ভুল চিকিৎসা ও নিম্নমানের চিকিৎসাসেবার অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) মেডিকেল সেন্টারের প্রধান ফটকে তালা ও সাময়িক কার্যক্রম স্থগিত করে দিয়েছে শাখা ছাত্রলীগের একাংশ।
এসময় মেডিকেল সেন্টারে অবস্থানরত সকল চিকিৎসক ও কর্মচারীদের বের করে দিয়ে প্রধান ফটক আটকে রেখে বাইরে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগের কর্মীরা।
আজ শনিবার(১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে প্রক্টরিয়াল বডির আশ্বাসে ও উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়ে বিকেল চারটার দিকে মূল ফটক খুলে দেওয়া হয়।
জানা যায়, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের মো. মামুন নামে এক শিক্ষার্থী চবি মেডিকেলে চিকিৎসা নেওয়ার পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। পরে অসুস্থ অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এতে চবি মেডিকেলে ভুল চিকিৎসা দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করে মেডিকেল সেন্টার ঘেরাও করে শাখা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক ‘বিজয় গ্রুপ’।
এ ব্যাপারে বিজয় গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস আজাদীকে বলেন, “এর আগেও চবি মেডিকেলে অনেকে ভুল চিকিৎসার শিকার হয়েছেন। কয়েকদিন আগে মামুন নামে এক শিক্ষার্থী চবি মেডিকেলে চিকিৎসা নেয়। পরে তার অবস্থা আরও খারাপ হলে চমেকে নেওয়া হলে ডাক্তাররা ছেলেটির নিউমোনিয়া হয়েছে বলে জানান। যদি চবি মেডিকেল এ ব্যাপারে অবগত করত তাহলে আগে থেকেই ভালো চিকিৎসা করা ব্যবস্থা নেয়া যেত। অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, সেই অনুসারে ব্যবস্থা নিবেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।”
নয় দফা অভিযোগপত্রে বলা হয়, চবি মেডিকেলের চিকিৎসার সার্বিকমান অস্বাভাবিকভাবে নিচে নামছে। সম্প্রতি ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মামুনকে ভুল ওষুধ প্রয়োগ করায় সে মুমূর্ষু অবস্থায় চমেকে ভর্তি হতে বাধ্য হয়েছে বলে আমরা জেনেছি। এর আগে, শ্রুতি চৌধুরী নামে সংস্কৃতি বিভাগের একজন ছাত্রী জ্বর নিয়ে এলে জ্বর মাপার ডিজিটাল থার্মোমিটারটিও নষ্ট থাকায় তাকে ভুল ওষুধ দেওয়া হয়।
অভিযোগ পত্রে আরও বলা হয়, চবি মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসার মান খারাপ, ডাক্তাররা সময়মতো আসেন না এবং তাদের সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব নেই। নাপা ওক ফ্লাজিল হচ্ছে সকল রোগের ওষুধ। সেন্টারে বেসিক চিকিৎসা সরঞ্জাম ও টেস্ট ইকুইপমেন্ট নেই, থাকলেও সেগুলো কাজ করে না। প্যাথলজি বিভাগের কোনো কাজ নেই, ডাক্তাররা রিপোর্ট দেখে রোগ বলতে পারেন না। ৬টি অ্যাম্বুলেন্স থাকার পরও মাত্র চলে দু’টি। আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়লেও কোনো মনোচিকিৎসক নেই। ব্লাড টেস্ট, ইসিজি, এক্সরে পরীক্ষা করার কোনো সরঞ্জাম নেই এবং ডাক্তার-কর্মচারীরা ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে না। এসময় অভিযোগগুলো সমাধান করতে প্রশাসনকে দ্রুত এগিয়ে আশার দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চবি মেডিকেল সেন্টারের চিফ মেডিকেল অফিসার(ভারপ্রাপ্ত) ডা. আবু তৈয়বের ফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. শহীদুল ইসলাম বলেন, “ছাত্রদের একটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। বিষয়টি সমাধান করতে আমরা আলোচনা করছি।”