত বালুভর্তি ২০ হাজার জিও ব্যাগ ডাম্পিং কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এই কাজ কয়েকদিনের মধ্যেই শতভাগ বাস্তবায়ন হয়ে গেলে দীর্ঘদিনের দুশ্চিন্তা দূর হবে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান দৈনিক আজাদীকে বলেন, নদীর ভাঙন ঠেকিয়ে জনবসতি রক্ষায় নেওয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই প্রকল্পের কাজের মান শতভাগ নিশ্চিত করা হচ্ছে যাতে জনগণ পুরোপুরি সুফল ভোগ করতে পারেন। এজন্য সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে এবং সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কাজের মান ঠিক রাখতে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনিউ ইয়র্কে এবার আলোচনায় মেয়রপ্রার্থী মামদানির স্ত্রী রামা দুয়াজি
পরবর্তী নিবন্ধচিকিৎসকের পদ ৯, আছেন দুজন ২৭ নার্সের জায়গায় ৪ জন