ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ শেষের প্রতিক্রিয়ায় একরাশ উচ্ছ্বাস নিয়ে কোচ মারুফুল হক বললেন, ভেতরের তাড়না থেকে ভারতের বিপক্ষে নিজেদের মেলে ধরতে পেরেছে বাংলাদেশ। গতকাল সোমবার সাফ অনুর্ধ্ব–২০ চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় সেমি–ফাইনালে টাইব্রেকারে ভারতকে ৪–৩ গোলে হারায় বাংলাদেশ। দুই দলের নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয়েছিল ১–১ সমতায়। ফাইনালের আগে বাংলাদেশ কোচ মারুফুল বলেছিলেন, ভারতকে হারানোর তীব্র ক্ষুধা তিনি দেখছেন দলের মধ্যে। মাঠের লড়াইয়েও তা ফুটে উঠেছে। খেলার ধারার বিপরীতে সুযোগসন্ধানী শটে দলকে এগিয়ে নিয়েছেন আসাদুল মোল্লা, গোললাইন সেভ করেছেন ডিফেন্ডার কামাচাই মারমা, চোট পেয়ে ৬৯তম মিনিটে মাঠ ছাড়ার আগ পর্যন্ত দারুণ সব সেভে দলের ত্রাতা ছিলেন গোলরক্ষক শ্রাবণ। এরপর বদলি নেমে গোল হজমের পর টাইব্রেকারে দুর্দান্ত দুই সেভে জয়ের নায়ক বনে গেছেন গোলরক্ষক আসিফ। ম্যাচ শেষের প্রতিক্রিয়ায় মারুফুল বললেন, মনের তাগিদ থেকেই পারফরম করেছে দল। অবশ্য প্রথমার্ধে এগিয়ে যাওয়ার পরও ভারতকে কোণঠাসা করতে না পারার হতাশা আড়াল করেননি তিনি। ‘এখানে আসার আগে আমাদের লক্ষ্য ছিল ফাইনাল খেলবো; যদিও আমরা গ্রুপ পর্বে শেষ ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে হেরে গিয়েছিলাম, তারপরও খেলোয়াড়দের অনুপ্রাণিত করতে পেরেছি, ছেলেদেরও ভালো করার ইচ্ছা ছিল। যেহেতু আমাদের প্রতিপক্ষ ছিল ভারত, সেহেতু তাদের একটা ইচ্ছা ছিল জেতার, তাদের মনের ভেতর যে তাড়না ছিল, সে অনুযায়ী তারা পারফরম করেছে।’ ‘গোল করার আগ পর্যন্ত আমাদের পরিকল্পনা ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তুৃআমার মনে হয়, এটা আমাদের জাতীয় সমস্যা। এক গোল করার পর, লিড পাওয়ার পর যে আরও আক্রমণাত্মক খেলা যায়, সেটা আসলে তাদের আরও শিখতে হবে।’ আগামী বুধবার শিরোপা লড়াইয়ে নেপালের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের সমীহ করলেও নিজেদের সম্ভাবনা নিয়ে দারুণ আশাবাদী মারুফুল। ‘খেলোয়াড়দের ধন্যবাদ জানাতে চাই। ভারত সবসময় আমাদের জন্য কঠিন প্রতিপক্ষ। ছেলেরা ভালো খেলেছে। ভারত পরিণত ফুটবল খেলেছে, কেননা, তারা অনেক সুযোগ তৈরি করেছে।’ ‘আমি মনে করি, ফাইনালে অবশ্যই নেপাল বেশ শক্ত প্রতিপক্ষ বাংলাদেশের জন্য। অনেক শক্তিশালী ও মেধাবী খেলোয়াড় আছে ওদের এই দলটাতে। তারপরও আমি আশাবাদী, ফাইনাল ভালো ম্যাচ হবে, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ভালো সুযোগ আছে আমাদের।’ ফাইনালের আগে প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক শ্রাবণ সেরে উঠবেন কিনা, তা নিশ্চিত নয়। তবে বাংলাদেশ কোচ শোনালেন, স্বস্তির খবর। ‘শ্রাবণ এখন ভালো হাসপাতালে আছে। সেখানে একটা ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে, এমআরআই ও এঙ–রে’র জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আমি যতটুকু খবর পেয়েছি, ওর সিরিয়াস কিছু হয়নি।’ ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ বলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের জয়ের প্রত্যাশা জানিয়েছিলেন সমর্থকরা। এ বিষয়টিও চোখে পড়েছে মারুফুলের। ‘সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আমি যেটা দেখছি, এই জেনারেশন, যেটাকে জেন–জি বলা হচ্ছে, তারা সবাই প্রত্যাশা করছে, আমরা যেন ভারতের বিপক্ষে জিতি। তাহলে তারা আরও বেশি খুশি হবে।’