বুলবুল চৌধুরী : উপমহাদেশের কিংবদন্তি নৃত্যপরিচালক

| শুক্রবার , ১৭ মে, ২০২৪ at ৭:৫০ পূর্বাহ্ণ

বুলবুল চৌধুরী (১৯১৯১৯৫৪)। তিনি একাধারে চিত্রশিল্পী, কবি, সাহিত্যিক ও নাট্যশিল্পী। বহুমুখী প্রতিভার গুণী এ শিল্পী উপমহাদেশের কিংবদন্তি নৃত্যপরিচালক। বুলবুল চৌধুরী ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে ১লা জানুয়ারি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া থানার চুনতি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। গ্রামটি বর্তমানে লোহাগাড়া উপজেলায় অবস্থিত। তাঁর প্রকৃত নাম রশীদ আহমদ চৌধুরী। পুলিশ অফিসার বাবার চাকরি সুত্রে সপরিবারে বিভিন্ন অঞ্চলে বাস করেছেন। তিনি ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে মানিকগঞ্জ হাইস্কুল থেকে প্রবেশিকা পাশ করে কলকাতায় চলে যান। সেখানে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে স্নাতক এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি নেন। শৈশব থেকেই নাচ, গান, ছবি আঁকা এবং গল্পকবিতা লেখার প্রতি তার প্রবল আগ্রহ জাগে। ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে মানিকগঞ্জ হাইস্কুলে অনুষ্ঠিত এক চিত্র প্রদর্শনীতে তার আঁকা ছবি প্রথম পুরস্কার লাভ করে। তবে নৃত্যশিল্পী হিসেবেই তিনি অধিক খ্যাতি অর্জন করেন। ছাত্রাবস্থায় প্রেসিডেন্সি কলেজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে নৃত্যশিল্পী হিসেবে তিনি প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সাধনা বসুর সঙ্গে যৌথভাবে পরিবেশন করেন রবীন্দ্রনাথের বিখ্যাত নৃত্যনাট্য কচ ও দেবযানী। এটি ছিল তার শিল্পীজীবনের মাইলফলক। দেশেবিদেশে নৃত্য পরিবেশন করে পেয়েছেন ভূয়সী প্রশংসা। নৃত্যশিল্পকে জীবনের প্রতিচ্ছবি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা, বিশেষ করে সে যুগের রক্ষণশীল সমাজে নৃত্যকে জনপ্রিয় করে তোলার ক্ষেত্রে বুলবুল চৌধুরী ছিলেন পথিকৃৎ। শুধু নৃত্য নয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিতে তিনি ‘প্রাচী’ (১৯৪২) শিরোনামে একটি উপন্যাসও রচনা করেন। এছাড়া তার লেখা কয়েকটি ছোটগল্পও রয়েছে। মাত্র ৩৫ বছর বয়সের ছোট্ট এক জীবনে তিনি নৃত্যকে দিয়েছেন শিল্পের মর্যাদা। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ই মে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। নৃত্যশিল্পে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তার নামে ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ই মে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় বুলবুল ললিতকলা একাডেমি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে দুর্নীতিমুক্ত আইন জরুরি