ইসলামের সোনালি যুগের অবসানের পর বিশ্বব্যাপী মাথাচাড়া দিয়ে উঠে নানা ভ্রান্তমতবাদ। নীতি–নৈতিকতা ও ধর্মীয় ক্ষেত্রে মুসলিম সমাজে দেখা দেয় বিভ্রান্তি, ধর্মীয় ক্ষেত্রে উদাসীনতা ও নির্লিপ্ততা, আর শাসকদের মধ্যে বেড়ে যায় স্বেচ্ছাচারিতা ও ভোগ বিলাসিতা। এমন ক্রান্তিকালে মুসলমানদের দিক নির্দেশনা প্রদানে অপরিহার্য হয়ে উঠে একজন পথপদর্শকের। এমন যুগসন্ধিক্ষণে দিকভ্রান্ত মানুষের মাঝে আশার আলো নিয়ে বিশ্বের বুকে আবির্ভূত হন এক জ্যোতির্ময় শিশু। যার মধ্যে মুসলমানদেরকে অতি গৌরবান্বিত আসনে সমাসীন করার যাবতীয় গুণাবলী ও ক্ষমতা আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন ও তাঁর প্রিয় হাবীবের পক্ষ হতে গচ্ছিত হয়েছে। তিনি মাহবুবে সোবহানী, কুতুবে রাব্বানী শেখ সুলতান সৈয়্যদ আবদুল কাদের জিলানী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি। তাঁর শুভাগমনে মৃতপ্রায় ইসলাম পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠে। এজন্য ‘মুহিউদ্দীন’ তাঁর অন্যতম উপাধি হিসেবে শোভিত হয়ে আছে। তিনি পিতৃকুল ও মাতৃকুল উভয় দিক দিয়ে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম’র পবিত্র বংশধারার আওলাদ। তিনি সত্যিকার প্রতিনিধি হিসেবে দ্বীন রক্ষার সংগ্রামে নিজেকে বিলিয়ে দেন। আর পবিত্র কোরআন–হাদীসের সঠিক ব্যাখ্যা দানের মাধ্যমে ইসলামের প্রকৃতরূপ জনসম্মুখে তুলে ধরেন। ভ্রান্ত মতবাদের অসারতা প্রমাণ করে অধঃপতিত বিভ্রান্ত মানব সমাজকে তিনি ইসলামের আদর্শে অনুপ্রাণিত করেন। মুসলমানদের সঠিক পথের দিশা দানের লক্ষ্যে এ আধ্যাত্মিক সাধক প্রবর্তন করেন এক বরকতময় সিলসিলাহ্, যা সিলসিলাহ্–এ আলিয়া কাদেরিয়া নামে সুবিদিত। তিনি এ জগৎ থেকে পর্দা করার পর তাঁর মনোনীত খলিফাগণ এ সিলসিলার কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেন। প্রধান চার তরিকার মধ্যে এ তরিকার অনুসারীর সংখ্যাই বেশি। বিশেষত পাক–ভারত উপমহাদেশে কাদেরিয়া তরিকার অনুসারী সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশে এ সিলসিলার প্রচার–প্রসারে যাঁদের ভূমিকা অগ্রগণ্য তাঁরা হলেন আওলাদে রাসুল, হাফেজ ক্বারী আল্লামা সৈয়্যদ আহমদ শাহ্ সিরিকোটি (রহ.) এবং তাঁর সুযোগ্য সন্তান ও খলিফা হাফেজ ক্বারী আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ্ (রহ.) এবং তাঁর খেলাফতপ্রাপ্ত শাহাজাদাদ্বয় আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ (মা.জি.আ) ও পীর–এ বাঙাল আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ (মা.জি.আ)। হুজুর গাউসে পাকের শিক্ষা ও আদর্শে অনুপ্রাণিত হলে বর্তমান মুসলমানদের দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জগতে প্রভূত কল্যাণ সাধিত হবে।
গতকাল শুক্রবার আনজুমান–এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় ষোলশহরস্থ আলমগীর খানকা–এ কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়ায় পবিত্র ফাতেহা–ই–ইয়াজদাহুম, গেয়ারভী শরীফ ও মা ছাহেবান (রহ.)-এর ফাতেহা শরীফ অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাদে আসর হতে এশা পর্যন্ত চলা এ পবিত্র অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ট্রাস্টের সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। আরও বক্তব্য দেন, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ হাফেজ কাজী আবদুল আলীম রিজভী, উপাধ্যক্ষ এটিএম লিয়াকত আলী। উপস্থাপনা করেন মাওলানা মুহাম্মদ জসিম উদ্দীন।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ট্রাস্টের এডিশনাল সেক্রেটারি মোহাম্মদ সামশুদ্দীন, জয়েন্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ সিরাজুল হক, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি এস এম গিয়াস উদ্দীন (শাকের), ফাইন্যান্স সেক্রেটারি মোহাম্মদ কমর উদ্দীন (সবুর), প্রেস ন্ড পাবলিকেশন সেক্রেটারি মোহাম্মদ গোলাম মহিউদ্দীন, কেবিনেট সদস্য পেয়ার মোহাম্মদ, আনজুমান সদস্য নুরুল আমিন, মাহবুবুল আলম, সাদেক হোসেন পাপ্পু, মাহবুব ছাফা, মাহমুদ নেওয়াজ, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ–বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ, হাজারো পীর ভাই–বোন। মিলাদ–ক্বিয়ামের পর বাংলাদেশ ও মুসলিম উম্মাহর মঙ্গল কামনায় মোনাজাত করেন অধ্যক্ষ হাফেজ কাজী আবদুল আলীম রিজভী। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।