চন্দনাইশে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। বন্যার পানি নেমে গেলেও রাস্তাঘাট, সবজি, ধানের পাশাপাশি মৎস্য খামারীদের অপূরনীয় ক্ষতি হয়েছে। স্মরণকালের ভয়াবহ এ বন্যায় ২টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নের ২ হাজার ৫৩৭টি পুকুর সম্পূর্ণ ডুবে গিয়ে সমস্ত মাছ ভেসে গেছে। যার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি টাকা হবে বলে উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়।
প্রবল বৃষ্টির ফলে পাহাড়ি ঢল নেমে আসায় গত ৭ আগস্ট ভোর থেকে শঙ্খনদের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে। যা স্মরণকালের সবচেয়ে বড় বন্যায় রূপ নেয়। বন্যার পানি স্থায়ী হয় ৩ দিন। পানিবন্দি হয়ে পড়ে লাখো মানুষ। উপজেলার অভ্যন্তরীন প্রায় সবগুলো সড়কের উপর দিয়ে কোমর সমান পানি প্রবাহিত হওয়ায় বন্ধ হয়ে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থাও। অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হয় সবজি, আউশ ও আমন ক্ষেতের। বন্যার পানিতে ডুবে যায় ২ হাজার ৫৩৭টি পুকুর। এতে ওই সমস্ত পুকুরের সব মাছ বন্যার ভেসে যায়। মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দোহাজারী পৌরসভায় ৪০০, হাশিমপুর ইউনিয়নে ১৬০, সাতবাড়িয়া ইউনিয়নে ১৫১, বৈলতলী ইউনিয়নে ৬৩০, বরমা ইইনয়নে ৩৫০, বরকল ইউনিয়নে ৫০০, ধোপাছড়ি ইউনিয়নে ১৭৬, কাঞ্চনাবাদ ইউনিয়নে ৭৫, জোয়ারা ইউনিয়নে ৭৫, চন্দনাইশ পৌরসভায় ৩০টি পুকুর ডুবে যায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাজারো মৎস্য খামারী। একেবারে নি:স্ব হয়ে পড়েছে অনেকেই। হাসিমপুর ইউনিয়নের বড়পাড়া গ্রামের বখতিয়ার উদ্দীন জানান, এবারের বন্যা এতই ভয়াবহ ছিল যে, পুকুর পাড়ে অস্থায়ীভাবে জাল দিয়েও মাছ রক্ষা করা যায়নি। তার ৩টি পুকুর ডুবে অন্তত ১৫ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। ঋণ নিয়ে এসব পুকুরে বিভিন্ন প্রকারের মাছ চাষ করেছিরেন। বন্যা তার সর্বনাশ করে গেছে। এখন তিনি কিভাবে ঘুরে দাঁড়াবেন তাও জানেননা। সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের জসিম উদ্দীন আহমদ জানান, স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে তার ১৩টি পুকুরের মধ্যে ১২টিই ডুবে যায়। এরমধ্যে ১টি পুকুর বন্যার পানিতে না ডুবলেও বন্যার পানি জমে থাকার অযুহাতে স্থানীয় লোকজন ওই পুকুরের প্রায় ২শ ফুটের মতো পাড় কেটে দেয়। কেটে দেয়া ওই পুকুরে ছিল ১ লাখ ৫০ হাজার পাঙ্গাস মাছের পোনাসহ অন্যান্য মাছ। সবগুলোই ভেসে গেছে। ডুবে যাওয়া ১২টি পুকুরে তার ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি সাধিত হয় বলে জানান তিনি। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসান আহসানুল কবির জানান, চন্দনাইশে ৪ হাজার ২৮৭টি পুকুর রয়েছে। তৎমধ্যে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ডুবে যায় ২ হাজার ৫৩৭টি। এতে ওই সব পুকুরে চাষকৃত বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ভেসে যায়। যার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১০ কোটি টাকা।