বর্তমান সরকারের আমলে দুর্নীতির নজির হিসেবে ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের অর্থ লুট এবং তারপর কিছু অংশ উদ্ধারের ঘটনাটি দেখালেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আজকে দুর্নীতি ভয়াবহ। এই যে, ১১ কোটি টাকা ব্যাংকের দিনে–দুপুরে হাইজ্যাক হল। কী সাজানো নাটক! সবাই মিলে ভাগ করে বলছেন, না না ৯ কোটি টাকা উদ্ধার হয়নি, তিন কোটি উদ্ধার হয়েছে। বাকি টাকা কোথায় গেল, জবাব দেবে কে?
বৃহস্পতিবার সকালে ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের বুথে জমা দিতে যাওয়ার সময় সোয়া ১১ কোটি টাকা লুট হয়। সন্ধ্যায় লুট হওয়া সেই টাকার মধ্যে বেশিরভাগ উদ্ধারের তথ্য জানিয়েছিল গোয়েন্দা পুলিশ। কিন্তু পরদিন জানায়, লুট হওয়া টাকার মধ্যে ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে। বাকি ৭ কোটি ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। সরকার পতনের ১০ দফার যুগপৎ কর্মসূচিতে গতকাল নয়া পল্টনে মানববন্ধন কর্মসূচিতে ব্যাংকের অর্থ লুটের প্রসঙ্গটি তোলেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল। খবর বিডিনিউজের।
পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সমপ্রদায়ের উপর হামলা এবং সহিংসতার জন্য সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, সরকার অনেক রকমের চক্রান্ত শুরু করেছে আবার। পঞ্চগড়ে একটা সাম্প্রদায়িক হামলা সৃষ্টি করার জন্য তারা অনুমতি দিয়েছে, তারা সেই নীরব ভূমিকা পালন করেছে। আর সেই ঘটনার পরে ১৮৩ জন বিএনপির নেতা–কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করেছে। আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা এই মুহূর্তে তাদের মুক্তি দিতে হবে।
ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ নিয়ে করা চুক্তিকে দেশের ‘স্বার্থবিরোধী’ হিসেবে বর্ণনা করেন ফখরুল। বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে যারা কথা বলছেন, তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা প্রথম থেকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে। এই আন্দোলন দেখে আপনাদের গাত্রদাহ হয়েছে। উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করছেন, বারবার উত্তেজিত করার চেষ্টা করছেন। জনগণ আন্দোলন শুরু করেছে। এই আন্দোলনে তারা জয়ী হবে তারপরেই ঘরে ফিরে যাবে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমাদের কাছে বিকল্প পথ নাই।
আওয়ামী লীগ ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার ‘নীল–নকশা’ নিয়ে আগামী নির্বাচন করতে চাইছে বলে অভিযোগ করেন ফখরুল। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে ১৫৪ আসন ডিক্লেয়ার করেছে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচনে। ২০১৮–তে নির্বাচন করেছে আগের রাত্রিতে সমস্ত ভোট তুলে নিয়ে চলে গেছে। এখন আবার খায়েশ হয়েছে যে, তারা একচল্লিশ সাল পর্যন্ত থাকতে হবে। সেই ব্লুপ্রিন্ট নিয়ে তারা আবার ২০২৪–এ নির্বাচন করতে চায়। সেই নির্বাচন করতে চায় একই কায়দা। পরিষ্কার ভাষায় বলে দিতে চাই, বিএনপি এই সরকারের অধীনে, হাসিনা সরকারের অধীনে, এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না।
১০ দফা মেনে নিতে সরকারকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সংঘর্ষে যেতে চাই না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা যে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি, আপনারা সেটা মেনে নেন, ১০ দফা মেনে নেন। ১০ দফা দাবি মেনে অবিলম্বে পদত্যাগ করুন, সংসদ ভেঙে দিন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।