ভালবাসা অনুভবের বিষয় এবং অনুভব প্রকাশ করলেই শুধুমাত্র ভালবাসা প্রকাশ পায়। বাঁশি যেমন কেউ না বাজালে তার সুর কেউ শুনতে পারে না ঠিক তেমনি ভালোবাসা যতক্ষণ না প্রকাশ করা হয় ততক্ষণ অন্যজন জানবে না আপনি তাকে ভালোবাসেন কি না। তাই সেই ভালবাসা কোন গুরুত্বও পাবে না অপরজনের কাছে। এ শুধু দুজন নর-নারী বা প্রেমিক -প্রেমিকার জন্য যে প্রযোজ্য তা কিন্তু নয়। সব ধরণের রিলেশানেই ভালবাসার প্রকাশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখন কথা হলো প্রকাশ করার জন্য কি সারাক্ষণ “ভালবাসি” বা আই লাভ ইউ বলে, বলে মুখে ফেনা তুলে যেতে হবে? মোটেই তা নয়। শুধুমাত্র প্রকাশ পাবে আপনার আচরণে, কাজে, অনুভবে, দায়িত্বশীলতায়, প্রশংসায় এবং পরে আসবে সেক্রিফাইস কতটুকু করছেন ভালবাসার মানুষটির জন্য তার মধ্যেই।
আর এসব করতে হলেই আপনার জীবনের কিছু মূল্যবান সময় আপনার প্রিয়জনদের জন্য ব্যয় করতেই হবে শত ব্যস্ততার মাঝেও। ভালবাসা কোন মেটেরিয়েল জিনিষ নয় যে আপনি বাক্স বন্দী করে রাখার মত হৃদয়ে সযত্নে বন্দী করে রাখলেন। কিংবা অপ্রকাশিত এবং যত্নহীন অবহেলিত ভালোবাসা যা আপনার নিরাসক্ত আচরণে প্রকাশ পাচ্ছে, আর উল্টো আপনি ভাবছেন ভালবাসার মানুষটি আপনার নিজের সম্পত্তি হয়ে গেল! সময় না দেওয়ার কারণে প্রতিটি রিলেশানে দূরত্ব আসতে থাকে এবং একসময় ভেঙেও যায় সেই রিলেশান। আর ভেঙে যাওয়া রিলেশান কখনই আবার নতুন করে আগের মত গড়ে উঠে না। জোড়াতালি দেওয়া সেই রিলেশানে দূরত্ব থেকেই যায়।
কারণ আস্থা হারিয়ে যায় । অনেক পরিবারের সন্তানের মুখে শোনা যায় তাদের মা বা বাবার সাথে দূরত্ব সৃষ্টির কথা। সেইসব পরিবারের সন্তানরা দেখা যায় মা বাবার চেয়ে তাকেই বেশি ভালোবাসে, বিশ্বাস করে, আস্থাভাজন মনে করে ছোটবেলা থেকে যার সাহচর্য বেশি পেয়েছে। যে যত বেশি যত্নে ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারবে বাঁশির সুরের মতোই তত বেশি সুরেলা হয়ে বাজবে।
তাই প্রিয়জনকে, ভালবাসার মানুষটিকে সময় দিন। পাশে থাকুন সহমর্মিতায়। সহানুভূতিশীল হোন। হাত বাড়িয়ে দিন সহযোগিতায়। ভালবাসা প্রকাশ করুন আপনার মনোযোগ নিবন্ধ করে আচরণে, কাজে। দায়িত্বশীল হোন যে কোনো রকম সম্পর্কে। মনে রাখতে হবে পরস্পরের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে, আস্থাভাজন হতে একে অপরকে সময় দিয়ে সময় কাটানোর আর কোন বিকল্প নেই। আপনার প্রিয়জনরা,ভালোবাসার মানুষেরা সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে আপনার সঙ্গ, আপনার প্রশংসা ও সহানুভূতি।