মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও এর ছায়াগোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের ব্যাপক পরিসরে আঞ্চলিক যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা বাড়ছে। যুদ্ধের বিস্তার ঠেকাতে এবং গাজায় লড়াই থামাতে একটি চুক্তির জন্য আন্তর্জাতিক চাপও বাড়ছে। তার মধ্যেও গাজায় অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। সোমবার দক্ষিণাঞ্চলীয় গাজা সিটির কাছে খান ইউনিস নগরীতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। খবর বিডিনিউজের।
এতে অন্তত ১৮ জন নিহত এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের চিকিৎসাকর্মীরা। ইসরায়েলের লোকজনকে সরে যাওয়ার নতুন নতুন নির্দেশের মুখে দিশেহারা হচ্ছে আরও অনেক পরিবার এবং বাস্তুচ্যুত বহু মানুষ। গাজার জেইতুন শহরতলিতেও ইসরায়েলের বিমান হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছে। আর মিশরের সীমান্তবর্তী রাফায় নিহত হয়েছেন আরও দুজন।
চিকিৎসাকর্মীরা একথা জানিয়েছেন। মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় সর্বশেষ দফা আন্তর্জাতিক যুদ্ধবিরতি আলোচনায় সংশয় প্রকাশ করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। এই আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে বৃহস্পতিবার। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এ আলোচনায় অগ্রসর হওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে হামাস।
গোষ্ঠীটি আলোচনায় বসার পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ধারণার ওপর ভিত্তি করে দেওয়া একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মেনে নিতে ইসরায়েলকে বাধ্য করার দাবি জানিয়েছে মধ্যস্থতাকারীদের কাছে। হামাস প্রস্তাবটি মেনে নিয়েছিল। হামাসের ঘনিষ্ঠ দুই সূত্র বলেছে, তারা এ ব্যাপারে একরকম নিশ্চিত যে, ইরান এবং হিজবুল্লাহর প্রতিশোধমূলক হামলা ঠেকাতে আগেভাগেই ইসরায়েলের সঙ্গে নতুন আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে।
মধ্যস্থতার চেষ্টার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বলেছেন, বলতে পারেন এ এক মৃদু প্রত্যাখ্যান। হামাসের একটি কার্যকর পরিকল্পনা পাওয়া উচিত এবং তারা যে প্রস্তাবে রাজি হয়েছে তাতে ইসরায়েলের ইতিবাচক জবাব পাওয়া উচিত। কিন্তু হামাসের বিশ্বাস, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একটি চুক্তিতে পৌঁছতে আন্তরিক নন।
গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে মধ্যস্থতাকারীদের আলোচনার আহ্বানে হামাসের প্রতিক্রিয়া এমন এক সময়ে এল যখন মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বড় ধরনের যুদ্ধ, সংঘাতের আশঙ্কা বাড়ছে।
যুক্তরাষ্ট্র অঞ্চলটিতে ইউএসএস জর্জিয়া গাইডেড মিসাইল সাবমেরিন পাঠিয়েছে। এফ–৩৫সি যুদ্ধবিমান বহনকারী ইউএসএস আব্রাহাম লিংকন ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপকেও দ্রুত সেখানে পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তেহরানে কিছুদিন আগেই হামাসের রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়া এবং লেবাননের ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর কমান্ডার শুকরি হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরান ও হিজবুল্লার হামলার আশঙ্কা বাড়ায় যুক্তরাষ্ট্র পদক্ষেপ নিয়েছে।