ভূমিকাঃ ২০০০ সালের ৭ এপ্রিল ‘নিরাপদ রক্ত’–এই থিম নিয়ে পালিত হয় বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। মূলতঃ এই থিম থেকেই ২০০৪ সালের ১৪ জুন প্রথম বিশ্ব রক্তদাতা দিবস পালিত হয়। এর পর থেকে প্রতি বছর যারা স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে রক্তদান করে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ বাঁচাচ্ছেন তাদেরসহ সাধারণ জনগণকে রক্তদানে উৎসাহিত করার লক্ষ্য নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (আইএফআরসি), ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব ব্লাড ডোনার অর্গানাইজেশন (এফআইওডিএস) এবং ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অব ব্লাড ট্রান্সফিউশন (আইএসবিটি)-এর সহযোগিতায় বিশ্ব রক্তদাতা দিবস পালন করা হচ্ছে। এ বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক এ দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘Give blood, give plasma, share life, share often.’’ এই স্লোগানের মাধ্যমে যে সকল রোগীর আজীবন রক্তের প্রয়োজন তাদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে এবং রক্ত ও প্লাজমা দানকারী ব্যক্তির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী সকল রোগী যথাসময়ে যাতে চিকিৎসা পায় সে উদ্দেশ্যে নিরাপদ ও টেকসই রক্তসঞ্চালনের প্লাটফর্ম তৈরীর জন্য নিয়মিত রক্ত ও প্লাজমা দান করার উপর জোর দেয়া হয়েছে। এবারে দিবসটির আয়োজক দেশ নির্ধারিত হয়েছে নাইজেরিয়া।
জীবন বাঁচাতে রক্তের প্রয়োজনীয়তাঃ অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে, রক্তবমি বা পায়খানার সঙ্গে রক্ত গেলে, দুর্ঘটনায় আহত রোগী, অস্ত্রোপচারের রোগী, সন্তান প্রসবকালে, ক্যান্সার বা অন্যান্য জটিল রোগ, এনিমিয়া, থ্যালাসেমিয়া, হিমোফিলিয়া, ডেঙ্গু হিমোরেজিক ফিভার ইত্যাদি রোগের কারণে রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজন পড়ে। এ ছাড়া বর্তমানে অঙ্গ প্রতিস্থাপন শুরু হয়েছে, যা সফল করতে প্রচুর রক্তের প্রয়োজন হয়। বিজ্ঞানীদের যথাসাধ্য চেষ্টা সত্ত্বেও এখনো রক্তের বিকল্প তৈরি করা সম্ভব হয়নি, নিকট ভবিষ্যতে পাওয়া যাবে এমনটাও আশা করা যায় না। মানুষের রক্তের প্রয়োজনে মানুষকেই রক্ত দিতে হয়, জীবন বাঁচানোর জন্য রক্তদান অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ।
রক্তদানের ইতিহাস : ১৪৯২ সালে অষ্টম পোপ যখন স্ট্রোক করেন তখনকার চিকিৎসকরা ধারণা করেছিলেন, পোপের মনে হয় শরীরের কোথাও রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এই ভেবে পোপকে বাঁচানোর জন্য ১০ বছর বয়সের তিনজন ছেলের শরীর থেকে রক্ত বের করে পোপকে পান করানো হয়েছিল। মাত্র একটা স্বর্ণমুদ্রার বিনিময়ে সেই তিন বাচ্চার রক্ত নেওয়া হয়েছিল। দুঃখজনক হলো, রক্ত নেওয়ার ফলে তিনটা বাচ্চাই মারা যায়। পরের বছর পোপ সেকেন্ড স্ট্রোক করে মারা যান কোনো ঘোষণা ছাড়াই। তারপর থেকে কেউ আর রক্ত দিতে সাহস করেনি। ১৯০১ সালে ভিয়েনার ডা. কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার (১৮৬৮–১৯৪৩) দেখান, মানুষের রক্তের প্রধানত চারটি গ্রুপ রয়েছে– A, B, AB এবং O। প্রথম বার প্রমাণ করলেন যে একই গ্রুপ থেকে রক্ত সঞ্চয়ে কোনো ক্ষতি নেই। এরপরেই তার দুই সহযোগী আলফ্রেড ভন ডেকাস্টেলো আর আদ্রিয়ানো স্ট্রুলি AB গ্রুপটি শনাক্ত করেন। ১৯১৬ সালে প্রথমবারের মতো সফলভাবে সংরক্ষিত রক্তকে আরেকজনের দেহে প্রবেশ করানো হয়। ১৯২১ সালে লন্ডনের কিংস কলেজ হাসপাতালে ব্রিটিশ রেড ক্রসের সদস্যরা সবাই একযোগে রক্ত দেন। সূচিত হয় বিশ্বের প্রথম স্বেচ্ছা রক্তদানের দৃষ্টান্ত। তিনি ১৯৪০ সালে আবার Rh group আবিষ্কার করেন, যা আমরা পজিটিভ–নেগেটিভ রক্ত বুঝতে পারি।
