গত মাসের টানা দুই জয়ে ছন্দে ফেরার যে আভাস দিয়েছিল ব্রাজিল। তবে তা ফিকে হতে দেরি হলো না। ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে প্রথমে এগিয়ে গিয়ে আশা জাগালেও, ব্যবধান ধরে রাখতে পারল না পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। তারপরও তাদের সামনে সুযোগ এসেছিল। কিন্তু স্পট কিকে ব্যর্থ হয়ে হতাশ করেন ভিনিসিউস জুনিয়র। প্রতিপক্ষের মাঠে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচটি ১–১ ড্র করেছে ব্রাজিল। রাফিনিয়ার গোলে দরিভাল জুনিয়রের দল এগিয়ে যাওয়ার পর সমতা টেনেছেন তেলাস্কো সেগোভিয়া। অক্টোবরের আন্তর্জাতিক বিরতিতে চিলির মাঠে ২–১ গোলে জয়ের পর, পেরুকে ৪–০ গোলে উড়িয়ে দেয় ব্রাজিল। এতে জাগে নিজেদের খুঁজে ফেরা দলটির স্বরূপে ফেরার আশা। ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ড্র তাদের জন্য একটাই ধাক্কাই। আক্রমণাত্মক ফুটবলে শুরুটাও বেশ ভালো করে ব্রাজিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লক্ষ্য পূরণ করতে পারেনি তারা। প্রতিপক্ষের ভুলে নবম মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে যায় ব্রাজিল। নিজেদের সীমানায় বল হারায় ভেনেজুয়েলা এবং সেই সুযোগে ক্ষিপ্রতায় বক্সে ঢুকে আগুয়ান গোলরক্ষককে কাটিয়ে কাটব্যাক করেন ভিনিসিউস জুনিয়র। দারুণ পজিশনে বল পেয়ে উড়িয়ে মারেন রাফিনিয়া।
একের পর এক আক্রমণ করতে থাকা ব্রাজিল ২২ মিনিটে একটুর জন্য গোল পায়নি। সাভিনিয়োর থ্রু পাস বক্সে পাওয়া ভিনিসিউসের নেওয়া শট পোস্টে লাগে। ওই আক্রমণেই সতীর্থের পা ঘুরে বল পেয়ে বক্সের বাইরে থেকে শট নেন মিডফিল্ডার গেরসন। ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক। প্রথম ২৫ মিনিটের চাপ সামলে ২৭ মিনিটে পাল্টা আক্রমণ শাণায় স্বাগতিকরা। গোলের উদ্দেশ্যে প্রথম শটও নেয় তারা। যদিও প্রতিপক্ষকে সেভাবে ভাবাতে পারেনি। ৪৩ মিনিটে রাফিনিয়ার অসাধারণ নৈপুণ্যে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। প্রায় ২০ গজ দূর থেকে দুর্দান্ত ফ্রি কিকে বল ঠিকানায় পাঠান বার্সেলোনায় হয়েও দারুণ সময় কাটানো এই ফরোয়ার্ড। বল দূরের পোস্টের ভেতরের দিকে লেগে জালে জড়ায়। প্রথমার্ধে তেতে ওঠার আভাস দেওয়া ভেনেজুয়েলা বিরতির পর খেলা মাঠে গড়াতেই গোল পেয়ে যায়। সতীর্থের কাটব্যাক বক্সের মুখে পেয়ে জোরাল শটে প্রতিক্ষের একগাদা খেলোয়াড়ের মধ্যে দিয়ে বল ঠিকানায় পাঠান তেলাস্কো। পরের কয়েক মিনিটে আরও কয়েকটি ভালো আক্রমণ শাণায় ভেনেজুয়েলা। এর মাঝেই ওই পেনাল্টি কিক পেয়ে হতাশ করেন ভিনিসিউস।
৫৯ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে বঙে একা ঢুকে পড়েন ভিনি। গোলরক্ষক ছুটে গিয়ে তাকে ফাউল করলে ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। ভিনিসিউসের দুর্বল স্পট কিক ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক রাফায়েল রোমো। তারপরও সুযোগ ছিল, কিন্তু ফিরতি বল পেয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা। গোলের জন্য মরিয়া হয়ে বাকি সময়ের প্রায় পুরোটা জুড়ে টানা আক্রমণ করতে থাকে ব্রাজিল। কিন্তু প্রতিপক্ষের জমাট রক্ষণ আর নিজেদের বোঝাপড়ার ঘাটতির জন্য উল্লেখযোগ্য কিছুই করতে পারেনি তারা। পারেনি ভেনেজুয়েলাও। ৮৯ মিনিটে গাব্রিয়েল মার্তিনেল্লিকে ভেনেজুয়েলার ডিফেন্ডার আলেকসান্দের গনসালেস ফাউল করেন। প্রতিবাদ জানাতে ছুটে যান ভিনিসিউস। তার মুখেও হাত দিয়ে কিছুটা আঘাত করে বসেন গনসালেস। এতে দুই দলের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়, গনসালেসকে লাল কার্ড দেখান রেফারি। অবশ্য এই ড্রয়ের ফলে আপাতত পয়েন্ট টেবিলের তিনে উঠেছে ব্রাজিল। ১১ ম্যাচে পাঁচ জয় ও দুই ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট ১৭। ১২ পয়েন্ট নিয়ে সাতে ভেনেজুয়েলা।