বৃষ্টির দাপট আর ব্যাটারদের ব্যর্থতায় হার বাংলাদেশের

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার , ৬ জুলাই, ২০২৩ at ৫:৫১ পূর্বাহ্ণ

টেস্ট ম্যাচে রেকর্ড গড়া জয়টা অনুপ্রেরণা হতে পারল না বাংলাদেশের জন্য। উল্টো গত বছর যে জয়টা পেয়েছিল আফগানিস্তান এই মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে সেটাই যেন অব্যাহত রাখল রশিদনবীরা। ফলে টেস্ট ম্যাচে হারের ক্ষত শুকিয়ে ওয়ানডে সিরিজ শুরু করল আফগানরা জয় দিয়ে। বৃষ্টির সাথে লুকোচুরি খেলতে থাকা ম্যাচে আফগানিস্তান ডাকওয়ার্থ/ লুইস পদ্ধতিতে বাংলাদেশকে হারিয়েছে ১৭ রানে। ফলে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে এগিয়ে গেল আফগানরা। বাংলাদেশের ব্যাটারদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিং, আফগান বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং, সে সাথে বারবার বৃষ্টির বাগড়া সব মিলিয়ে দিনটা যেন ছিল আফগানদের। কোরবানের ঈদের আগে টেস্ট ম্যাচে দারুণ জয় পাওয়া বাংলাদেশ ওয়ানডে সিরিজে এসে হোঁচট খেল। ফলে হার দিয়ে সিরিজ শুরু করতে হলো টাইগারদের।

বাংলাদেশ ১৬৯ রান করলেও ব্যাটিংয়ে বেশি উইকেট হারিয়ে ফেলায় ডাক ওয়ার্থ/ লুইস পদ্ধতিতে আফগানিস্তানের লক্ষ্য দাড়ায় ১৬৪ রান। আফগানরা ২১.৪ ওভারে ২ উইকেটে ৮৩ রান সংগ্রহ করার পর আবার বৃষ্টি নামে। তখন ডাক ওয়ার্থ/ লুইস পদ্ধতিতে তখন আফগানদের জয়ের জণ্য দরকার ছিল ৬৬ রানের। এরপর ১০টা ৩৫ মিনিটে আরো একবার ম্যাচ শুরু করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল অফিসিয়ালরা। কিন্তু ১০ টা ৩০ মিনিটে আবার বৃষ্টি শুরু হলে সে প্রচেষ্টা আর সফল হয়নি। ফলে ম্যাচের নির্ধারিত সময় ১০ টা ৫৮ মিনিটের আগেই ম্যাচের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। যাতে আফগানিস্তান জয় লাভ করে ১৭ রানে।

এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ শুরুটা ভাল করতে পারেনি। ওপেনার তামিম ইকবাল ফিরেন ১৩ রান করে। দলের রান তখন ৩০। লিটন দাশের সাথে নাজমুল হোসেন শান্ত যোগ দিলে রানের চাকা কিছুটা দ্রুত ঘুরছিল । কিন্তু তাদের জুটিটাও বড় হলো না। ৪২ রানে বিচ্ছিন্ন হলেন দুজন। মুজিবুর রহমানকে অযথা উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন লিটন, করেন ২৬ রান। এরপর সাকিব এসে ভাল কিছুর ইঙ্গিত দিলেন। কিন্তু হলো না। এরই মধ্যে ইনিংসের আয়ু যখন ১৫.১ ওভার তখন বৃষ্টি এসে থামিয়ে দেয় খেলা। বন্ধ থাকে ৫০ মিনিট। এরপর খেলা শুরু হলে দ্রুত ফিরেন সাকিব এবং মুশফিক। সাকিব ১৫ রান করলেও মুশফিক ফিরেছেন এক রান করে। ১১২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে যখন ধুঁকছিল বাংলাদেশ তখন দায়িত্ব নেওয়ার বদলে ব্যর্থতার মিছিলে যোগ দিলেন দলে ফেরা আফিফ। রশিদ খানের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরলেন আফিফ ৪ রান করে। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে দলকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন তাওহিদ হৃদয়। কিন্তু অপর প্রান্তে সহযোগী হিসেবে কাউকে পাচ্ছিলেন না। এরই মধ্যে আরেক দফা বাগড়া দেয় বৃষ্টি। ৩৪.৩ ওভারে আবার বন্ধ হয়ে যায় খেলা। আর এবার পুনরায় শুরু হয় ৮৫ মিনিট পর। আর তাতে ৫০ ওভারের ম্যাচ পরিণত হয় ৪৩ ওভারে। তখন বাংলাদেশের রান ছিল ৭ উইকেটে ১৪৪। বাকি ৫১ বলে বাংলাদেশ যোগ করে মাত্র ২৫ রান। নিজের হাফ সেঞ্চুরি করার পরই ফিরেন তাওহিদ হৃদয়। ৬৯ বলে ৫১ রান করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের স্কোর দাড়ায় ৯ উইকেটে ১৬৯। আফগানিস্তানের পক্ষে ২৪ রানে ৩ উইকেট নেন ফজল হক ফারুকী। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন দুই স্পিনার মুজিব এবং রশিদ খান।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা বেশ ভালই করেছিল আফগানিস্তানের দুই ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ এবং ইব্রাহিম জাদরান। শেষ পর্যন্ত সাকিব ভাঙ্গেন এ জুটি। তাকে পুল করতে গিয়ে শর্ট মিড উইকেটে শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ৪৫ বলে ২২ রান করা গুরবাজ। রহমত শাহ এসে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি ইব্রাহিম জাদরানকে। তাসকিন ফেরান রহমতকে। স্লিপে দারুন এক ক্যাচ নেন লিটন । একপ্রান্ত আগলে রাখা ইব্রাহিম জাদরান এরপর চেষ্টা করছিলেন অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদীকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার। তখন আফগানরা ২১.৪ ওভারে সংগ্রহ করে ফেলে ২ উইকেটে ৮৩ রান। তবে সে বৃষ্টি তেমন ক্ষতি করতে পারেনি আফগানিস্তানের। ডাক ওয়ার্থ/ লুইস পদ্ধতিতে জয় পায় তারা। ৪১ রানে অপরাজিত ছিলেন ইব্রাহিম জাদরান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগ্রাহকের ১১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
পরবর্তী নিবন্ধক্রাশ প্রোগ্রাম কি আনুষ্ঠানিকতায় সীমাবদ্ধ, প্রশ্ন নগরবাসীর