নগরীর খুলশী থানাধীন একটি হাউজিং সোসাইটিতে নির্মাণাধীন ভবন মালিককে খুনের ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন ওই ভবনের দারোয়ানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীর রেয়াজউদ্দিন বাজার থেকে মো. হাসান (৪২) নামের ওই দারোয়ানকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন খুলশী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আফতাব হোসাইন।
গত সোমবার ভোর রাতে খুলশী থানার জালালাবাদ জমির হাউজিং এলাকার একটি ভবনের পাশ থেকে নিজাম পাশা নামের ৬৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন ভবনের দারোয়ান হাছান। বিডিনিউজ
পুলিশ কর্মকর্তা আফতাব বলেন, “নিজাম পাশাকে খুন করে মরদেহটি ময়লা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল। নিজাম ওই ভবনের মালিক। প্রতি সপ্তাহে তিনি ভবনের কাজ দেখতে এবং শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে সেখানে যেতেন। রবিবারও গিয়েছিলেন।”
এ ঘটনায় নিজাম পাশার স্ত্রী সেলিনা ইয়াসমিন বাদী হয়ে ভবনের দারোয়ান মো. হাসানকে আসামি করে মামলা করেছেন।
মামলায় সেলিনা অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিন প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশে এসে ২০১৯ সালে জমির হাউজিং সোসাইটির ভিআইপি কাঁচা সড়কে নিজের মালিকানাধীন জায়গায় সাত তলা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন নিজাম।
এজাহারে খুনের প্রেক্ষাপট হিসেবে বাদী উল্লেখ করেন, “ভবনের নির্মাণ কাজ শুরুর সময় সেখানে হাসানকে দারোয়ানের দায়িত্ব দেওয়া হয় কিন্তু সে নির্মাণ কাজে তার পছন্দের লোকজনকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য নিজাম পাশাকে বিভিন্ন সময়ে জোরাজুরি করতে থাকে। এ নিয়ে মনোমালিন্য হওয়ায় সম্প্রতি নিজাম পাশা হাছানকে কাজে রাখবেন না বলে জানিয়ে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয় হাসান।”
মামলায় বলা হয়, রবিবার ভোরে নিজ বাড়ি ফটিকছড়ি থেকে নিজাম পাশা শহরে আসেন নির্মাণাধীন ভবনের কাজ দেখতে কিন্তু রাত ১০টা ৩৯ মিনিটে দারোয়ান হাসান ভবন মালিকের মোবাইল নম্বর থেকে তার মেয়েকে (নিজামের মেয়ে) ফোন করে জানায় নিজাম ভবনে আসেননি। লোক দিয়ে নির্মাণ সামগ্রী পাঠিয়েছেন। কিন্তু মোবাইল ফোন তার কাছে কেন সে প্রশ্ন করায় উত্তরে হাছান জানিয়েছে সেটিও লোক মারফত তার কাছে পাঠিয়েছে এবং তাকে ২০ হাজার টাকা পাঠাতে বলে।
হাসানের অসংলগ্ন কথাবার্তায় সন্দেহ জাগে নিহত নিজামের মেয়ের। এরপর তার স্ত্রী ও স্বজনরা রাতেই ফটিকছড়ি থেকে চট্টগ্রামে রওনা হয়ে রাত দুইটার দিকে নির্মাণাধীন ভবনে পৌঁছান। বিভিন্ন দিকে খোঁজাখুঁজির পর নিজামকে না পেয়ে রাত সাড়ে তিনটার দিকে তারা দ্বারস্ত হন পুলিশের।
পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে আশেপাশে খোঁজাখুঁজির পর নিজামের নির্মাণাধীন ভবন সংলগ্ন একটি স্থানে আবর্জনার স্তূপের ভেতর থেকে নিজাম পাশার হাত পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আরাফাতুল ইসলাম জানান, এ খুনের মামলার অগ্রগতি নিয়ে বুধবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করা হবে।