সুপার টুয়েলভ বা চূড়ান্ত পর্বের খেলা শুরু হয়েছে গতকাল থেকে। কিন্তু যে খেলাটাকে নিয়ে ক্রীড়ামোদী ও দর্শকদের প্রবল উৎসাহ তা হলো ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ। গতকাল চূড়ান্ত পর্বের দু’টি ম্যাচ ছিল। প্রথমটি গতবারের বিজয়ী অস্ট্রেলিয়া ও রানার্স-আপ নিউজিল্যান্ডের মধ্যে। ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ৮৯ রানে জয়লাভ করে। ক্রিকেটে ইদানীং ‘পিঞ্চ হিটিং’ বলে একটা কথা চালু হয়েছে। নিউজিল্যান্ড এর ফিন এ্যালেন ১৬ বলে ৪২ রান করে এই কথার সত্যতা প্রমাণ করনে। টিম সাউদি ৬ রানে তিন উইকেট নিয়েছেন।
দ্বিতীয় ম্যাচটি ছিল ইংল্যান্ড এবং আফগানিস্তানের মধ্যে। টসে জিতে ইংল্যান্ড প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে স্যাম কারেন (৫/১০) এর মারাত্মক বোলিংয়ে আফগানিস্তান মাত্র ১১২ রানে সকলে আউট হয়ে গেলে ইংল্যান্ড ৫ উইকেটে ১১৩ রান সংগ্রহ করে জয় ছিনিয়ে নেয়।
এবারের টি-২০ বিশ্বকাপে সবচাইতে আলোচিত বিষয় ছিল প্রথম পর্বে নামিবিয়ার কাছে শ্রীলঙ্কার পরাজয় এবং নেদারল্যান্ডস এর কাছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পরাজয়। শ্রীলঙ্কা পরবর্তীতে সুপার টুয়েলভে আসতে পারলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিদায় ক্রিকেট প্রেমীদের ব্যথিত করেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজবিহীন বিশ্বকাপ ক্রিকেট এ যেন কল্পনার অতীত। সবচাইতে বড় ক্ষতি হোল মাঠে ক্যালিপসোর সুরে মাতানো প্রাণবন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের সমর্থকদের আর পাওয়া যাবে না।
ভারত-পাকিস্তান অনেকদিন থেকে কোন দ্বি-পাক্ষিক ম্যাচ খেলেনি। তাই এই দুইদলের একে অপরের বিরুদ্ধে কি ধরনের স্ট্র্যাটেজি নেবে সেটা ধারণা করা মুশকিল। তবে দুইদলের শক্তিমত্তার বিচারে আমরা একটা ধারনায় পৌঁছাতে পারি বলে আমার বিশ্বাস।
পাকিস্তান দলের ব্যাটিং বর্তমানে বাবর আজম ও মো. রিজওয়ানের উপর নির্ভরশীল। তবে দলে মোহাম্মদ নেওয়াজ, আসিফ আলি, ইফতিকার আহমদ, হায়দর আলির মত প্রতিশ্রুতিশীল খেলোয়াড় রয়েছেন। বোলিংয়ে শাহিন শাহ আফ্রিদির প্রত্যাবর্তন দলকে সমৃদ্ধ করেছে। তরুণ মোহাম্মদ হাসনাইন, নাসিম শাহ ও হারিস রউফ দলকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখবে বলে আমার ধারণা। তবে উসমান কাদিরের ইনজুরি দলের জন্য ক্ষতিকারক।
ভারতের ব্যাটিং সমৃদ্ধ লাইন আপ যে কোন বোলিংকে ছারখার করে দিতে পারে। লোকেশ রাহুল, রোহিত শর্মা, বিরাট, সূর্যকুমার যাদব, হার্দিক পান্ডিয়া, দীনেশ কার্তিক/ ঋষভ পন্থ যে কোনো বোলারের ত্রাস।
তবে যশপ্রীত বুমরাহর ইনজুরি ভারতকে অনেক দুর্বল করে দিয়েছে। তাই বর্ষীয়ান ভুবনেশ্বর কুমার, মোহাম্মদ শামি, হর্ষ প্যাটেল বা আর্শ্বদীপ সিং কতটা কার্যকর হবে সেটা চিন্তার বিষয়। তবে স্পিনে সমৃদ্ধ ভারতের রবিচন্দ্রন অশ্বিন, অক্ষর প্যাটেল ও যুগেন্দ্র চাহাল দলের অন্যতম ভরসা।
দুইদলের শক্তিমত্তার বিচারে আমরা একটা জমজমাট ম্যাচ এর উত্তেজনায় থাকবো। যদিও ক্রিকেটে শেষ বলটি না হওয়া পর্যন্ত কোনো রকম ভবিষ্যদ্বণী করা বাতুলতার সামিল, তবুও আমি এই মুহূর্তে পাকিস্তান দলকে ৬০-৪০ এ এগিয়ে রাখবো।