নগরীর চকবাজারের কেবি আমান আলী রোড এলাকায় মা ও মায়ের প্রেমিকের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন চার বছর বয়সী এক শিশু।
প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরেই বৈদ্যুতিক তার দিয়ে তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনায় আজ সোমবার মহানগর হাকিম মেহনাজ রহমানের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ওই শিশু জবানবন্দি দিয়েছেন।
এর আগে চকবাজার থানা পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার এবং ঘটনার সাথে জড়িত মা ও মায়ের প্রেমিককে গ্রেপ্তার করে আদালতের কাছে উপস্থাপন করেন।
বিষয়টি আজাদীকে নিশ্চিত করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও চকবাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কাওসার হামিদ।
তিনি বলেন, জাকির নামের একজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে গত সোমবার সন্ধার পর কেবি আমান আলী রোডে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। একপর্যায়ে শিশুটিকে একটি টিন শেড বাসা থেকে উদ্ধার করে আমাদের হেফাজতে নেই এবং মা জান্নাত আরা বেগম ও মায়ের প্রেমিক সাদিকুজ্জামান তুহিনকে আটক করি।
এ ঘটনায় শিশুটির পিতা রফিকুল হাসান উক্ত দুজনের বিরুদ্ধে শিশু আইনে একটি মামলা করেছেন।
রফিকুল হাসান নগরীর টেরিবাজার এলাকায় বসবাস করেন এবং সেখানের একটি টেইলারে কাজ করেন। মামলার এজহারে বলা হয়, নির্যাতনের শিকার শিশু মায়ের সাথে সাতকানিয়ার নানার বাড়ীতে থাকতেন। সেখান থেকে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চার বছর বয়সী উক্ত শিশুকে নিয়ে প্রেমিক সাদিকুজ্জামান তুহিনের কাছে চলে যায় মা জান্নাত আরা বেগম। নানা জায়গায় খুঁজাখুঁজি করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
আদালত সূত্র জানায়, প্রেমিকের সাথে পালিয়ে কেবি আমান আলী রোডের উক্ত টিন শেড বাসায় বসবাস শুরু করেন শিশুটির মা। সেখানেই শিশুটিকে বৈদ্যুতিক তার দিয়ে প্রায় প্রতিদিন নির্যাতন করা হয়। কান্না করলে মুখে কাপড় ঠুকে দেয়ার মতো অমানবিক কাজ করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ৩১ ডিসেম্বর থেকে গত ৪ এপ্রিল পর্যন্ত (তিন মাস ১০ দিন) শিশুটির উপর চলে নির্যাতন। মায়ের সহযোগিতায় মায়ের প্রেমিক শিশুটিকে নির্যাতন করেন। মায়ের সাথে ঘুমাতে চাইলে সে সুযোগও দেয়া হতো না। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়ে কাল মঙ্গলবার আদালতের কাছে আবেদন করা হবে বলেও জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।