নগরীর নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি এলাকায় নকশা বহির্ভূত ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। একটি বেইজমেন্টসহ দশতলা ভবনের অনুমোদন নেওয়া হলেও নির্মাণ করা হয়নি বেইসমেন্ট। এছাড়া ১১ তলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির ৪ নম্বর সড়কের ১ নং প্লটে নির্মিত হয়েছে ‘নিজালয়’ নামে ওই ভবন। বাড়িটির কার পার্কিংয়ে অফিস বানিয়ে একটি বেসরকারি ব্যাংকের নিকট ভাড়া দেওয়া হয়।
ফ্ল্যাট মালিকদের অভিযোগ, ভবনটিতে অননুমোদিতভাবে সুইমিং পুলসহ ৩৪শ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট নির্মাণ করে তাতে ডেভেলপার সৈয়দ আলতাফ হোসেন আলী পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। সিডিএ থেকে দফায় দফায় অননুমোদিত অংশ অপসারণ করতে বলা হলেও তিনি কালক্ষেপণ করছেন এবং ভবনের ফ্ল্যাট মালিকদের নানাভাবে হয়রানি করছেন।
জানা যায়, নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির ৪ নম্বর সড়কের এক নম্বর প্লটে আবাসিক ভবন নির্মাণের জন্য প্লট মালিকের সাথে আমমোক্তারনামামূলে চুক্তিবদ্ধ হন মেসার্স সৈয়দ প্রপার্টিজ লিমিটেডের পক্ষে সৈয়দ আলতাফ হোসেন আলী। তিনি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ থেকে একটি বেইসমেন্টসহ ১০ তলা ভবন নির্মাণের অনুমতি লাভ করেন। কিন্তু তিনি বেইসমেন্ট নির্মাণ না করে ১১ তলা একটি ভবন নির্মাণ করেন।
ভবনটি নির্মাণ করার সময় একতলা বেইসমেন্টসহ ১০ তলার নকশা এবং ডেভেলপারের অংশের ৩৩টি ফ্ল্যাট বিভিন্নজনের কাছে বিক্রি করে দেন। প্রত্যেক ফ্ল্যাট মালিক নিজেদের নামে নামজারী করে নিয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী উক্ত ভবনে ডেভেলপারের আর কোনো অংশ নেই। অথচ ডেভেলপার সৈয়দ আলতাফ হোসেন ১০ তলার উপরে ১১ তলায় অনুমোদন ছাড়া ৩৪শ বর্গফুটের ফ্ল্যাট নির্মাণ করেন। নির্মাণ করেন সুইমিং পুলও। সিডিএর বিধিবিধান না মেনে তিনি ভবনটির অননুমোদিত অংশে পরিবার নিয়ে অবৈধভাবে বসবাস করছেন বলে ফ্ল্যাট ওনার্সদের পক্ষ থেকে সিডিএতে অভিযোগ করা হয়। ভবনটির ৮০৩–এর মালিক শৈলী হাই ২০০৭ সালের ১৪ জুন অভিযোগ করলে সিডিএ সৈয়দ আলতাফ হোসেনকে প্ল্যান বহির্ভূত অংশ অপসারণের নির্দেশ দেয়। কিন্তু সৈয়দ আলতাফ হোসেন সিডিএতে নিজের দোষ স্বীকার করে প্ল্যান পরিবর্তনের আবেদন করেন। কিন্তু নিয়ম বহির্ভূত হওয়ায় সিডিএ সেই আবেদন নাকচ করে।
ফ্ল্যাট মালিকরা অভিযোগ করেন, অননুমোদিত অংশ অপসারণে সিডিএর নির্দেশ এবং প্ল্যান সংশোধনের আবেদন নাকচ করলেও সৈয়দ আলতাফ হোসেন আলী আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তির সহায়তায় বহাল তবিয়তে অবস্থান করছেন।
ফ্ল্যাট মালিকরা বলেন, নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি নগরীর একটি অভিজাত এবং পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা। এমন একটি স্থানে সিডিএর প্রচলিত নিয়ম কানুন না মানা দুঃখজনক। তারা অবিলম্বে ভবনটির অননুমোদিত অংশ অপসারণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সিডিএর প্রতি আহ্বান জানান।
এ ব্যাপারে সৈয়দ আলতাফ হোসেন আলী বলেন, এলাকায় পানি ওঠে, এজন্য বেইসমেন্ট করিনি। তবে উপরে ১১ তলা করা ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি। তিনি বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি না করার জন্য অনুরোধ জানান।