ভোট দিয়ে গেল মৃতরাও!

পেকুয়ার উজানটিয়ার ৪নং ওয়ার্ডের ফলাফল হাইকোর্টে স্থগিত

পেকুয়া প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ১৪ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৯:৪৮ অপরাহ্ণ

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ভেলোয়ার পাড়ার কামাল হোসেনের স্ত্রী কোহিনুর আক্তার মারা গেছেন ২০০৯ সালে। কিন্তু ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর ভোট কেন্দ্রে এসে ভোট দিয়ে যান তিনি।

শুধু তিনি নন একই ওয়ার্ডের ফকির পাড়ার ইদ্রিছ মিয়ার স্ত্রী মৃত রেহেনা বেগমও ভোট দিয়ে গেছেন কবর থেকে উঠে এসে! তাছাড়া বিদেশে বসেও ভোট দিয়েছেন অনেকেই।

ঘটনাগুলো ঘটেছে পেকুয়া উপজেলায় গত ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত উজানটিয়া ইউপি নির্বাচনে। ৪নং ওয়ার্ডের ঘোষিত ফলাফল মেনে নিতে না পেরে এসব অভিযোগ নিয়ে উচ্চ আদালতের আশ্রয় নেন এক প্রার্থী। আর তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই ওয়ার্ডের ফলাফল ও নির্বাচনী পরবর্তী সব পদক্ষেপ স্থগিত করে হাইকোর্ট।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উজানটিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ঘোষিত ফলাফল স্থগিত ও ভোট পুন:গণনার আবেদন করে গত ২ ডিসেম্বর উচ্চ আদালতে রিট করেন ওই ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য প্রার্থী জিয়াউল হক সিকদার। তিনি তালা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন।

তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৩ ডিসেম্বর বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোট বেঞ্চ উজানটিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ফলাফল সহ পরবর্তী সব নির্বাচনী প্রক্রিয়া স্থগিত ঘোষণা করেন এবং কেন ভোট পুন:গণনা করা হবে না সেই বিষয়ে রুলনিশি জারি করে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে রিটকারী সদস্য প্রার্থী জিয়াউল হক সিকদার বলেন, “আমার ওয়ার্ডে আমরা ৩ জন প্রার্থী থাকলেও ভোটে নানা অনিয়মের মাধ্যমে কৌশলে আমাকে হারিয়ে দেয়া হয়েছে। রিটার্নিং অফিসারের পক্ষ থেকে আমাকে প্রদত্ত ফলাফল শিটে আমার প্রাপ্ত ভোট প্রথমে লেখা হয় ৪৪৪ কিন্তু পরবর্তীতে তা কেটে আমাকে দেয়া হয় ৪২৪ ভোট এবং আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জমির উদ্দিনকে(ফুটবল) ৪৪৪ ভোট দিয়ে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নামের পাশে প্রতীক উল্লেখ থাকলেও আমার নামের পাশে প্রতীক পর্যন্ত উল্লেখ করা হয়নি।”

তিনি বলেন, “কলমের খোঁচায় ২০ ভোটের ব্যবধানে আমাকে হারিয়ে দেয়া হলেও নির্বাচনের পরদিন ওই কেন্দ্রে ২০টির অধিক ব্যালট পেপার পাওয়া যায়। এছাড়া মৃত ব্যক্তি, বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তিও ভোট দেয়ার প্রমাণ রয়েছে আমার হাতে। এ বিষয়ে আমি প্রথমে রিটার্নিং অফিসার বরাবরে আবেদন করি কিন্তু উনি কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় আমি উচ্চ আদালতের আশ্রয় নেই। আদালত ৪নং ওয়ার্ডের নির্বাচনের পরবর্তী সব পদক্ষেপ স্থগিত ঘোষণা করে।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পেকুয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার রেজাউল করিম বলেন, “উচ্চ আদালতের আদেশ আমাদের হাতে এসেছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পরবর্তীতে আমাদের আইন শাখার পরামর্শ অনুযায়ী ওই ওয়ার্ডের বিষয়ে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাতকানিয়ায় অস্ত্র চালানো শিখাতে গিয়ে ব্যবসায়ী নিহত, আসামি গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধতিন মাসের মাথায় আবার স্বাক্ষর জাল করে সনদ