মাঠজুড়ে কৃষকের স্বপ্ন

রাঙ্গুনিয়ায় আমনের ভালো ফলনের প্রত্যাশা

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | শনিবার , ২২ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় আমনের সবুজ আভা কেটে হলুদ হতে শুরু করেছে। বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠজুড়ে এখন হলুদ-সবুজের সমারোহ। মিষ্টি বাতাসে ধানের শীষে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। চট্টগ্রামের শস্য ভান্ডার খ্যাত গুমাইবিলে এই দৃশ্য দেখা গেছে। আবাদের শুরু থেকে চিন্তায় থাকা কৃষক এখন ভাল ফলনের প্রত্যাশা করছেন।
জানা যায়, বৃষ্টির অভাবে এবার দেরিতে আমন চাষাবাদ শুরু হয়েছিল। চাষাবাদের পর জমিতে পানি না থাকায় মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় পর আষাঢ় মাসের মাঝামাঝি সময়ে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির দেখা পায় কৃষকেরা। একটানা বৃষ্টিপাত হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠে। চাষাবাদের শুরুতে কৃষকের মনে যে দুশ্চিন্তা ও উৎকণ্ঠা ছিলো তা এখন অনেকটা কেটে গেছে। ধানের গোছা এখন অনেক বড় ও পরিপুষ্ট হয়েছে। সবুজ ক্ষেতে ফলন এসে তা এখন হলুদ রূপ ধারণ করেছে। ইতিমধ্যেই এ্যারাইজ এজেড- ৭০০৬ হাইব্রিড ও সাদা পাজাম জাতের আমন ধান আগাম পেকে গেছে এবং কাটাও শুরু হয়েছে। অন্যান্য জাতের ধানও আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কাটা শুরু হবে বলে জানান কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার রাঙ্গুনিয়ায় আমন আবাদ হয়েছে ১৫ হাজার ৩২০ হেক্টর। শুরু থেকে বৃষ্টি না পাওয়ার পর মাঝামাঝি সময়ে বৃষ্টি পেয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে শুষ্ক মৌসুমের মতোই এডব্লিউডি (অলটারনেট ওয়েটিং এন্ড ড্রাইয়িং অর্থাৎ পর্যায়ক্রমে ভেজানো এবং শুকানো) সূত্র প্রয়োগ হয়েছে কৃষি মাঠে। সাধারণত এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে হেক্টর প্রতি ১৫-৩০℅ ফলন বেড়ে যায়। এবার বর্ষা মৌসুমেই যখন এটি কৃষি মাঠে অটোমেটিক ভাবে প্রয়োগ হয়েছে, সেহেতু বাম্পার ফলন প্রত্যাশা করছেন কৃষি বিভাগ।

তবে যেখানে অন্যান্য ধানের ফলন হেক্টর প্রতি ৬ থেকে সাড়ে ৬ টন সেখানে এ্যারাইজ এজেড- ৭০০৬ হাইব্রিড জাতের ধান কাটার পর হেক্টর প্রতি ৮.৭ মেট্টিক টন ফলন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। এবছর অন্তত দুই শতাধিক হেক্টর জমিতে এই দুই জাতের ধানের আবাদ হয়েছে বলে জানা যায়।

কথা হয় গুমাইবিলের কৃষক মো. নুরুদ্দিন ফরিদুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম ও মোকাররমের সাথে। তারা জানান, শুরু থেকেই চরম উৎকন্ঠা নিয়ে আমন চাষাবাদ শুরু করেছেন। বৃষ্টির দেখা না পেয়ে তা আরও প্রকট আকার ধারণ করেছিল। তখন নানা উপায়ে সেচ দিয়েও হচ্ছিল না। তবে মাঝামাঝি সময়ে এসে পর্যাপ্ত বৃষ্টি পাওয়ায় সেই চিন্তা দূর হয়েছে। এখন আমনের ধানের গোছা বড় হয়েছে। চারার গোছা দেখে বলতে পারি ধানের ফলন ভাল হবে।

পোমরা এলাকার কৃষক আবুল হোসেন জানান, তিনি এজেড হাইব্রিড জাতের চাষাবাদ করেছেন। ১ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করে কাটার পর ৮.৭ মেট্টিক টন ধান পেয়েছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কারিমা আক্তার জানান, আমন চাষাবাদের জন্য বীজতলা তৈরির মূল সময়ে বৃষ্টির দেখা পায়নি কৃষকরা। জমিতে চারা রোপণের পরও বৃষ্টির দেখা মিলেনি। চারা রোপণের মাঝামাঝি সময়ে বৃষ্টির দেখা মেলে। পরে সময় অনুযায়ী বৃষ্টি পাওয়ায় আমন চাষ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এবারও বাম্পার ফলন হবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিইউএফএল এমডিকে অবরুদ্ধের ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের টিম
পরবর্তী নিবন্ধপ্রার্থিতার দৌড়ে এগিয়ে জনসন ও সুনাক