কক্সবাজারের বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী আবদ্ধ খাল ও হ্রদে বিষ প্রয়োগ করে নির্বিচারে মাছ শিকার করা হচ্ছে। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার বিকেলে রামুর পেঁচারদ্বীপের সমুদ্র তীরবর্তী হ্রদে বিষ প্রয়োগে মাছ শিকারের ঘটনাটি ধরা পড়ে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের কাছে। বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. তৌহিদা রশীদ জানান, শুক্রবার বিকেলে পেঁচারদ্বীপের সমুদ্র তীরবর্তী হ্রদে হাজারো মরা মাছ ভেসে ওঠার খবর পেয়ে একজন বিজ্ঞানীকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। তিনি ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হন যে, বিষ প্রয়োগের কারণেই মাছগুলো মরে গেছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী বোরির বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আহসান হাবিব নয়ন বলেন, খবর পেয়ে বিকেল ৫টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে আমি কয়েকজন লোককে হ্রদ থেকে মরা মাছ সংগ্রহ করতে দেখি। আর কয়েকজনকে মাছ পরিবহন করে নিয়ে যেতে দেখি, যার ওজন ২ থেকে ৩ মণ পর্যন্ত হতে পারে। তিনি বলেন, এসময় মাছ সংগ্রহকারী জেলেদের কাছে কয়েক লাখ মাছের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা পালিয়ে যায়। একদল অসাধু লোক হ্রদে বিষ প্রয়োগ করে মাছ ধরে এবং বাজারে বিক্রি করে। এটি বঙ্গোপসাগরের জীববৈচিত্র্য ও ব্লু–ইকোনমির জন্য হুমকি। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের কক্সবাজারস্থ সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্রের প্রধান ড. শফিকুর রহমান বলেন, শুষ্ক মৌসুমে পাহাড়ি খাল ও ছড়াগুলোতে পানি প্রবাহ কমে গেলে সমুদ্র মোহনায় আবদ্ধ জলাভূমি বা লেক তৈরি হয়। ভরা কটাল ও মরা কটালের সময় এসব লেকে পানি প্রবেশ করে। এসময় সামুদ্রিক মাছগুলো এসব হ্রদে ডিম ছাড়ে। পরে ডিম ফোটে রেণুগুলো বড় হয়ে সাগরে চলে যায়। তাই এসব লেক থেকে বিষ প্রয়োগ করে মাছ ধরার বিষয়টি উদ্বেগজনক। এ প্রসঙ্গে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান বলেন, খাল, নদী ও লেক থেকে বিষ প্রয়োগে মাছ ধরা বেআইনি। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে চকরিয়া ও লামার মাতামুহুরী নদীতে এবং এর উপ–শাখাগুলোতে বিষ প্রয়োগে মাছ শিকারের ঘটনা ঘটে।