বাংলাদেশের রেলপথে নতুন যুগের সূচনা করে প্রথম বৈদ্যুতিক ট্রেন পরীক্ষামূলকভাবে চালিয়ে দেখানো হয়েছে। প্রথম মেট্রোরেল প্রকল্পের জন্য জাপান থেকে প্রথম সেটের যে ছয়টি কোচ আনা হয়েছে, সেগুলোকে নিয়ে উত্তরার দিয়াবাড়ি ডিপোতে এই প্রদর্শনী হয়। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটের সময় মেট্রোরেলের ডিপোর ‘আনলোডিং এরিয়ায়’ ধীর গতিতে বৈদ্যুতিক এই ট্রেন চালিয়ে দেখানো হয়। জাপান ও বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমকর্মীরা সেখানে ছিলেন। এর আগে ২৩ এপ্রিল প্রকল্প এলাকার পাশের জেটি থেকে ডিপোতে আনা হয় এই রেল কোচগুলো। ডিপোর হল রুমে মেট্রোরেলের প্রথম সেটের প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি। বক্তব্য দেন জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) আবাসিক প্রতিনিধি ইউহো হায়াকাওয়া, বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক ও প্রকল্প পরিচালক আফতাব উদ্দিন তালুকদার।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৬৪ শতাংশের মত। আর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি প্রায় ৮৫ শতাংশ। আর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের পূর্তকাজের অগ্রগতি প্রায় ৬০ শতাংশ এবং ইলেক্ট্রিক্যাল মেকানিক্যাল সিস্টেম ও রোলিং স্টোন ও ডিপোর ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ কাজের সমন্বিত অগ্রগতি প্রায় ৫৫ শতাংশ। মন্ত্রী জানান, ২০২১ সালের মধ্যে ভায়াডাক্টের ওপরে মূল রেলপথে বৈদ্যুতিক ট্রেনের ‘পারফর্ম্যান্স টেস্ট’ শুরু করা হবে। এরপর ‘ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট’ করা হবে। এরপর ট্রেনের ‘ট্রায়াল রান’ শুরু হবে।
অনুষ্ঠানে জাইকার আবাসিক প্রতিনিধি ইউহো হায়াকাওয়া বলেন, এই প্রকল্প বাংলাদেশ এবং জাপানের দ্বিপক্ষীয় সহযোগতার একটি নমুনা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ডিএমটিসিএল এবং জাইকা দুই পক্ষই মহামারীর মধ্যেও আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এটি ঢাকা শহরের গণপরিবহনের চেহারা পাল্টে দেবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত বৈদ্যুতিক এই ট্রেন চালু হলে এর সুফল ভোগ করবে এই রুটের বিপুল কর্মজীবী মানুষ। জাপানি প্রযুক্তিতে তৈরি হওয়া এই পরিবহন ব্যবস্থা নিরাপদ, জ্বালানীসাশ্রয়ী ও পরিবেশ বান্ধব বলেও জানান তিনি।
এই রেলের ছয় কোচের প্রতিটি সেট একসঙ্গে আগে ভাড়া পরিশোধ সিস্টেমে এক হাজার ৭০০ যাত্রী পরিবহন করবে।