প্রতিবেশী দেশ ভারতে করোনাভাইরাসের গণ টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। দেশটিতে মাত্র এক বছরে দেড় লাখেরও বেশি মানুষ মারা গেছে এই ভাইরাসে।
আজ শনিবার (১৬ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
প্রথম দিনেই ভারত ৩ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যমগুলো। বিডিনিউজ
শুরুতে সম্মুখসারির তিন কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে ভারত সরকার। এ তালিকায় স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়াও পরিচ্ছন্নতাকর্মী, সেনাবাহিনী ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মীদের নাম রয়েছে।
ভারতে টিকাদান কর্মসূচিতে যেসব ডোজ ব্যবহৃত হচ্ছে, সবই তৈরি হয়েছে ভারতে। কোভিড-১৯ মহামারীকে পরাজিত করার লড়াইয়ে আপাতত দু’টি টিকাকে অনুমোদন দিয়েছে তারা। একটি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার বানানো, অপরটি ভারত বায়োটেকের।
এনডিটিভি জানিয়েছে, মোদীর উদ্বোধনের পরপরই ভারতজুড়ে প্রায় ৩ হাজার টিকাদান কেন্দ্রের দরজা খুলে যাওয়ার কথা। এই প্রতিটি কেন্দ্রে দিনে ১০০ জনকে টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
রাজস্থানে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে জয়পুরের সাওয়াই মান সিং মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সুধীর ভাণ্ডারিকে দিয়ে; মধ্যপ্রদেশে যারা শুরুতেই টিকা পাবেন তাদের মধ্যে একটি হাসপাতালের নিরাপত্তা রক্ষী ও একজন পরিচারকও আছেন বলে জানিয়েছে রাজ্যটির সরকার।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন মন্তব্য করেছেন, “দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এ টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে ‘সম্ভবত কোভিড-১৯ এর শেষের শুরু’ হতে যাচ্ছে”।
তিনি সেরাম ইন্সটিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ডের ‘কোভিশিল্ড’ এবং ভারত বায়োটেকের ‘কোভ্যাক্সিন’ দুটো টিকাই মানবদেহের জন্য নিরাপদ ও করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে জানিয়ে দেশবাসীকে আশ্বস্তও করেছেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, বর্তমানে ভারত সরকারের হাতে সেরাম ইন্সটিটিউটের উৎপাদিত এক কোটি ১০ লাখ ডোজ এবং ভারত বায়োটেক উৎপাদিত ৫৫ লাখ ডোজ টিকা আছে।
নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেককে ২৮ দিনের ব্যবধানে দুই ডোজ টিকা দেওয়া হবে। প্রথম দফায় স্বাস্থ্যকর্মীসহ সম্মুখসারির যোদ্ধা তিন কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার পর পরের দফায় পাবেন আরও ২৭ কোটি মানুষ, যাদের বয়স ৫০ এর বেশি বা দুরারোগ্য ব্যাধির কারণে যারা ঝুঁকির মুখে রয়েছেন।
১ কোটি ৩০ লাখ মানুষের এ দেশের অন্তত ৩০ কোটি নাগরিককে আগামী ছয় থেকে আট মাসের মধ্যে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারত সরকার। এই বিপুল চাহিদা মেটাতে আরো একাধিক কোম্পানির টিকার পরীক্ষা ও অনুমোদন প্রক্রিয়া নিয়েও কাজ চলছে।
টিকাদান কর্মসূচির প্রথম দিন পশ্চিমবঙ্গের ২১২টি কেন্দ্র থেকে টিকা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকা। প্রথম দফায় রাজ্যটির ৬ লাখ স্বাস্থ্যকর্মীকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে।