নগরীর বাকলিয়া থানাধীন রসুলবাগ আবাসিক এলাকায় মো. আল মামুন নামে এক গার্মেন্টস মেশিনারিজ ব্যবসায়ীকে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক কর্মীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে বাকলিয়া থানা পুলিশ। গতকাল শুক্রবার বাকলিয়া থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. মামুন (২৩), আব্দুল্লাহ ওয়াহিদ জিহান (২২), মো. রমজান (৩৫) ও মো. আরিফ (২১)। এদের মধ্যে মো. মামুন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী। গ্রেপ্তার মামুন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনায় তাকে ২০১৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, গার্মেন্টস মেশিনারিজ ব্যবসায়ীকে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় চক্রের মূলহোতা মো. মামুন। মামুন ইয়াবা সেবনের পাশাপাশি ব্যবসাতেও জড়িত। ইয়াবা সেবনের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে মামুনসহ তার সহযোগীরা। বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন আজাদীকে বলেন, মো. আল মামুন নামে এক গার্মেন্টস মেশিনারিজ ব্যবসায়ীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তাদের আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রোববার রিমান্ড শুনানি হবে।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে গার্মেন্টস মেশিনারিজ ব্যবসায়ী মো. আল মামুনকে ফোন করে কিছু গার্মেন্টস মেশিনারিজ বিক্রি করতে চায় এ চক্রের একজন সদস্য। মেশিনারিজ আগে দেখতে চাইলে আল মামুনকে রসুলবাগ আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের ১ নম্বর রোডের ১৮৭ নম্বর ভবনের একটি বাসায় নিয়ে যায় তারা। সেখানে গেলে ব্যবসায়ী মো. আল মামুনকে রুমে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয় তারা। ব্যবসায়ী মো. আল মামুনকে মারধর করে তার কাছে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মারধরের এক পর্যায়ে ব্যবসায়ী মো. আল মামুন তার পকেটে থাকা ১৫ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল অপহরণকারীদের দিয়ে দেন। আরও টাকার জন্য মারধর করলে এক বন্ধুর কাছ থেকে বিকাশে ১০ হাজার টাকা অপহরণকারীদের একজনের কাছে পাঠান। এক পর্যায়ে ব্যবসায়ী মো. আল মামুনের সামনে ইয়াবা ও ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাম রেখে ছবি তুলে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তরের ভয় দেখায় তারা।
জিম্মি দশা থেকে কৌশলে বেরিয়ে এসে পথচারী ও স্থানীয়দের সহায়তায় ৯৯৯ এ কল করে পুলিশকে বিষয়টি জানান আল মামুন। ওসি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বলেন, অভিযোগ পেয়ে ওই বাসায় তল্লাশি চালিয়ে ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। পরে অভিযুক্ত আসামিদের শনাক্ত করে বাকলিয়া থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার মো. মামুন ওই বাসা ভাড়া নিয়ে সেখানে নানা অপকর্ম করত। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও তথ্য বেরিয়ে আসবে।