ভারতীয় চালের আমদানি বাড়ার কারণে আরো কমলো চালের বাজার। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরণের চালের দাম বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) কমেছে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এক সময় গুটিকয়েক শিল্পগ্রুপ সিন্ডিকেট করে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতো। এই চক্রের সাথে দেশি মিল মালিকরাও। এখন পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। চালের বাজারে আমদানি উন্মুক্ত হওয়ায় এখন যে কেউ চাল আমদানি করতে পারছেন। ফলে এখন বন্দরগুলো দিয়ে প্রচুর পরিমাণে ভারতীয় চাল প্রবেশ করছে। এর প্রভাবে দামও কমছে।
এদিকে ভোক্তারা বলছেন, পাইকারীতে প্রতি কেজিতে চালের দাম কেজি হিসেবে সর্বোচ্চ ৪ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত কমলেও খুচরা বাজারে সেই হিসেবে খুচরা ব্যবসায়ীরা দাম কমাচ্ছেন না। নগরীর চালের আড়ত চাক্তাইয়ের চালপট্টি ও পাহাড়তলীতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে বিশেষ করে নাজিরশাইল সিদ্ধ, জিরাশাইল সিদ্ধ, মিনিকেট আতপ, মিনিকেট আতপ, কাটারীভোগ আতপ চালের দাম বস্তাপ্রতি সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
চালের আড়তদাররা জানান, বর্তমানে জিরাশাইল সিদ্ধ বস্তায় ৩০০ টাকা কমে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৬০০ টাকায়। এছাড়া মিনিকেট সিদ্ধ ১০০ টাকা কমে ২ হাজার ৮০০ টাকা, পাইজাম সিদ্ধ বস্তায় ২০০ টাকা কমে ২ হাজার ৭০০ টাকা, কাটারিভোগ সিদ্ধ (২৫ কেজি বস্তা) ২০০ টাকা কমে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭০০ টাকা, কাটারিভোগ আতপ বস্তাপ্রতি ১৫০ টাকা কমে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৯০০ টাকা, মিনিকেট আতপ ১৫০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫০ টাকা, নাজিরশাইল সিদ্ধ (২৫ কেজি বস্তা) ১০০ টাকা কমে ২ হাজার টাকা, স্বর্ণা সিদ্ধ ২৫০ টাকা কমে ২ হাজার ৪০০ টাকা, বেতী আতপ ১৫০ টাকা কমে ২ হাজার ২৫০ টাকা এবং মোটা সিদ্ধ ২৫০ টাকা গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ১৫০ টাকায়। জানতে চাইলে চট্টগ্রাম রাইচ মিলস মালিক সমিতির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, দেশের বাজারে প্রচুর পরিমাণে ভারতীয় চাল প্রবেশ করেছে। ভারতীয় চালের বাজারের কারণে দেশীয় চালের বাজার কমে গেছে। এছাড়া দেশে গরীব ও নিম্নবিত্ত লোকদের জন্য সরকারের বিভিন্ন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চলমান রয়েছে। গরীব মানুষ কম টাকায় চাল কিনতে পারছে। এর প্রভাবেও দাম কমছে। জানতে চাইলে পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম নিজাম উদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, বাজারে এখন প্রচুর পরিমাণে ভারতীয় চাল আমদানি হয়েছে। ভারতীয় চাল আমদানি বাড়ার কারণে দাম কমছে। এছাড়া দেশীয় চালেরও পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। এছাড়া আগামী দুই মাস পর কৃষকের ঘরে আমন ধান উঠবে। তখন চালের সরবরাহ আরো বাড়বে। মোট কথা হচ্ছে সরবরাহ বাড়ার কারণে চালের দাম কমছে।