নগরীর ডবলমুরিং এলাকায় ফুফাতো বোনের বান্ধবীর বাসায় ধর্ষণের শিকার হয়েছে এক কিশোরী (১৫)। এ ঘটনায় ওই বান্ধবী ও তার স্বামীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে মূল অভিযুক্ত চান মিয়া চান্দু এখনো পলাতক রয়েছে। গত রোববার রাতে ডবলমুরিং থানাধীন সুপারিওয়ালা পাড়ায় এই ঘটনা ঘটে। গত ২৪ সেপ্টেম্বর নোয়াখালী থেকে নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় ফুফুর বাসায় বেড়াতে আসে ওই কিশোরী। সে নোয়াখালীর একটি স্কুলের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী।
ডবলমুরিং থানার ওসি সদীপ কুমার দাশ আজাদীকে জানান, সুপারিওয়ালা পাড়ায় এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এরা হলো– ভুক্তভোগী কিশোরীর ফুফাতো বোনের বান্ধবী মোছাম্মৎ নুরী (২০), তার স্বামী অন্তর হোসেন (২৪) এবং চান্দু মিয়ার কর্মচারী রাজিব হোসেন (২০)। এ ঘটনায় মূল অভিযুক্ত চান মিয়া প্রকাশ চান্দুকে (৩৫) গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গতকাল সোমবার ভুক্তভোগী কিশোরীর মা জোসনা আরা বেগম বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে ওসি জানান, পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার মোছাম্মৎ নুরী কিশোরীর ফুফাতো বোন উম্মে হানি স্মৃতির বান্ধবী। রোববার বিকালে উম্মে হানি তার মামাতো বোনকে (ভিকটিম) নিয়ে আগ্রাবাদে তার অপর মামার বাসায় বেড়াতে যাচ্ছিল। পথে সদ্য বিবাহিত নুরীর সাথে তাদের দেখা হয়। তখন নুরী তাদেরকে তার বাসায় যাওয়ার অনুরোধ করে। এসময় উম্মে হানি রাজি না হলেও নুরীর জোরাজোরিতে পরে যেতে রাজি হয়। পুলিশ জানায়, তাদেরকে নুরী তার বাসায় না নিয়ে অন্য আরেকটি বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকে অবস্থান করছিল চান মিয়া চান্দু, নুরীর স্বামী অন্তর হোসেন ও রাজীব হোসেন। এ সময় ভুক্তভোগী কিশোরী তাদের কোথায় আনা হয়েছে জানতে চাইলে নুরী জানায়, এটি তার স্বামীর বন্ধুর বাসা। এক পর্যায়ে প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে তার স্বামীর বন্ধু চান মিয়া চান্দু একটি কক্ষে নিয়ে গিয়ে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত অন্যান্য আসামিরা চান্দুকে সহযোগিতা করেছিল বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
ধর্ষণের পর ওইদিন রাত সাড়ে ৯টায় ওই কিশোরীকে তার ফুফুর বাসায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। পুলিশ জানায়, এ সময় ভুক্তভোগী কিশোরীর চেইন ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয় অভিযুক্ত আসামিরা। কিশোরীর মা জোসনা বেগম জানান, বর্তমানে তার মেয়ে চমেক হাসপাতালের ওসিসি ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছে।
নগরীর ডবলমুরিং থানাধীন দেওয়ানহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই নূর ইসলাম আজাদীকে বলেন, চান মিয়া চান্দু এলাকায় হিসেবে পরিচিত। তার নামে বিষ্ফোরক ও মাদকসহ মোট ৪টি মামলা রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এসআই নূর ইসলাম বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের পর গতকাল সোমবার বিকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, বন্দর থানাধীন ফকিরহাট এলাকার মৃত মো. বশিরের মেয়ে মোছামৎ নুরী। তার স্বামী অন্তর হোসেন কুমিল্লা দেবিদ্বার থানার মৃত মো. মালেকের ছেলে। রাজীব কুমিল্লা দাউদকান্দি উপজেলার কামাল হোসেনের ছেলে। অন্যদিকে অভিযুক্ত ধর্ষক চান মিয়া চান্দু সুপারিওয়ালা পাড়া বাদশা সওদাগর বাড়ির মৃত আলী আজগরের ছেলে।