বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালকের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জালাল ইউনুস। ই–মেইল বার্তায় গতকাল সোমবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে (এনএসসি) পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন অভিজ্ঞ ক্রিকেট সংগঠক। এনএসসি মনোনীত আরেক কাউন্সিলর ও পরিচালক আহমেদ সাজ্জাদুল আলম সিদ্ধান্ত ছেড়ে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষের ওপর। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জালাল ইউনুস নিজেই। এনএসসি সচিব আমিনুল ইসলামের ফোন পাওয়ার পর পদত্যাগপত্র পাঠাতে বেশি সময় নেননি তিনি। আমার সঙ্গে এনএসসি সচিব আমিনুল ইসলাম যোগাযোগ করেছিলেন। বলেছিলেন চা খাওয়ার জন্য। আমি বললাম কি ব্যাপারে, পদত্যাগের ব্যাপারে? বললেন, ‘হ্যাঁ। আমি বললাম তাহলে আমার যাওয়ার দরকার নেই। আমি পদত্যাগের চিঠি পাঠিয়ে দিচ্ছি। পরে ই–মেইলের মাধ্যমে চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছি। আমি তাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। চিঠিতে পদত্যাগের কোনো কারণও লিখিনি। কারণ মিডিয়ার মাধ্যমে শুনেছি, বিসিবিতে অন্য কাউকে আনতে চাইছে এনএসসি। সেক্ষেত্রে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমাকে ও আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববিকে সরে দাঁড়াতে হবে। যেহেতু আমরা দুজনই এনএসসির কাউন্সিলর। তাই ক্রিকেটের স্বার্থেই সরে দাঁড়িয়েছি আমি। নাজমুল হাসানের বর্তমান বোর্ডে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান ছিলেন জালাল। এর আগে মিডিয়া বিভাগসহ দীর্ঘদিন ক্রিকেট বোর্ডে নানা দায়িত্ব পালন করেছেন ঘরোয়া ক্রিকেটের সাবেক এই ফাস্ট বোলার। ১৯৯৭ সালে প্রথম বিসিবিতে দায়িত্ব পান জালাল। এরপর মাঝে ২০০৫ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত শুধু বোর্ডে ছিলেন না তিনি। গত ২৭ বছরের মধ্যে ২৩ বছরই কোনো না কোনো পদে বিসিবিতে ছিলেন তিনি।
বোর্ডের সবশেষ কমিটিতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ মনোনীত কাউন্সিলর ও পরিচালক ছিলেন জালাল। তার মতোই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক মনোনীত হয়ে বোর্ডে আসেন আরেক অভিজ্ঞ সংগঠক আহমেদ সাজ্জাদুল আলম। তবে সাজ্জাদুল এখনও পদত্যাগ করেননি। তবে ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক মনোনীত হওয়ায় চাইলে ক্রীড়া পরিষদই তাদের অব্যাহতি দিতে পারবে। সে পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত একরকম চূড়ান্ত। সাজ্জাদুল নিজেও এনএসির ওপরই ছেড়েছেন সিদ্ধান্ত। এনএসসি সচিব সকালে ফোন করে আমাকে বললেন কাউন্সিলরশিপ ও ডিরেক্টরশিপ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। আমি তাকে বলেছি, আপনারা আমাকে কাউন্সিলর বানিয়েছিলেন, সেই সুত্রে আমি পরিচালক হয়েছিলাম। এখন এ ব্যাপারে আপনাদের যদি কোনো চিন্তাভাবনা থাকে, কিছু করতে চান, তাহলে আমাকে জানিয়ে দিবেন। জালালের মতো সাজ্জাদুলও দীর্ঘদিন ধরে আছেন বিসিবিতে। তরুণ বয়সে ১৯৮৩–১৯৯১ পর্যন্ত তিনি ক্রিকেট বোর্ডে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর আবার ২০০৭ সালে তাকে ফেরানো হয়। এরপর থেকে টানা কাজ করছেন তিনি। বর্তমান বোর্ডে টুর্নামেন্ট কমিটির প্রধান সাজ্জাদুল। জালালের পদত্যাগ ও সাজ্জাদুলকে অব্যাহতি দেওয়ার পর তাদের জায়গায় জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ এবং জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত ক্রিকেট কোচ নাজমুল আবেদিনকে বোর্ডে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক মনোনীত করার কথা ভাবা হচ্ছে।