দীর্ঘ ৩ যুগ পর আগামী ১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদের নির্বাচন। নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং শিক্ষার্থীদের জন্য পুনরায় সংস্কার করা হচ্ছে চাকসু ভবন। এরই মধ্যে সংস্কারের জন্য ৩৫ লাখ টাকার বাজেট বরাদ্দ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এত বছর চাকসু কার্যক্রম বন্ধ থাকায় প্রায় অকেজো হয়ে পড়েছিল ভবনটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ ৫৬৪তম সিন্ডিকেট সভায় এ বাজেটটি পাশ করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার চবির প্রকৌশল দপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল আহাদ এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভায় চাকসু ভবন সংস্কারে ৩৪ লাখ ৮২ হাজার ৬৭৭ টাকার একটি বাজেট পাশ হয়েছে। এরইমধ্যে জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের কিছু কাজ করা হচ্ছে। দ্রুত স্বচ্ছতার সঙ্গে বাজেটের আলোকে বাকি কাজ সম্পন্ন করা হবে। তিনি বলেন, সম্পূর্ণ চাকসু ভবন রং করা, ইলেক্ট্রিক, টাইলস, গ্লাস ও প্লাম্বিংয়ের কাজসহ ছোটবড় যাবতীয় কাজ এ বাজেটের অন্তর্ভুক্ত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ–উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, চাকসু ভবন সংস্কারে বড় একটি বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরকে সংস্কারের কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত এ সংস্কারের কাজ শেষ হবে।
সংস্কারের কাজ তত্ত্বাবধানে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটিও গঠিত হয়েছে। কমিটিতে আছেন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৈয়ব চৌধুরী, চাকসু কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান চৌধূরী, সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক বজলুর রহমান ও চবির প্রকৌশল দপ্তর নির্বাহী প্রকৌশলী ইমদাদুল হক রিয়াদ।
সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯০ সালে। এরপর থেকেই প্রায় ৩৫ বছর কার্যত পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল চাকসু ভবন। দীর্ঘদিন পর ভবনটির সংস্কারে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মামুন হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন পর চাকসু ভবন সংস্কারে আমরা অনেক আনন্দিত। আমরা দেখতে পাচ্ছি ভবনটিতে রং করাসহ আরো বিভিন্ন কাজ করা হচ্ছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলবো শুধু অবকাঠামগত সংস্কার নয়, আমরা চাই চাকসুর মাধ্যমে যেন প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলো পূরণ করা হয়।
ভোটার ও প্রার্থীদের সরব উপস্থিতি, অবকাঠামোগত সংস্কার–সবমিলিয়ে জমজমাট হয়ে উঠেছে চাকসু ভবন। শিক্ষার্থীদের কাছে এটি এখন শুধু ভাতের হোটেল নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর প্রতিনিধিত্বের প্রতীক হয়ে উঠেছে চাকসু ভবন।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে চাকসু নির্বাচনের প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচার–প্রচারণা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ঝুপড়ি থেকে লেডিস ঝুপড়ি, শহীদ মিনার থেকে জিরো পয়েন্ট, অনুষদ হতে শাটল ট্রেন– সর্বত্রই প্রার্থীরা ঘুরছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে, দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়কে পরিবর্তনের নানা প্রতিশ্রুতি, জানাচ্ছেন নিজেদের নির্বাচনী ইশতেহার।