রক্ত দান করার সক্ষমতাঃ ১৮ থেকে ৬০ বছরের যে কোনো সুস্থ মানুষ, যাদের শরীরের ওজন ৪৫ কেজির বেশি, তারা চার মাস অন্তর অন্তর নিয়মিত রক্তদান করতে পারেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী নিরাপদ রক্ত সঞ্চালনের জন্য রক্তদাতার শরীরে হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি, এইচআইভি বা এইডস, ম্যালেরিয়া ও সিফিলিস এই পাঁচটি রক্তবাহিত রোগ আছে কি না, তা পরীক্ষা করে নিশ্চিত করতে হয়। অবশ্য একইসঙ্গে রোগীর রক্তের সঙ্গে রক্তদাতার রক্তের গ্রুপিং এবং ক্রসম্যাচিং জরুরি। সাধারণভাবে (১) হেপাটাইটিস বি’ এবং সি’ রোগে যারা ভুগছেন। (২) হিমেফেলিয়াতে যারা ভুগছেন। (৩) ক্যানসার রোগী (৪) যারা মাদক গ্রহণ করেন। (৫) মানসিক ভারসাম্যহীন (৬) যাদের অতিরিক্ত শ্বাসকষ্ট আছে, অর্থাৎ শ্বাস–প্রশ্বাসজনিত রোগ যেমন– অ্যাজমা, হাঁপানি যাদের আছে। (৭) মহিলাদের ক্ষেত্রে মাসিক চলাকালীন সময়ে, গর্ভবতী অবস্থায় ও সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার ১ বছর পর পর্যন্ত রক্তদান করা তাদের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। (৮) যাদের এইচআইভি পজিটিভ তথা এইডস আছে। (৯) যাদের ওজন গত ২ মাসে ৪ কেজি কমে গেছে। (১০) মাস ছয়েকের ভেতর বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন বা অপারেশন হয়েছে। (১১) এ ছাড়াও যকৃতের রোগী, যক্ষ্মার রোগী, লেপ্রসি, মৃগী রোগী, পলিসাইথেমিয়া ভেরা প্রভৃতি রোগ থাকলে তাদের রক্ত নেওয়া যাবে না।
রক্তদান করার উপকারিতাঃ রক্তদান কতটা নিরাপদ এটা নিয়ে কারো কারো মধ্যে সংশয় আছে। আসলে দৈহিকভাবে রক্তদানের কোনো ঝুঁকি নেই। স্বেচ্ছা রক্তদানে একজন দাতার কাছ থেকে ৩৫০ থেকে ৪০০ মিলিলিটার রক্ত সংগ্রহ করা হয়, যা দাতার শরীরের প্রয়োজনের উদ্বৃত্ত রক্তের অর্ধেকেরও কম। ফলে রক্তদানে শারীরিক ক্ষতি হওয়ার কোনো আশঙ্কাই নেই।
রক্তদান করার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীরের মধ্যে অবস্থিত ‘বোন ম্যারো’ নতুন কণিকা তৈরির জন্য উদ্দীপ্ত হয়। দান করার দু’সপ্তাহের মধ্যেই নতুন রক্ত কণিকা জন্ম হয়ে এই ঘাটতি পূরণ করে। আর প্রাকৃতিক নিয়মেই যেহেতু প্রতি ৪ মাস পর পর আমাদের শরীরের রেড সেল বদলায়, তাই বছরে ৩ বার রক্ত দিলে শরীরের কোনো ক্ষতি হয় না বরং শরীরের লোহিত কণিকাগুলোর প্রাণ ব্যস্ততা আরও বেড়ে যায়।
ইসলামের বিধানঃ রক্তদানের ব্যাপারে ইসলামে কোনো বাধা–নিষেধ নেই, বরং এটি কোরআন ও হাদিসের আলোকে করণীয়, অর্থাৎ করলে সওয়াব হবে এবং সুযোগ থাকা সত্ত্বেও না করলে গুণাহ হবে। কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে কারও জীবন রক্ষা করে, সে যেন সবার জীবন রক্ষা করে (সুরা আল মায়িদা : আয়াত ৩২)। পবিত্র মুসলিম শরীফে বর্ণিত আছে ‘তোমাদের কেউ তার অপর ভাইয়ের উপকার করতে সক্ষম হলে সে যেন তা করে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটঃ আমাদের দেশের রক্তদাতার প্রধান উৎস হলো রিপ্লেসমেন্ট ডোনার বা রিলেটিভ ডোনার। আমাদের দেশে বছরে প্রায় ১৪ লাখ ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হয়। বিশ্বের প্রায় ৬২টি দেশে শতভাগ স্বেচ্ছা রক্তদানের মাধ্যমে রক্ত সংগ্রহ করা হয়। উন্নত বিশ্বে স্বেচ্ছা রক্তদানের হার প্রতি এক হাজারে ৪৫ জন আর বাংলাদেশ তথা উন্নয়নশীল বিশ্বে প্রতি হাজারে ৪ জনেরও কম। আমাদের দেশে স্বেচ্ছায় রক্তদাতার হার মাত্র ৩১ শতাংশ।থাইল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কায় স্বেচ্ছায় রক্তদানের হার শতভাগ। ভারতেও এই হার ৬৫ শতাংশ।এই জায়গায় বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে। এমনকি ভুটানের চেয়েও।
বাংলাদেশ সরকার ২০০৮ সালে বিশুদ্ধ রক্ত পরিসঞ্চালন আইন করে পেশাদার রক্ত কেনাবেচা বন্ধের উদ্যোগ নেয়। কর্মসূচির অধীনে ৪৯৫ উপজেলার মধ্যে ২০০ উপজেলায় সরকারিভাবে ব্লাড ব্যাংক স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ পর্যন্ত ৮৫টি উপজেলায় ব্লাড ব্যাংক স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে সারা দেশে নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন ব্যবস্থা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে প্রতিটি হাসপাতালে ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অবস্থিত একটি অস্থায়ী প্রোগ্রাম অফিসের মাধ্যমে পরিচালনা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে উপজেলায় বিশুদ্ধ রক্তের জন্য এখনো মানুষকে নির্ভর করতে হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও আত্মীয়স্বজনের ওপর। এভাবে রক্ত সংগ্রহ করতে গিয়ে বিশুদ্ধ রক্তের সংকট দেখা দিচ্ছে। বাংলাদেশে ঘাটতি পূরণ ও অনিরাপদ রক্তের ব্যবহার বন্ধ করতে বর্তমানের চেয়ে বছরে মাত্র ৫ লাখ ব্যাগ অতিরিক্ত সংগ্রহ করতে হবে। বাংলাদেশের প্রায় ১৭ কোটি জনসংখ্যার তুলনায় রক্তের চাহিদা প্রতি বছর প্রায় ১৪ লাখ ইউনিট। অথচ দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের রক্তদাতার সংখ্যা খুব সামান্য। ৬ থেকে ৭ লাখ লোক যদি বছরে দুইবার অন্তত রক্তদান করে তাহলেই এ ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে।
উল্লেখযোগ্য স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানঃ দেশের উল্লেখযোগ্য স্বেচ্ছাসেবী রক্তদান কর্মসূচী পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কোয়ান্টাম, রেড ক্রিসেন্ট, সন্ধানী, বাঁধন, পুলিশ ব্লাড ব্যাংক, রোটারী ও লায়ন্স। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন প্রতি বছর গড়ে ১ লক্ষ ব্যাগ, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি প্রতি বছর গড়ে ৬০ হাজার ব্যাগ এবং সন্ধানী প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৫০ হাজার ব্যাগ রক্ত সরবরাহের মাধ্যমে চাহিদার প্রায় ৪০% মেটাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার ‘নিরাপদ রক্ত সঞ্চালন কর্মসূচি‘ প্রকল্পের মাধ্যমে এইসব সংগঠনকে সহায়তা করে আসছে।
অনুকরণীয় দৃষ্টান্তঃ স্বেচ্ছায় রক্তদানের ক্ষেত্রে গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নিজের নাম লিখিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক জেমস হ্যারিসন। ১৮ বছর বয়স থেকে শুরু করে ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত এক হাজার ১৭৩ বারের মতো রক্ত দিয়েছেন। উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ার আইন অনুযায়ী ৮০ বছরের বেশি বয়সে রক্ত দেয়া যায়না বিধায় আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও তিনি আর রক্ত দান করতে পারেন নি। বাংলাদেশে এক্ষেত্রে অনন্য উদাহরণ খুলনার ঝিনাইখালী গ্রামের হাইস্কুল জেকেএজি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নৈশপ্রহরী জাকারিয়া বিশ্বাস। ১৯৮৬ সাল থেকে শুরু করে ৩৬ বছরে তিনি রক্ত দিয়েছেন ১১৮ বার। রক্তদানকে অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেন তিনি।
ভবিষ্যৎ করণীয়ঃ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুসারে, দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়াতে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, শ্রীলংকা, নেপালসহ বিভিন্ন দেশে রক্ত পরিসঞ্চালন ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি ন্যাশনাল ব্লাড সেন্টার (এনবিসি) গড়ে তোলা হয়েছে। এনবিসি একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ অত্যাধুনিক কেন্দ্র, যার মাধ্যমে রক্তের বিভিন্ন পর্যায়ের পরীক্ষা–নিরীক্ষা, রক্ত পরীক্ষার কীটস/রিএজেন্ট এর ভ্যালিডেশন, জনবলের প্রশিক্ষণ, রক্ত পরিসঞ্চালন জনিত বিভিন্ন জটিলতা নিরসন সংক্রান্ত পরীক্ষা–নিরীক্ষা কার্যক্রম, রক্তদাতাদের মধ্যে ট্রান্সফিউশন ট্রান্সমিসিবল ইনফেকশন্স (টিটিআই) এর পর্যবেক্ষণ ও কোয়ালিটি কন্ট্রোলের যাবতীয় ব্যবস্থা থাকে। তাছাড়া ন্যাশনাল ব্লাড ব্যাংক থাকলে সহজে ন্যাশনাল একটি ডিরেক্টরি তৈরি করা যেতো। সরকার মহাখালিতে যে হেলথ সিটি করতে যাচ্ছে সেখানে ন্যাশনাল ব্লাড সেন্টার স্থাপনের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারলে ভালো হয়। কোন হাসপাতাল বা ইনস্টিটিউটে যতটুকু রক্তের প্রয়োজন তার থেকে বেশি রক্ত মজুদ থাকলে সাধারণত ২৫ দিন ধরে জমা থাকা ব্লাড ফেলে দেওয়া হয়। এতে ডোনারের ও রক্তের অপচয় হয়। ন্যাশনাল ব্লাড ব্যাংক থাকলে এ অপচয় কমে আসতো। পাশাপাশি রক্ত সঞ্চালন নিরাপদ করার জন্য স্বাস্থ্য প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের আরও সজাগ ও সক্রিয় নজরদারি প্রয়োজন।
উপসংহারঃ নিরাপদ রক্ত সরবরাহের মূল ভিত্তি হলো স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে রক্তদান। রক্তদানের ক্ষেত্রে দুটি বাধা– ভয় ও ধর্মান্ধতা। যে জাতি সারা বিশ্বে বীরের জাতি হিসাবে পরিচিত, যে জাতি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনসহ প্রতিটি স্বাধীকার আন্দোলনে অকাতরে রক্ত দিয়েছে, সর্বশেষ ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে লাখো শহিদের তাজা রক্ত রাজপথে ঢেলে দিয়েছে সে জাতি স্বেচ্ছায় রক্তদানে কখনও পিছিয়ে থাকতে পারেনা। আমাদের ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সি জনগোষ্ঠীর মাত্র ৩ শতাংশ যদি শুধু তাদের জন্মদিনে রক্ত দিত, তাহলে আমাদের প্রয়োজন মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানী করা যেত। তাই আসুন জীবন সংহারী রোগ থেকে আর্ত মানুষকে বাঁচাতে নিজে রক্ত দেই। অন্যকে রক্তদানে উৎসাহিত করি। রক্তদানের মাধ্যমে ১৯ তম জন্মদিনকে স্মরণীয় করে রাখি।
লেখক: চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ ও চেয়ারম্যান,
বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি চট্টগ্রাম জেলা ইউনিট