ভারতের কেরালায় কালামাসেরির কনভেনশন সেন্টারে কয়েকদফা বিস্ফোরণে অন্তত এক নারী নিহত এবং ৪৫ জন আহত হয়েছে। রোববার সকালে কোচি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরের কনভেনশন সেন্টারে খ্রিষ্টানদের একটি ধর্মীয় প্রার্থনা অনুষ্ঠান চলার সময় পরপর বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা হলঘর। সেন্টারটিতে তিনদিন ব্যাপী জিওবাহ উইটনেস শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল, যা খ্রিস্টানদের অন্যতম পবিত্র ধর্মীয় উৎসব। খবর বিডিনিউজের।
প্রার্থনা শুরুর পর কয়েক মিনিটের মধ্যে অন্তত তিনটি বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে সমবেতদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। কনভেনশন সেন্টারের একাংশে আগুন জ্বলতে শুরু করে। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যায় দমকল কর্মীরা। সেন্টার থেকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করে তারা। আহতদের দ্রুত স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আহতদের ১৮ জন আইসিইউতে আছে। ৫ জনের অবস্থা গুরুতর। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। কী কারণে বিস্ফোরণ তা এখনও স্পষ্ট নয়। এনডিটিভি জানায়, প্রার্থনা অনুষ্ঠানে প্রায় ২ হাজার মানুষ উপস্থিত ছিল। প্রথম বিস্ফোরণটি প্রার্থনা চলার মধ্যেই ঘটে। কর্মকর্তারা বলছেন, একটি টিফিন বক্সের মধ্যে বিস্ফোরক ভরা ছিল। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা একজন সাংবাদিকদের বলেন, কনভেনশন সেন্টারে আমরা সবাই প্রার্থনায় মগ্ন ছিলাম। তখন হঠাৎই পরপর বিস্ফোরণ হয়। তিন থেকে চারটি বিস্ফোরণ হয়েছে। দৌড়ে কোনও মতে বাইরে এসে প্রাণে বেঁচেছি। আরেক প্রত্যক্ষদর্শীর জানান, প্রথম বিস্ফোরণটি হলের একেবারে মাঝখানে হয়। সেটির তীব্রতাই ছিল সবচেয়ে বেশি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিস্ফোরণ হয়। কনভেনশন সেন্টারে একাধিক বিস্ফোরণের কথা সরকারিভাবে স্বীকার করেনি কেরালা পুলিশ। নেপথ্যে জঙ্গি হামলার সম্ভাবনাকেও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তারা। গত শুক্রবার থেকে কনভেনশন সেন্টারটিতে খ্রিস্টানদের অনুষ্ঠান চলছিল। এদিন অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করার কথা ছিল। বিস্ফোরণের পর নৌসেনা ঘাঁটিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের ডেকে পাঠিয়েছে পুলিশ। জঙ্গি হামলা হয়ে থাকলে কী ধরনের বিস্ফোরক ব্যবহার হয়েছে, তা জানার চেষ্টা চলছে। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বিস্ফোরণের ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে বর্ণনা করেছেন। পরিস্থিতি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। রাজ্যের সব উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা বিস্ফোরণস্থলে যাচ্ছেন।