ভয় একটি সহজাত এবং শক্তিশালী আবেগ। এটি আমাদের পছন্দগুলিকে আকার দেওয়ার, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিগুলিকে প্রভাবিত করার এবং এমনকি আমাদের ব্যক্তিগত বৃদ্ধিকে বাধা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। বার্ট্রান্ড রাসেল ভয় নিয়ে বলেছেন-‘ভয়কে জয় করাই জ্ঞানের শুরু।’ ভয়কে জয় করাই হচ্ছে প্রজ্ঞার অন্বেষণের গভীর সংযোগে নিজেকে আবদ্ধ করা। এই ভয় শব্দটির সাথে আমরা সকলে জড়িত। আমাদেরকে কারণে অকারণে, এখানে সেখানে যেকোন জায়গাই এই ভয় আষ্টেপৃষ্ঠে চেপে ধরে। এর প্রভাব কাটাতে, জ্ঞানের গভীর সংযোগকে তালাশ করতে ও লক্ষ্য অর্জনে আত্মবিশ্বাসী হতে হলে এক্ষেত্রে একটু কৌশলী হয়ে ভয়কে জয় করতে হবে। ভয়কে জয় করা, আমাদের ভয়ের উৎসগুলিকে মোকাবেলা এবং চ্যালেঞ্জ করার একটি সচেতন প্রচেষ্টায় জড়িত। ব্যক্তিগত বিকাশের অনুঘটক হিসাবে অস্বস্তিকে আলিঙ্গন করে আমাদের আরামের অঞ্চলের বাইরে পা রাখার ইচ্ছার বিশেষ প্রয়োজন। অর্থাৎ ভয় দ্বারা আরোপিত সীমাবদ্ধতার শিকল ভেঙে আমরা নিজেদেরকে নতুন সম্ভাবনা এবং সুযোগের জন্য উন্মুক্ত করতে পারি।
জ্ঞান, প্রায়শই প্রজ্ঞা এবং অভিজ্ঞতার একীকরণ হিসাবে বর্ণনা করা হয়। ভয়কে জয় করা হলে যেকোনও লক্ষ্য একটি অর্জনযোগ্য লক্ষ্য হয়ে ওঠে। অর্থাৎ যখন আমরা আমাদের ভয়ের মুখোমুখি হই, তখন আমরা আমাদের ক্ষমতা এবং স্থিতিস্থাপকতার মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি লাভ করি। ঠিক তখনই জ্ঞানের উদ্ভব ঘটে এবং বুঝে আসে যে ভয়, যদিও একটি স্বাভাবিক আবেগ, এটি দ্বারা আমাদের জীবনের গতিপথকে নির্দেশ করা একেবারে উচিত নয়। অর্থাৎ ভয়কে জয় করতে সে সকল অভিজ্ঞতাকে পুরস্কার হিসেবে গ্রহণ করা উচিৎ। ফলে পরবর্তী যেকোন ভয়কে সহজে কাটানো যায়। এছাড়াও প্রজ্ঞা প্রায়শই দুর্বলতা থেকে জন্ম নেয়। তাই ভয়কে জয় করতে একটি দুর্বলতার পরিবর্তে দুর্বলতাকে শক্তি হিসাবে গ্রহণ করে অনিশ্চয়তা এবং সম্ভাব্য অস্বস্তি থেকে নিজেদেরকে বের করে আনতে হবে। অন্যদিকে এসকল কৌশলের পাশাপাশি এইও মনে রাখা যে ভয়কে জয় করা মানে এটিকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করা নয় বরং এর স্রোতকে নেভিগেট করতে শেখা। ভারসাম্য বজায় রেখে আমাদের ভয়কে স্বীকার করার এবং মোকাবেলা করার সাহসের মধ্যেই প্রজ্ঞা বা জ্ঞান নিহিত। পরিশেষে স্থিতিস্থাপকতা, অভিযোজনযোগ্যতা এবং একটি পজিটিভ দৃষ্টি ও সুন্দর মানসিকতা গড়ে তোলা সকলের প্রয়োজন। যার ফলে যেকোন চ্যালেঞ্জকে ব্যক্তি তার বৃদ্ধির সুযোগ হিসাবে দেখবে; হোক সেটি ভয় কিংবা যেকোন ভয়ংকর বাধা।