গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক এক তরফাভাবে ঘোষিত নগরীর ৭ থানা ও ১২ ওয়ার্ডের কমিটি কেন্দ্র থেকে বাতিল করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের গতকাল এক সিদ্ধান্ত মোতাবেক মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক অনুমোদিত নগরীর এই ১৯টি ইউনিটের (নগরীর ৭ থানা ও ১২ ওয়ার্ডের) কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। একই সাথে চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমের উপর দেয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয় এবং মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সকল নেতৃবৃন্দকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কোটাবিরোধী আন্দোলন রাজপথে থেকে প্রতিহত করতে নির্দেশনা দেয়া হয়। স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু গতকাল এই নির্দেশনা প্রদান করেন। কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের দপ্তর সম্পাদক আজিজুল হক আজিজ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
উল্লেখ্য কেন্দ্রীয় নির্দেশনা ও গঠনতন্ত্র না মেনে গত ১৪ মার্চ গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নগরীর ৭ থানা ও ১২ ওয়ার্ডের কমিটি ঘোষণা করেন নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেবাশীষ নাথ দেবু এবং সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান আজিজ।
এক তরফা ভাবে রাতের আঁধারে ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি ১৬ মার্চ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের অপর অংশের ১২ নেতা। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ১৮ মার্চ নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের উভয় পক্ষকে কেন্দ্র থেকে শোকজ করেছিল। একই সাথে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্যও ওইদিন নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই থেকে নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সকল কার্যক্রম স্থগিত হয়ে পড়েছিল।
দীর্ঘ ৪ মাস সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত থাকার পর গত ৬ জুলাই চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের উভয় পক্ষের নেতাদের নিয়ে ঢাকায় বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু। বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতারা নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই পক্ষের অভিযোগ–পাল্টা অভিযোগ শুনেন এবং ১৬ জুলাই পরবর্তী বৈঠকের তারিখ নির্ধারণ করেন। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকাল ঢাকায় দুই পক্ষকে নিয়ে বৈঠক হওয়ার কথা থাকলে কোটা বিরোধীদের আন্দোলনের কারণে বৈঠক (স্থগিত করা হয়েছে) অনুষ্ঠিত হয়নি।
কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের দপ্তর সম্পাদক আজিজুল হক আজিজ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় ‘চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক অনুমোদিত নগরীর ৭ থানা ও ১২টি ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত করা হলো এবং চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমের উপর ইতোপূর্বে দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হলো।’
উল্লেখ্য নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২০ সদস্যের আংশিক কমিটির মধ্যে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৮ জন নগর আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী। অপরদিকে কমিটির ৭ জন সহ সভাপতি, ৩ জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ২ জন সাংগঠনিক সম্পাদকসহ মোট ১২ জন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী।