করোনায় দশ মাসে দশ লাখ মৃত্যু! বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কা, সংখ্যাটা বেড়ে বিশ লাখও হতে পারে। গোটা বিশ্বের মোট মৃত্যুর অর্ধেকের বেশি মূলত চারটি দেশে আমেরিকা, ব্রাজিল, ভারত এবং মেক্সিকোয়। আগস্ট, সেপ্টেম্বর থেকে দৈনিক মৃত্যু ক্রমশই বাড়ছে। এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে ইউরোপ, আমেরিকার শীতপ্রধান দেশগুলি। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, শীতে আরও বাড়বে সংক্রমণ। ইউরোপ ইতিমধ্যেই তা টের পাচ্ছে। স্পেন, ব্রিটেন নতুন করে লকডাউনের পথে হাঁটছে। কিন্তু সংক্রমণের থেকেও ব্রিটেন প্রশাসন ভয় পাচ্ছে, সপ্তাহান্তের ‘অ্যান্টি–লকডাউন’ সমাবেশ নিয়ে। গতকাল ফের লন্ডনের ট্রাফালগার স্কোয়ারের সামনে ভিড় করলেন হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ। তাদের দাবি, ‘ভ্যাকসিন চাই না’, ‘লকডাউন চলবে না’, ‘রুল অব সিক্স’ মানি না। খবর আনন্দবাজারের। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন নিজে করোনা–আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত। সুস্থ হওয়ার পরে নিজে জানিয়েছিলেন, চিকিৎসকদের জন্য এ যাত্রায় বেঁচে ফিরেছেন। এর পর থেকে দেশবাসীর উদ্দেশে তার বার্তা, সংক্রমণ রুখতে নিয়ম মেনে চলুন। একগুচ্ছ নিয়ম জারি করেছে বরিস–সরকার। যেমন, সুস্বাস্থ্যের উপরে জোর দিচ্ছে তারা। তেল–ঝাল–মশলাদার খাবার না–খেয়ে স্বাস্থ্যকর খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া জারি করা হয় ‘রুল অব সিক্স’। ৬ জনের বেশি এক জায়গায় জড়ো হলেই জরিমানা। এক অপরাধ দু’বার করলে জরিমানা দ্বিগুণ। কেউ করোনা–আক্রান্ত হলে তাকে ও তার সংস্পর্শে আসা সকলকে কোয়ারেন্টাইন থাকতে হবে। এ বিষয়ে নজর রাখবে সরকার। না–মানলেই শাস্তি। এ সব বাদ দিয়ে নতুন করে লকডাউন তো রয়েছেই। এই সব নিয়মের বিরুদ্ধে গতকাল পথে নেমেছিলেন বিক্ষুব্ধরা। তাদের হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘অত্যাচারই যখন আইন, তখন বাধা দিতে হবে’, ‘সত্যের মুখোশ খুলে দাও’, ‘আর মিথ্যে নয়, আর মাস্ক নয়, আর লকডাউন নয়’। বিক্ষোভকারীদের স্লোগান দিতেও শোনা যায়, ‘মাস্ক খুলে দাও’। গত সপ্তাহেও অ্যান্টি–লকডাউন বিক্ষোভ হয়েছিল লন্ডনে। মেট্রোপলিটন পুলিশ গতকাল এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, এই ধরনের জমায়েত বেআইনি। পুলিশ–কর্মকর্তা এড অ্যাডেলকান বলেন, লোকে বুঝছে না, যে এ ভাবে নিজের ও প্রিয়জনের বিপদ বাড়ছে।
করোনায় তালিকার প্রথম স্থানে আমেরিকা। সংক্রমিত ৭২ লাখ ৮৮ হাজার। মৃত ২ লাখ ৯ হাজার। আমেরিকাতেও ‘ভ্যাকসিন চাই না’ দাবি চলছে। একটি সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলে, অর্ধেক বাসিন্দাই তা নিতে চান না। কেউ কেউ স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, টিকা নেবেন না। কেউ কেউ অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন। সমীক্ষাটি করেছিল ওয়াশিংটন ডিসির ‘পিউ রিসার্চ সেন্টার’। ১০ হাজারেরও বেশি প্রাপ্তবয়স্ক সমীক্ষায় অংশ নেন। ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর সমীক্ষা হয়েছিল। তাতে দেখা গিয়েছে, ৫১ শতাংশ বাসিন্দা প্রতিষেধক চান। মে মাসেও এই সংখ্যাটা ৭২ শতাংশ ছিল। তবে এ ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের প্রতি অনীহার এক এবং একমাত্র কারণ, সম্ভাব্য টিকাগুলির উপরে ভরসা হারিয়েছেন মানুষ। তাদের বক্তব্য, যে গতিতে ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চলছে এবং যে পরিমাণ রাজনীতি চলছে তার অন্তরালে, তাতে টিকার কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা নিয়ে সন্দিগ্ধ তারা