মধুমাস জ্যৈষ্ঠ

সাজেদা আকতার | শুক্রবার , ২ জুন, ২০২৩ at ৫:৫২ পূর্বাহ্ণ

মধুমাস’ বলে যে শব্দটি বাংলা অভিধানে আছে, তার অর্থ আমরা সবাই মোটামুটি জানি। কিন্তু তারপরও বলছি, বাংলা অভিধানে সমাসবদ্ধ এই ‘মধুমাস শব্দটির অর্থ হলো চৈত্রমাস।

ফাল্‌গুন ও চৈত্র এ দুমাস বসন্তকাল। এ সময় নানা ধরণের ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় বাংলার অপরূপ প্রকৃতি। এই বসন্তের ফুল ফলে পরিণত হয় গ্রীষ্মকালে। তবে মধু তো ফলে থাকে না, ফুলে থাকে। তাই বসন্তকালের শেষ মাস চৈত্র মাসকেই অভিধানে বলা হয় মধুমাস। আবার গ্রীষ্মের শেষ মাস জ্যৈষ্ঠ। এ সময় ফল পেকে রসে টইটম্বুর হয়। লোকমুখে কিংবা কিছু বলতে বা লিখতে গেলে, আমরা প্রায়ই বলি– ‘মিষ্টি ফলের রসে ভরা মধুমাস জ্যৈষ্ঠ’এভাবেই জ্যৈষ্ঠ মাসের সাথে মধুমাস শব্দটি জুড়ে গেছে। এখন জ্যৈষ্ঠই যেন আসল মধুমাস। জ্যৈষ্ঠের রসালো ফলের সমারোহ গ্রীষ্মদহনের ক্লান্তি ভুলিয়ে দেয়। রুদ্র গ্রীষ্ম যেমন বাংলার মানুষকে উষ্ণ তাপে দহনে কষ্ট দেয়, তেমনি আবার নীরবে নিভৃতে কিছু উপহারও দেয়। তা হলো ফুল ও ফল। আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, তরমুজ এর মতো সুস্বাদু ফল তৃষ্ণার্ত মানুষের তৃষ্ণা নিবারণ করে। অসহ্য গরম আর তীব্র রৌদ্র দগ্ধতা বিদূরিত হয় জ্যৈষ্ঠের ফলের ঘ্রাণে। এর মায়াবী আদুরে নাম মধুমাস। এ সময় ফলের রাজা আম নিয়ে বড্ড মাতামাতি হয়। জ্যৈষ্ঠের নামকরণ হয়েছে তারার নামে। সে তারার নাম জেষ্ঠা। সাতাশ তারার মধ্যে এটি আঠারোতম। বৈশাখের মতো জ্যৈষ্ঠও একত্রিশা হয়। এই ঋতুবৈচিত্র্য বাংলা সাহিত্যের অন্যতম অনুষঙ্গ। শিল্পরসিক মানুষ মাত্রকেই প্রকৃতির এই বৈচিত্র্য সৌন্দর্য আকৃষ্ট করে। ভাবের উন্মেষ ঘটায়। প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ তখন নিজস্ব কবিত্বের সৌরভে সুরভিত হয়ে বাণীবদ্ধ করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমৃত্যুঞ্জয়ী বীর শহীদ নুর আহমদ চেয়ারম্যান
পরবর্তী নিবন্ধইক্বামতে দ্বীন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সহীহ্‌ ইসলামী সংগঠনসমূহের ঘাটতি