ব্রাদার্সকে উড়িয়ে হ্যাটট্রিক শিরোপার পথে আরো এগিয়ে গেল আবাহনী

ক্রীড়া প্রতিবেদক | রবিবার , ৫ মে, ২০২৪ at ১০:৫৬ পূর্বাহ্ণ

প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের নবম রাউন্ডে নামার আগে দু’দল ছিল একই সমান্তরালে। যে দল জিতবে তারাই এগিয়ে যাবে শিরোপার পথে। হিসেবের দিক থেকে এগিয়ে ছিল ব্রাদার্স ইউনিয়ন। কারণ দু’দল একটি করে ম্যাচ হারলেও এই ম্যাচের পরে ব্রাদার্সের সামনে ছিল অপেক্ষাকৃত কম শক্তির প্রতিপক্ষ। কিন্তু সুযোগটা কাজে লাগাতে পারল না ব্রাদার্স। বলা যায় সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি তেমনটি নয়। বলতে গেলে আবাহনী তাদেরকে কোন সুযোগই দেয়নি। পেশাদারিত্বের চরম পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে আবাহনী শুধু ম্যাচই জিতেনি হ্যাটট্রিক শিরোপার পথে এগিয়ে গেল আরো এক ধাপ। গতকাল এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এবারের লিগের অন্যতম বড় ম্যাচে আবাহনীর সামনে দাঁড়াতেই পারল না ব্রাদার্স। কমলা জার্সিধারীরা হেরেছে ১১২ রানের বিশাল ব্যবধানে। আর আকাশীনীল জার্সিধারীরা নিজেদের এগিয়ে রাখলো আরো একধাপ। লিগে তারা এখন এককভাবে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে। নবম রাউন্ড শেষে আবাহনীর সংগ্রহ ২৪ পয়েন্ট। অপরদিকে সমান ম্যাচে ব্রাদার্সের সংগ্রহ ২১ পয়েন্ট। রান রেটেও অন্যসব দলের চাইতে যোজন যোজন এগিয়ে আবাহনী। কি ব্যাটিং আর বোলিং এবং ফিল্ডিং, আবাহনী ছিল দুর্দান্ত। দারুণ টিম পারফরম্যান্সে আরো একটি জয় নিয়ে হ্যাটট্রিক শিরোপার পথে ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে আবাহনী।

আগের রাতের বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ে শুরু করা যায়নি ম্যাচটি। ফলে ম্যাচের আয়ু কমে দাঁড়ায় ৪০ ওভারে। টসে জিতে ব্যাট করতে নামতে ভুল করেনি আবাহনী। দুই ওপেনার তাজুল এবং সানজু ৪৬ রান যোগ করেন। ২৭ রান করা সানজুকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গেন আরমান। দ্বিতীয় উইকেটে আজাদ এবং তাজুল মিলে যোগ করেন ৫৩ রান। ৪৪ রান করা তাজুলকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গেন শাখাওয়াত। তৃতীয় উইকেটে শোয়াইব এবং আজাদের সংযোজন ৪৩ রান। এজুটি ভাঙ্গে আজাদের বিদায়ে। ফিরে আসার আগে ৪৬ বলে ৬০ রান করেন আজাদ। মেরেছেন ৬টি চার এবং ৩টি ছক্কা। শোয়াইব এবং মোমিনুলের চতুর্থ উইকেট জুটির ৬২ রান বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখাচ্ছিল আবাহনীকে। কিন্তু ২৯ রান করা মোমিনুলের বিদায়ের পর শেষের দিকের ব্যাটাররা আর সেভাবে নিজেদের দায়িত্বটা পালন করতে পারেনি। ফলে তিনশ রানের স্বপ্ন দেখলেও শেষ পর্যন্ত ২৬৪ রানে থামতে হয় আবাহনীকে। তাও ৪ বল বাকি থাকতে। আগের দিন ঢাকা আবাহনীর হয়ে সেঞ্চুরি করা মোসদ্দেক সৈকত ফিরেন ১ রান করে। শোয়েবের ৪৪ বলে ৪৩, আবু বক্কর জীবনের ১৮ বলে ২৮ আর সাইদুল ইসলাম ইমরানের ১০ বলে ১৭ রান দলের স্কোর আড়াইশ পার করতে সহায়তা করে। ব্রাদার্স ইউনিয়নের পক্ষে ৩টি উইকেট নিয়েছেন আরমান হোসেন। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন কামরুল এবং নাকিব।

২৬৫ রানের লক্ষ্য। সে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দারুণ শুরু করেছিল ব্রাদার্সের দুই ওপেনার সাদিকুর এবং কপিল। দু’জন ৭ ওভারে ৫৩ রান তুলে বিচ্ছিন্ন হন। ২০ বলে ৩৪ রান করে ফিরেন কপিল। শামসুদ্দিন বাপ্পা পারেননি রানের খাতা খুলতে। তৃতীয় উইকেটে রাকিবুল এবং সাদিকুর ৪০ রানের বেশি যোগ করতে পারেনি। পয়েন্টে মোমিনুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন টানা দুই সেঞ্চুরি করা রাকিবুল। ১৮ বলে ১৬ রান করেন রাকিবুল। এরপর একরকম তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে পড়তে থাকে ব্রাদার্সের ব্যাটিং। বিশেষ করে আবাহনীর দুই স্পিনার ওবায়দুল্লাহ এবং শোয়েবের ঘুর্ণির মুখে পড়ে একের পর এক ব্যাটার ফিরতে থাকে ড্রেসিং রুমে। ইনিংসের গোড়া পত্তন করতে নামা সাদিকুর আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করলেও এই ম্যাচে ৩ রানের জন্য হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিতে পারেননি। আর সাদিকুরের ৪৭ রানের ইনিংসটি ব্রাদার্সের ব্যাটারদের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ। শেষ পর্যন্ত ২৮.৩ ওভারে ১৫২ রানে অল আউট হয় ব্রাদার্স। আর তাতেই ১১২ রানের বিশাল পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়। সে সাথে শিরোপা জয়ের পথে বড় একটি ধাক্কাও খেতে হয় ব্রাদার্সকে। দলটির ছয় জন ব্যাটার আউট হয়েছেন দুই অংকের ঘরে যাওয়ার আগে। আবাহনীর পক্ষে ৪০ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ব্রাদার্সকে ধ্বসিয়ে দিয়েছেন ওবায়দুল্লাহ। শোয়েব নিয়েছেন ৩ উইকেট।

আজকের খেলা: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ক্রীড়া সমিতি বনাম মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া চক্র (লাল)

পূর্ববর্তী নিবন্ধপটিয়া উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার বার্ষিক সভা
পরবর্তী নিবন্ধতানজিদ-হৃদয়ের প্রশংসায় বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচ