বিশ্ব ইজতেমায় আজ আখেরি মোনাজাত

মাঠে এ পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যু ৭২ যুগলের যৌতুকবিহীন বিয়ে

| রবিবার , ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৭:৪১ পূর্বাহ্ণ

মাঠে এ পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যু ৭২ যুগলের যৌতুকবিহীন বিয়ে

গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরের বিশ্ব ইজতেমায় প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত আজ রোববার সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার মাহবুব আলম গতকাল শনিবার বলেন, ইজতেমার মুরুব্বিদের সঙ্গে কথা বলে তিনি এই সময় জানতে পেরেছেন। বিকেলে ইজতেমা মাঠ সংলগ্ন পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সামনে ব্রিফিংয়ে কমিশনার বলেন, আমরা আখেরি মোনাজাতের জন্য নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজিয়েছি। খবর বাসস ও বিডিনিউজের।

১০ জনের মৃত্যু : বিশ্ব ইজতেমার প্রথম ধাপে শনিবার দুপুর পর্যন্ত এক পুলিশ সদস্যসহ ইজতেমা কেন্দ্রীক ১০ মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। ইজতেমা আয়োজক কমিটির গণমাধ্যম সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। শুক্রবার দুপুর থেকে শনিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত ময়দানে আসা তিন মুসল্লির মৃত্যু হয়। বার্ধক্যজনিত কারণে বিভিন্ন রোগ অসুস্থ হয়ে তারা মারা যান। তারা হলেনশেরপুরের সদরের জুগনিবাগ গ্রামের মৃত শমশের আলীর ছেলে নওশের আলী (৬৫), ভোলার সামানদার গ্রামের বেলায়েত হোসেনের ছেলে আব্দুল কাদের (৫৫) ও নেত্রকোণার সদরের কালিয়াঝুড়ি এলাকার হোসেন আহম্মদের ছেলে স্বাধীন (৪৫)। এর আগে বুধবার ও বৃহস্পতিবার মারা গেছেন চারজন। এছাড়া ময়দানে আসার সময় এক পুলিশ সদস্যসহ তিনজনের মৃত্যু হয়।

এর আগে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মারা যাওয়া চার মুসল্লি হলেন নেত্রকোনার সদর থানার কুমারী বাজার গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আবদুস সাত্তার (৭০), একই জেলার বুড়িঝুড়ি গ্রামের স্বল্পদুগিয়া গ্রামের আব্দুস ছোবাহানের ছেলে এখলাস মিয়া (৬৮), ভোলার ভোল্লা গ্রামের নজির আহমেদের ছেলে শাহ আলম (৬০), জামালপুরের তুলশীপুর এলাকার পাকুল্লা গ্রামের হজরত আলীর ছেলে মতিউর রহমান (৬০)

এছাড়া ময়দানে আসার সময় মারা যাওয়া তিনজন হলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানার ধামাউরা গ্রামের ইউনুছ মিয়া (৬০), চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর থানার চৌহদ্দীটোলা গ্রামের জামান মিয়া (৪০) ও ইজতেমায় আসার পথে বাসচাপায় নিহত পুলিশ সদস্য হাসান উজ্জামান (৩০)

৭২ যুগলের যৌতুকবিহীন বিয়ে : গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরের বিশ্ব ইজতেমায় প্রথম পর্বে প্রায় ৭২ যুগলের যৌতুকবিহীন বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার বাদ আসর ইজতেমার বয়ান মঞ্চের পাশেই যৌতুকবিহীন বিয়ের আসর বসে বলে জানান ইজতেমা আয়োজক কমিটির গণমাধ্যম সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান। তিনি বলেন, ভারতের মাওলানা জোহায়রুল হাসান এসব যৌতুকবিহীন বিয়ে পড়ান। বিয়েতে মোহরানা ধার্য করা হয় ‘মোহর ফাতেমি’র নিয়মানুযায়ী। এ নিয়ম অনুযায়ী, মোহরানা ধরা হয় দেড়শ তোলা রূপা বা এর সমমূল্যের অর্থ।

শনিবার সকালে টঙ্গী শহর, ইজতেমাস্থল ও এর আশপাশের এলাকা যেন জনসমুদ্রে পরিণত হয়। যত দূর চোখ যায় শুধু মানুষ আর মানুষ। তুরাগ তীর লাখ লাখ মানুষের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠেছে। মানুষ বয়ান শ্রবণের পাশাপাশি ইবাদতবন্দেগি করে সময় পার করছেন। আজ আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত মানুষের এ ঢল অব্যাহত থাকবে।

শনিবার ইজতেমার অন্যতম আকর্ষণ ছিল যৌতুকবিহীন বিয়ে। ইসলামি শরিয়াহ মেনে তাবলিগের রেওয়াজ অনুযায়ী, প্রতিবারের মত এবারও যৌতুকবিহীন বিয়ের আসর বসে। এজন্য দুদিন আগ থেকেই বরকনের নাম নিবন্ধন করা হয়।

আয়োজকরা জানান, কনের সম্মতিতে দুপক্ষের লোকজনের উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয় এসব বিয়ে। বিয়ের পর বয়ান মঞ্চ থেকেই মোনাজাতের মাধ্যমে নবদম্পতিদের সুখসমৃদ্ধিময় জীবন কামনা করা হয়। এ সময় মঞ্চের আশপাশের মুসল্লিদের মাঝে খোরমাখেজুর ছিটিয়ে দেওয়া হয়।

ইজতেমা ময়দানে যৌতুকবিহীন বিয়ে করেছেন বরিশাল শহরের টাইলস ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ফাইজুল হক (৩২)। তার গ্রামের বাড়ি বাকেরগঞ্জ উপজেলার খয়রাবাদ এলাকায়। তিনি জানান, মায়ের পছন্দে তিনি বিয়ে করেছেন এবং তার জন্য প্রথম দিনেই আয়োজক কমিটির কাছে নিজের নাম নিবন্ধন করেন।

জামালপুরের মেলান্দহ বাজার এলাকার হোটেল ব্যবসায়ী মো. আইয়ুবুর খান (৪৫), টঙ্গীর চেরাগ আলী এলাকার মো. হারুনুর রশিদ (২৭), কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজলার শামুকজানি গ্রামের সাইফুল ইসলাম (২৫) যৌতুকবিহীন বিয়ে করেছেন। এভাবে বিয়ে করে তারা আনন্দিত বলেও জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদুই বছর ধরে প্রস্তাবটি হিমাগারে
পরবর্তী নিবন্ধযত দিন যাচ্ছিল ততই গতি পাচ্ছিল ভাষা আন্দোলন