ভাষা আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য

আজাদী ডেস্ক | বৃহস্পতিবার , ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৬:১৩ পূর্বাহ্ণ

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন শুধু নয়, যে কোনো আন্দোলনসংগ্রামে পিছিয়ে ছিলেন না। অনেক ক্ষেত্রে ছিলেন অগ্রভাগে। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে মাস্টারদার সাথে সহযোদ্ধা ছিলেন প্রীতিলতা, কল্পনা দত্তরা। ভাষা আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নারীদের ভূমিকা ছিল অনন্য। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভাঙার ক্ষেত্রে বিতর্ক সৃষ্টি হলে নারী ভাষাসংগ্রামীরা এর পক্ষে মত দেন। সেদিন সকাল থেকেই স্কুলকলেজের মেয়েরা ছোট ছোট দলে এসে আমতলার সভায় যোগ দেন। নারী ভাষাসংগ্রামীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে দেওয়ার মাধ্যমে আন্দোলন দমাতে পুলিশের জারি করা ১৪৪ ধারা প্রথমেই ভেঙে দিতে সক্ষম হন। ১০ জন করে বের হওয়া প্রথম দুটি দলের অনেকেই গ্রেপ্তার হন। ছাত্ররা ব্যারিকেডের ওপর ও নিচ দিয়ে লাফিয়ে চলে যান। পরে তৃতীয় দল নিয়ে বেরিয়ে ব্যারিকেড ধরে টানাটানি শুরু করেন ছাত্রীরাই। সেদিন পুলিশের লাঠিচার্জ আর টিয়ারশেলে অনেক ছাত্রী আহত হন। ১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি গায়েবানা জানাজা, শোক মিছিল ও ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ হরতালসহ প্রতিটি কর্মসূচিতে নারীরা অংশগ্রহণ করেন। ভাষা আন্দোলনে পাকিস্তান আর্মি ও পুলিশের তাক করা বন্দুকের নলকে উপেক্ষা করে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও এক সারিতে ছিলেন সব মিছিলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা রাতে লুকিয়ে পোস্টার এঁকেছেন। আহতদের চিকিৎসায় অগ্রণী ভূমিকা রাখেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রীরা। আন্দোলনকে বেগবান করতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাঁদা তুলেছেন নারীরা। অনেক গৃহিণী আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে নিজের গহনা খুলে দেন। ভাষা আন্দোলনে জড়িত থাকায় অনেক নারীকে জেলে যেতে হয়। অনেক ছাত্রী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বহিস্কৃত হন। শুধু ঢাকাতেই নয়, ঢাকার বাইরেও নারীরা ভাষা আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেন। তারাও পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধেও নারীদের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখ করার মতো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাউজানে হচ্ছেন ৫ সংসদ সদস্য
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম পাচ্ছে তিন এমপি