মশক নিয়ন্ত্রণ ও পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমে ‘অসন্তুষ্ট’ মেয়র, রাতে কার্যক্রম পরিদর্শনের ঘোষণা

তিন মাসের বেশি সময় ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিতদের চাকরি থেকে বরখাস্তের নির্দেশনা পরিচ্ছন্ন বিভাগ কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১৬ এপ্রিল, ২০২৫ at ৭:২০ পূর্বাহ্ণ

বারবার সতর্ক করার পরও মশক নিয়ন্ত্রণ ও পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমে গাফেলতি লক্ষ্য করছেন বলে জানিয়েছেন সিটি মেয়র ডা. শাহদাত হোসেন। তাই বিভাগটির কর্মকর্তাকর্মচারীদের উপর ‘অসন্তুষ্ট’ মেয়র নিজেই রাতের বেলা পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন করার ঘোষণা দেন। এসময় পরিচ্ছন্ন ও মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে অবহেলা করলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। এছাড়া যারা তিন মাসের বেশি সময় ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন তাদের তালিকা প্রস্তুত করে চাকরি থেকে বরখাস্ত করারও নির্দেশনা তিনি। গতকাল মঙ্গলবার টাইগারপাস চসিক কার্যালয়ে পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন মেয়র। তিনি বলেন, এখন থেকে আমি নিজেই রাতে বের হবো। দেখে আসবো কে কাজ করছে, কে করছে না। যারা কাজে অনুপস্থিত থাকবে, তাদের বরখাস্ত করা হবে। কাজ না করলে চাকরি থাকবে না। গ্রিন সিটি, ক্লিন সিটি, হেলদি সিটি ছিল আমার নির্বাচনী ইশতেহারের মূল অঙ্গীকার। আমি তা বাস্তবায়নে কোন ছাড় দেব না।

এসময় মেয়র যেসব সুপারভাইজার, জোন প্রধান ও সুপারিন্টেনডেন্ট যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না, তাদের বদলির ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দেন। এছাড়া পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমে গতি আনতে মেয়র প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও মালামাল দ্রুত সংগ্রহের নির্দেশ দেন।

এসময় নগরবাসীর প্রতি সচেতনতার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, পরিচ্ছন্ন নগরী গড়তে শুধু সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারীদের দায়িত্ব নয়, নাগরিকদেরও সচেতন ভূমিকা রাখতে হবে। যত্রতত্র ময়লা না ফেলে নির্ধারিত স্থানে ফেলতে হবে এবং পরিবেশবিধ্বংসী পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। আমরা কঠোর অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছি নগরকে পরিচ্ছন্ন করতে। নগরীজুড়ে চসিকের স্পেশাল ও নির্বাহী ম্যাজিস্টেটরা অভিযান চালাবেন।

মেয়র জানান, ডেঙ্গু ও কিউলেঙ মশার বিস্তার রোধে প্রতিদিন দুইবার করে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে এবং তিনি নিজে মাঠপর্যায়ে কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছেন। ১০০টি ফগার মেশিন ও ১২০টি স্প্রে মেশিন ইতোমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকের সহায়তায় আরও আধুনিক ফগার মেশিন যুক্ত হচ্ছে। এছাড়া, খাল ও নালা পরিষ্কারের জন্য দুটি ব্যাকহোলোডার কেনা হয়েছে, যার ব্যয় ৫ কোটি টাকা। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৪০ হাজার বিন (ডাস্টবিন) বিতরণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

ডা. শাহাদাত বলেন, নগরবাসীর মশার কামড় ও স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে রক্ষায় আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। তবে সফলতা তখনই আসবে, যখন নগরবাসী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সবাই আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।

এসময় সিডিএর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কারণে নির্মিত অস্থায়ী বাঁধে কোথাও হঠাৎ করে জলাবদ্ধতা দেখা দিলে চসিককে তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে মেয়র নগরবাসীকে অনুরোধ করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ও উপপ্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমহেশখালীতে ছাত্রলীগ কর্মীর হামলায় বিএনপি নেতা নিহত
পরবর্তী নিবন্ধহাসিনা ও জয়সহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি