জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনের পর মন্ত্রিসভার আকার বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলছেন, মন্ত্রিসভার কলেবর বাড়লে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব কাউকে দেওয়া হবে। সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচিত কাউকে সেখানে দেখা যেতে পারে। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মান্টিটস্কির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন কাদের। খবর বিডিনিউজের। গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জিতে টানা চতুর্থবারের মত সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। ১১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৩৭ সদস্যের নতুন সরকার শপথ নেয়। বর্তমানে মন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন ২৫ জন; বাকি ১১ জন প্রতিমন্ত্রী। মন্ত্রিসভার আকার বাড়ার গুঞ্জনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা প্রধানমন্ত্রী বলতে পারেন। তবে এখানে সময় মত কিছু জায়গায়, যেমন শ্রম মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এগুলোতে কোনো না কোনো সময় মন্ত্রী আসবে। এটা আমার মনে হয় সংরক্ষিত মহিলা আসনগুলো আসার পরে মন্ত্রী আসতে পার। সেখানে মহিলাও আসতে পারে। সেই হিসেবে এর পরে চিন্তা–ভাবনা। প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ারে, তিনি এটা করবেন।
বিএনপির আন্দোলনে নিয়ে এক প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, বিএনপির এই যে লিফলেট বিতরণ, এটা একটা অ্যাকশন প্রোগ্রাম, এই আন্দোলনে কোনো লাভ নেই। দেশে ইস্যুভিক্তিক আন্দোলনের এটাই যদি চেহারা হয়, তাহলে বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি খাদের কত গভীরে সেটাই বোঝা যাচ্ছে। কিনারায় ছিল, এখন গভীরে, খাদে পড়ে গেছে।
বিএনপির ১৩ জন নেতাকর্মী জেলখানায় মারা গেছে বলে দাবি দলটি করেছে, সে বিষয়ে প্রশ্ন করলে কাদের বলেন, তালিকাটা প্রকাশ করতে বলুন, কবে মারা গেল? কীভাবে মারা গেল? কোন জেলে মারা গেল? কোন কাস্টডিতে মারা গেল? সেই তালিকাটা প্রকাশ করতে বলুন। অন্ধকারে ঢিল ছুড়ে তো আর লাভ নেই।
আওয়ামী লীগ এখন আর বিএনপিকে ‘পাত্তা দিচ্ছে না’–এমন পর্যবেক্ষণ কতটা সঠিক জানতে চাওয়া হয়েছিল ওবায়দুল কাদেরের কাছে। জবাবে তিনি বলেন, বিএনপিকে পাত্তা দিচ্ছি না বিষয়টা তা না, বিএনপি এখনও বড় দল, তারা এখন নিষ্ক্রিয়। তারা ভুলের চোরাবালিতে আটকে গেছে। তাদের ভুলের খেসারত তাদের দিতে হবে। আমি দল হিসেবে তাদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করি না, করা উচিতও না। বিরোধী হিসেবে আছে, থাকবে। কার অবস্থান জনগণের চোখে কখন কী হবে, জনগণ কাকে কী চোখে দেখবে, সেটা এই দেশে সময়ের পরিবর্তেনে সব কিছু স্পষ্ট হবে।
সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা কীভাবে করছে–এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, অমরা সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করছি। নতুন মন্ত্রিসভা এবং এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট যারা এই বিষয়টা ডিল করছে, তাদের প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, কথা বেশি না বলে বেশি করে কাজ করার জন্য। এই নির্দেশ তিনি সবাইকেই দিয়েছেন। এই মন্ত্রিসভায় সেভাবেই কাজ চলছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, বাজার নিয়ন্ত্রণ–এটা রাতারাতি ট্রান্সফরমেশন সম্ভব নয়। কারণ গোটা বিশ্বের যে চালচিত্র, আমরা সেখান থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো দ্বীপ নই। সারা দুনিয়াতেই মূল্যস্ফিতি, ইউরোপে কমে গিয়েছিল, সেই ইউরোপে মূল্যস্ফিতি এখন ১০ শতাংশের উপরে। সেখানে আমরা এখনও অনেক ভালো আছি। আমরা এখনও তুলনামূলকভাবে অনেক ভালো আছি। ক্ষুধায়, না খেয়ে মারা যাচ্ছে এমন কোনো উদহারণ নেই। আমরা ক্ষমতায় আছি, সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি।