যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলায় আনুষ্ঠানিকভাবে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধশুরু করতে যাচ্ছে বলে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দিনকয়েক আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন। খবর বিডিনিউজের।
কয়েক ঘণ্টা পরই তার সেই ঘোষণা নিয়ে টিটকারি শুরু হয়ে গেছে, কেননা এইটুকু সময়ের মাঝেই তিনি কুখ্যাত ও দণ্ডিত এক কোকেন পাচারকারীকে সম্পূর্ণ ও নিঃশর্ত ক্ষমা করে দিয়েছেন, জানিয়েছে এনডিটিভি। শনিবার ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সন্দেহভাজন একটি মাদক চোরাকারবারি চক্রের বিরুদ্ধে বিস্তৃত সামরিক ও কূটনৈতিক অভিযান চালানোর ঘোষণা দেন। এর অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার সেই কথিত কার্টেল দে লোস সোলেসকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় অন্তর্ভুক্তও করেছে।
ট্রাম্প প্রশাসন এর মধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চল ও প্রশান্ত মহাসাগরে একের পর এক নৌযানকে ‘মাদকবাহী’ আখ্যা দিয়ে হামলাও চালিয়ে যাচ্ছে, তারা ক্যারিবীয় অঞ্চলে বিপুল সংখ্যক মেরিন সেনা ও যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে কোকেনের প্রবাহ রুখতেই এসব পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছিল বলে দাবি হোয়াইট হাউসের। এসব পদক্ষেপের পাশাপাশি ট্রাম্প হন্ডুরাসের সাবেক প্রেসিডেন্ট হুয়ান অরলান্দো হের্নান্দেজকে ক্ষমাও করে দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে শত শত টন কোকেন পাচারে সহায়তার অভিযোগে মার্কিন এক ফেডারেল আদালতে গত বছর হের্নান্দেজ দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। দুই মেয়াদে হন্ডুরাসের প্রেসিডেন্ট থাকার পর ২০২২ সালে হের্নান্দেজকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হয়। অস্ত্র ও মাদক পাচারসহ বিরাট এক ষড়যন্ত্রের দায়ে তাকে ৪৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। রোববার আচমকা এক ঘোষণায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প হন্ডুরাসের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হের্নান্দেজের ডানপন্থি দলের প্রার্থী নাসরি আসফুরার প্রতি তার সমর্থন ব্যক্ত করেন। অনেক মানুষকে আমি অসম্ভব শ্রদ্ধা করি বলে ট্রাম্প ক্ষমা প্রদানের পক্ষে যুক্তিও দিয়েছেন।
বলেছেন, হের্নান্দেজের সঙ্গে খুবই রূঢ় ও অন্যায্য আচরণ করা হয়েছে। হন্ডুরাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে আগে হের্নান্দেজকে ক্ষমা এবং আসফুরাকে সমর্থন মধ্য আমেরিকার দেশটির নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বিচার চলাকালে মার্কিন কৌঁসুলিরা বলেছিলেন, বছরের পর বছর ভেনেজুয়েলা থেকে যু্ক্তরাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণ কোকেন যাওয়ার পথে হন্ডুরাসকে ব্যবহারে সায় ছিল হের্নান্দেজের। তাকে ট্রাম্পের ক্ষমার খবর মার্কিন ও হন্ডুরাসের কর্মকর্তাদের হতভম্ভ করে দিয়েছে।
ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘৃণিত মাদক পাচারকারীদের সঙ্গে সম্পর্ক এবং কোকেনের কারণে হওয়া অবর্ণনীয় ধ্বংসযজ্ঞ বিবেচনায় ৫৭ বছর বয়সী হের্নান্দেজ যেন কারাগারেই মারা যান, তা নিশ্চিত করতে কৌঁসুলিরা বিচারককে অনুরোধও করেছিলেন। ভার্জিনিয়ার সেনেটর টিম কেইন হন্ডুরাসের সাবেক প্রেসিডেন্ট ক্ষমা করে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে অবিবেচনাপ্রসূত আখ্যা দিয়েছেন। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ তার মাদকবিরোধী বেআইনি নীতি নিয়ে তৈরি ভুয়া বয়ানের নতুন প্রমাণ।










